Midnapore College : পরিত্যক্ত একটি আবাসনের মালিকানার দখল কার হাতে থাকবে তা নিয়ে আইনি পথে লড়াই চলছে। এবার রাস্তায় নেমে অবরোধ, বিক্ষোভ। যার জেরে উত্তেজনা মেদিনীপুর শহরে ঐতিহ্যবাহী দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। ওই লড়াইয়ে সামিল হয়ে জখম ছাত্ররা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটলো পুলিশ।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন : https://chat.whatsapp.com/DaQgpKDDIIH7nyDIMgrMFP
ওয়েব ডেস্ক, বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : পরিত্যক্ত একটি আবাসনের মালিকানার দখল কার হাতে থাকবে তা নিয়ে আইনি পথে লড়াই চলছে। এবার রাস্তায় নেমে অবরোধ, বিক্ষোভ। যার জেরে উত্তেজনা মেদিনীপুর শহরে ঐতিহ্যবাহী দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। ওই লড়াইয়ে সামিল হয়ে জখম ছাত্ররা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটলো পুলিশ।
এদিনের ঘটনা দুই প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করল বলেও অনেকের দাবি। মেদিনীপুর শহরে মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুল পাশাপাশি। কলেজিয়েট স্কুলের পেছনে একটি পুরনো আবাসন রয়েছে। যেখানে শেষবার মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ থাকতেন। ওই আবাসনে একটা সময় থাকতেন ঋষি রাজনারায়ণ বসু। যিনি মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
আরও পড়ুন : শালবনীতে শাল গাছ চুরি করতে এসে গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে পালালো দুস্কৃতিরা, ফেলে গেল মোবাইল
পরবর্তীকালে এই আবাসনে মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষগণ থাকতেন। কয়েকবছর ধরে এই আবাসনটি নিজেদের দাবি করে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল ও মেদিনীপুর কলেজের মধ্যে গন্ডগোল তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা হয়। আদালতের নির্দেশে আবাসনের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ রয়েছে। এরই মাঝে মঙ্গলবার সকালে অপরিচ্ছন্ন ওই আবাসনটি পরিচ্ছন্ন করতে প্রবেশ করে মেদিনীপুর কলেজের এনএসএস ইউনিট সহ অধ্যাপকরা।
আরও পড়ুন : মদ্যপানের টাকা না পেয়ে স্ত্রী’র মাথা ফাটাল স্বামী, গ্রেফতার করল গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ
আদালতের স্থিতাবস্থায জারি থাকার সময় এই কাজ করতে ঢোকায় প্রতিবাদ করে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল। কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্ররাও হাজির হয়। দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। এতে জখম হয় কলেজিয়েট স্কুলের জুনিয়র ছাত্ররা। প্রতিবাদে স্কুলের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে স্কুলের ছাত্ররা। উত্তেজনা সামাল দিতে ছুটে আসতে হয় কোতোয়ালি থানার পুলিশকে।
ঐতিহাসিক মেদিনীপুর শহরের সব থেকে ঐতিহ্যমন্ডিত বিদ্যালয় হল মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল। যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ঋষি রাজনারায়ণ বসু। এই স্কুলের ছাত্র বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন অস্ত্রগুরু হেমচন্দ্র কানুনগো। হেরিটেজ এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে বিভিন্ন বিপ্লবীরা জড়িত। এই স্কুলের পাশেই পরে তৈরি হয়েছে মেদিনীপুর কলেজ।
Midnapore College
কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক রতন কুমার মান্না বলেন, “ঐতিহাসিক এই স্কুলের সঙ্গে বিভিন্ন বিপ্লবীদের মর্যাদা জড়িত। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঋষি রাজনারায়ণ বসু থাকতেন ওই আবাসনে। পরবর্তীকালে আমাদের এই স্কুলের গর্ভ থেকেই তৈরি হয়েছে মেদিনীপুর কলেজ। কলেজের অধ্যক্ষ থাকার জায়গা পাচ্ছিলেন না বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই আবাসনে থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন। এখন সেই স্থানটাই ওরা দখল করতে চাইছে।
আদালতের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও ওরা জোর করে দখল করতে চাইছে। কলেজের ছাত্ররা এসে আমাদের ছোট ছোট ছাত্রদের উপর হামলা করেছে৷ কয়েকজন জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।” অন্যদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত মেদিনীপুর কলেজের ছাত্র সৌরভ দত্ত বলেন, “কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্ররাই আমাদের এবং আমাদের অধ্যাপকদের উপর হামলা করেছে। ওরাই আবার অবরোধ বিক্ষোভ করছে।”
মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোপালচন্দ্র বেরা বলেন, “আদালতের রায় আমাদের পক্ষেই রয়েছে। অপরিচ্ছন্ন থাকা ওই আবাসনটি পরিষ্কার করতে গিয়েছিল কলেজের এনএসএস-এর ছাত্ররা। ওখানকার স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক তাদের বাধা দিয়ে গন্ডগোল করেছে।” তবে জেলার তথা রাজ্যের নামকরা ঐতিহ্যবাহী বিপ্লবীদের স্মৃতি বিজড়িত বিদ্যালয়ের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী কলেজের এই গন্ডগোল রাস্তায় চলে আসায় অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
সেই সঙ্গে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের গন্ডগোলের মাঝে দুই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের ঢুকে পড়া, ধ্বস্তাধ্বস্তি এবং রাস্তা অবরোধ করা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে মেদিনীপুরে। কলেজ এবং স্কুলের প্রতি আবেগকে কাজে লাগিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করে বলে মত ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র।
সংগঠনের জেলা সম্পাদিকা তনুশ্রী বেজ বলেন, “আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি। প্রশাসনিকভাবে এই বিষয়ের মিটমাট করা হোক। ভবিষ্যতে উভয় প্রতিষ্ঠানেই ছাত্ররা যাতে সুরক্ষিত থাকে তা বিশেষভাবে দেখা হোক। দুটো প্রতিষ্ঠানই ছাত্রদের কাছে আবেগের। সেই আবেগকে কাজে লাগিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের পর্যায়ে নিয়ে সংকীর্ণ স্বার্থে ব্যবহার করা নীতি বিরুদ্ধ এবং ছাত্র স্বার্থ বিরোধী।”
এদিন বিকেলে দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসে মেদিনীপুর পৌসরভা ও মহকুমা শাসক ৷ ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়াও পুলিশ আধিকারিকরা। মেদিনীপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, “দুই পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলা হয়েছে ৷ আদালত সুনির্দিষ্ট রায় না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে কেউই প্রবেশ করবে না। তালা বন্ধ থাকবে সেখানে ৷”
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Midnapore College
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper