Home » স্বাধীনতার ৭৪ বছরেও ভারতের জাতীয় পতাকার প্রথম রূপকার হেমচন্দ্রের ভিটে আজ উপেক্ষিত,অবহেলায় অস্ত্র গুরু

স্বাধীনতার ৭৪ বছরেও ভারতের জাতীয় পতাকার প্রথম রূপকার হেমচন্দ্রের ভিটে আজ উপেক্ষিত,অবহেলায় অস্ত্র গুরু

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

পত্রিকা প্রতিনিধি : ইতিহাসের মেদিনীপুর।সংস্কৃতির মেদিনীপুর।বিপ্লবের মেদিনীপুর।শত বিপ্লবীদের জন্ম থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন এই মেদিনীপুরের মাটিতেই।শহীদ ক্ষুদিরাম থেকে হেমচন্দ্র কানুনগো,জন্ম মেদিনীপুরেই।ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের আলিপুর বোমা মামলা,যার তৈরী বোমা নিয়ে এই মামলা।সেই অস্ত্রগুরু হেমচন্দ্র কানুনগোর স্মৃতি বিজড়িত তার বসত ভিটে থেকে গ্রাম স্বাধীনতার ৭৪ বছরে এসেও তা আজও উপেক্ষিত।কেন্দ্র কিংবা রাজ্য সরকারের হেলদোল নেই হেরিটেজ ঘোষনাতে।পাশাপাশি হেমচন্দ্রের স্মৃতি রক্ষায়ও কোন উদ্যোগ নেই উভয় সরকারের।ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী থেকে পরিবারের সদস্যরা।
বেলদা থেকে চোদ্দ কিলোমিটার দূরেই রাধানগর গ্রাম।যে গ্রামে জন্ম এবং বড় হয়ে উঠা ভারতের সসস্ত্র আন্দোলনের অন্যতম বীর বিপ্লবী হেমচন্দ্র কানুনগোর।১৮৭১ সালে এই গ্রামে জন্মগ্রহন করেন হেমচন্দ্র দাস কানুনগো।যোগ দিয়েছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনে সসস্ত্র যুদ্ধে।১৯০২ সাল নাগাদ বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ,যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়,জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসুর সাথে পরিচয় হয় হেমচন্দ্রের।বুঝেছিলেন,অত্যাচারী শোষক ইংরেজ কে হঠাতে গেলে প্রয়োজন নতুন অস্ত্রের।১৯০৬ সালে তিনি অস্ত্র নির্মান শিক্ষার জন্য কলম্বো হয়ে ফ্রান্সে যান।ফ্রান্সে বসেই তিনি আঁকেন ত্রিবর্ন রঞ্জিত জাতীয় পতাকার প্রথম স্কেচ।যার উপরে লাল রং এর উপর আঁকা আধ ফোটা আটটি সাদা পদ্ম,আছে সাদা অংশে দেবনাগরী হরফে লেখা “বন্দেমাতরম”।নীচের নীল অংশে চন্দ্র ও সুর্যের ছবি।সেটাই প্রথম ভারতের জাতীয় পতাকা।তা জহওরলাল নেহেরু গুরুত্ব দেননি।
১৯০৮ সাল তখন, কিংসফোর্ড কে হত্যা করতে হেমচন্দ্রের তৈরি বোমা নিয়ে ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকি বিহারের মজঃফরপুরে যান।কিন্তু  সেই বোমার আঘাতে প্রান যান বিদেশি এক মহিলার।১৯০৮ সালে শুরু হয় আলিপুর বোমা মামলা।গ্রেপ্তার হন হেমচন্দ্র।যার মামলায় হেমচন্দ্রের দ্বীপান্তর হয়।১৯২০ সালে ছাড়া পেয়ে দীর্ঘ তিরিশ বছর তার জীবন অতিবাহিত করেন নারায়ণগড়ের রাধানগর গ্রামে।নিজের তৈরী মাটির বাড়িতেই আমৃত্যু তার জীবন কাটিয়েছেন।এঁকেছেন নান ছবি।যা অনাদরে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে মেদিনীপুরের রাজা নরেন্দ্রলাল খান কলেজে।তবে হেমচন্দ্রের ওই বাড়িতেই থাকেন হেমচন্দ্রের দত্তক পৌত্র গনপতি কানুনগো।তবে হেমচন্দ্রের তৈরী মাটির বাড়ি আজ অবহেলায়।নষ্ট হচ্ছে সেই স্মৃতি ও ঐতিহ্য।হেমচন্দ্রের পৌত্র রঞ্জিত কানুনগোর আক্ষেপ-“স্বাধীনতা আন্দোলনের পূরোধা ব্যক্তিত্ব হেমচন্দ্র আহ অবহেলায়।বারংবার মুখ্যমন্ত্রী থেকে রাজ্যের বিভিন্ন বিভাগে চিঠি দেওয়া হলেও কোনরুপ সহায়তা পাওয়া যায়নি।অধিগ্রহন হয়নি হেমচন্দ্রের বসত ভিটে।হয়নি হেরিটেজ ঘোষনা থেকে রক্ষার কোন কাজ।”পরিবারের দাবি-“অবিলম্বে হেরিটেজ ঘোষনা করা হোক।বেলদা স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে হোক হেমচন্দ্রের নামে।”
স্বাধীনতার এতকাল কাটল,তবে হেমচন্দ্র আজও উপেক্ষিত।বছরে কয়েকটা দিন ছাড়া হেমচন্দ্র আজ অবহেলায়।সৌন্দর্য্যায়নের কাজ চললেও হেরিটেজ রক্ষায় সরকার আজও উদাসীন।

You may also like

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.