ওয়েব ডেস্ক, বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : সম্প্রতি ফের শিরোনামে ছিল কেশপুর। শাসকদলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে রক্তাক্তের ঘটনাও ঘটেছে। গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব মেটাতে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “তিন-চারটে নেতার রেষারেষিতে যদি দলের মাথা নত হয়, আমি ছেড়ে কথা বলবো না, হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলাম। এখনও সময় আছে শুধরে যান।” শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন : Click Here
এই সভা তার জীবনে সর্ববৃহৎ বলে আখ্যা দেন। তবে সবার নজর ছিল কেশপুরের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব মেটাতে তিনি কি বার্তা দেন। এদিন দলের গোষ্ঠী কোন্দলকে নিশানা ও পঞ্চায়েতে প্রার্থী কারা হবেন, প্রচারের পথ কি হবে তা জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিজেপি ও সিপিএম আক্রমণ করেন বক্তব্যে। কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক নীতিকেও সমালোচনা করে কটাক্ষ করেন সমাবেশ থেকে। জেলা তৃণমূলের দাবি লক্ষাধিক মানুষ উপস্থিত হয়েছিল সমাবেশে। জেলা জুড়ে প্রায় ৮০০ বেসরকারি বাস ভাড়া করেছিল। চার হাজারের বেশি ছোট গাড়ি।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিশ এনে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছিল। সমাবেশ স্থলে বিশাল জনসমাগম দেখে অভিষেক বলেন, “যারা বলে পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার। আজকের জন সমাবেশ তাদের কাছে একটা উত্তর। আমি এতদিন ধরে বিভিন্ন সমাবেশ করেছি, মনে হয় এটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সমাবেশ। যে আশীর্বাদে আপনারা আমায় আবদ্ধ করলেন, কথা দিয়ে যাচ্ছি এই আশীর্বাদের ঋণ সুদ সমেত উন্নয়নের মাধ্যমে আগামী দিনে আমি ফেরত দেব। আমি এক কথার ছেলে। যা বলি তাই করি।”
বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “সিপিএমের হার্মাদরা এখন বিজেপির জল্লাদ হয়েছে। লাল জমা পরিবর্তন করে পুরনো সন্ত্রাস আনতে মানুষের কাছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভ্রান্ত করছে। আরো এক দল রয়েছে যারা ভাবছেন নির্বাচনের সময় এক কাজ করবো, পরে জামা পাল্টে তৃণমূলে গিয়ে তৃণমূলের চোখে ধুলো দিয়ে আমার স্বার্থ চরিতার্থ করবো, তারা মনে রাখবেন সবার উপরে একটা অদৃশ্য চোখ ঘুরে বেড়াচ্ছে। নজর আমি রাখছি। তিন-চারটে নেতার রেষারেষিতে যদি দলের মাথা নত হয়, আমি ছেড়ে কথা বলবো না, হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলাম। সময় দিচ্ছি শুধরে যান। না হলে যে ওষুধ দেবো কাজ শুরু হয়ে গেলে শোধরানোর সুযোগ পাবেন না।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে প্রার্থী নির্বাচন করা প্রসঙ্গে কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “এখন থেকেই অনেকে বলছেন পঞ্চায়েতে আমি প্রার্থী। পঞ্চায়েতের প্রার্থী জেলা, ব্লক, অঞ্চল সভাপতি দেবে না, দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষ যেভাবে তৃণমূলকে দেখতে চায় সেভাবে তৃণমূলকে তৈরি করতে আমরা বদ্ধপরিকর। যা ২০১১ এর সময় মানুষ দেখে সিপিএমকে পরিবর্তন করেছিল। মানুষ যাকে সার্টিফিকেট দেবে সেই তৃণমূলের প্রার্থী হবে। অন্য কেউ হবে না, কারণ পাহারাদারের নাম অভিষেক ব্যানার্জী।” আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে বলে দাবি তার। তিনি বলেন, “বিরোধীরা এখন থেকেই বলছে আমাদের মনোনয়ন করতে দেবে না।
আরও পড়ুন : পশ্চিম মেদিনীপুরে বেপরোয়া মাছের গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত এক, বিক্ষোভ স্থানীয়দের
সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেসকে বলবো একে অপরের জড়াজড়ি না করে নিজে নিজে লড়ুন। আমার ফোন নম্বর এখানে দিয়ে গেলাম, সিপিএমের হার্মাদ, বিজেপির জল্লাদ, কংগ্রেসের উন্মাদরা মনোনয়ন না দিতে পারলে আমাকে ফোন করুন আমি এসে ব্যবস্থা করে দেব। করানোর দায়িত্ব আমার, কিন্তু প্রার্থী তৈরি করার দায়িত্বটা এখন থেকেই নিজেরা তৈরি করুন। বাংলায় ৭০ হাজার প্রার্থী লাগবে, আছে তো আপনাদের?”
আবাস যোজনার বাড়ি পেয়েও সততার সঙ্গে তা প্রত্যাখ্যান করা এক গরিব ব্যক্তিকে মঞ্চে তুলে ধরে মানুষের সামনে উদাহরণ হিসেবে দেখান। তার পুরনো ভাঙ্গা বাড়ির ছবিও দেখান। তিনি বলেন, “ব্লক অফিস থেকে তাঁকে বাড়ি দেওয়া হবে বলে জানালেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে দেন। তিনি উচাহারের বাসিন্দা শেখ হোসেন উদ্দিন। সমান্য ঔষধ দোকানের এই কর্মী। এই বাড়ি নিলে আরো বেশি পয়সা খরচ হবে মনে করে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আরও পড়ুন : অভিষেকের জনসভায় ঘাটাল মহকুমা থেকে ১২০ টি বাস, ছোটগাড়ি প্রায় দু’শো
সত্যি সৎ উনি, উনার মেয়ের বিয়ের জন্য উনি টাকা জমাচ্ছেন। আমি ওনার মেয়ের বিয়ের দায়িত্ব নিলাম।এই ধরনের লোক সামনের দিনে আমাদের পঞ্চায়েতের প্রার্থী। প্রার্থী হয়ে কামানোর দিন শেষ।” একইভাবে কেশপুরের গোলাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মঞ্জু দলবেরা ও তার স্বামী স্থানীয় তৃণমূলের বুথ সভাপতি অভিজিৎ দলবেরা-কে সম্মানিত করেন সততার জন্য। নিজেদের ভাঙ্গা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনার বাড়ি পেয়েও তারা প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছিলেন।
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Abhishek Banerjee
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper