পত্রিকা প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়ার সতর্কবার্তা দিয়েছে রাজ্য সরকার। নন্দীগ্রাম বিধানসভা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে হারিয়ে যাওয়া লাভ করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু। তিনি এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এর আগে সরকারের পক্ষ পক্ষে বিধায়ক হিসেবে কাজ করেছেন। এবারে সরকার বিরোধী নেতা হিসেবে নন্দীগ্রামের মানুষকে কিভাবে সব রকমের সুযোগ-সুবিধা দেবেন তা নিয়ে জরুরি সভা করলেন দলীয় কর্মীদের নিয়ে।শুভেন্দু অধিকারীর কপালে চিন্তার ভাঁজ। নতুন ইনিংসের শুরুতেই আসছে বড়সড় বিপদ। অতীতে আম্ফান এসেছে, কিন্তু তখন তিনি ছিলেন শাসক দলের ঘনিষ্ঠ সৈনিক। আর এখন তিনি বিরোধিমুখ। তাই আসন্ন সাইক্লোন “যশ” মোকাবিলা তাঁর কাছে এক অন্য চ্যালেঞ্জ।
নন্দীগ্রামকে যশের কামড় থেকে বাঁচাতে বাড়তি তৎপরতা নিতে দেখা গেল তাঁকে।কী ভাবে যশের বিপর্যয় মোকাবিলা করবেন, সেই নিয়েই আজ বৈঠকে বসেন উপকূলীয় এলাকা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। ভাঙাবেড়ার অতিথি নিবাসে দলীয় কার্যকর্তা ও কর্মীদের সঙ্গে রুটিন বৈঠকের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় যশ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নন্দীগ্রামের বহু সাধারণ মানুষও। নদী তীরবর্তী এলাকা নন্দীগ্রামে এক বছর আগে আমফানের ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। সেই শিক্ষাকে মাথায় নিয়েই আসন্ন বিপর্যয় মোকাবিলা করতে হবে বলে নন্দীগ্রামের মানুষজনকে বলেন স্থানীয় বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দুকে এ দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের বলতে শোনা যায়, বুলবুল, ফণী, আম্ফান বহু ঝড়ই দেখেছেন। সেইসব শিক্ষাই কাজে দেবে। নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মাটির বাড়ির বাসিন্দাদের আগামীকালই সরিয়ে আনতে হবে। নন্দীগ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করতে শুভেন্দু বলছেন, “প্রতিবেশির বড় পাকাবাড়িতে উঠে আসুন। একে অন্যের দিকে হাত বাড়ান। দুর্যোগ আসার আগে সতর্ক যেমন থাকবেন, তেমনি দুর্যোগ চলে গেলে পরবর্তী অবস্থা মেরামতের ব্যাপারেও নজর রাখতে হবে।”প্রসঙ্গত এই মুহূর্তে যশ রয়েছে দিঘা থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দূরে। আগামী কালই তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঝড় বৃষ্টিও শুরু হবে আগামীকাল থেকে। দিনভর বইবে ঝোড়ো হাওয়া। বুধ সন্ধ্যায় সাইক্লোনটি আছড়ে পড়তে পারে পারাদ্বীপ ও সাগর মধ্যবর্তী এলাকায়। অর্থাৎ ভয়ের খাঁড়া ঝুলছে পূর্ব মেদিনীপুরের উপরেও। এখানেই গত বছর আমফানে উপড়েছিল হাজার হাজার গাছ, ভেঙেছিল বহু কাঁচা বাড়ি। সেই কারণেই কাঁচা বাড়ির বাসিন্দারা যাতে দ্রুত সাইক্লোন সেন্টারে যান তা নিশ্চিত করতেই চাইছেন শুভেন্দু। এই কাজটাই তিনি গতবার করেছিলেন, তখন তাঁর নেতৃত্বে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু আজ দুজনের পথ বেঁকে গিয়েছে দুটি দিকে। ঝড়ের দুই পারে দাঁড়িয়ে আজ শুভেন্দু ও তাঁর প্রাক্তন দলনেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ২৫-২৬ তারিখ গোটা বিষয়টা তদারকি করবেন নবান্ন থেকে। বিরোধিমুখ শুভেন্দু এই লড়াই কতটা দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিতে পারেন সেটাই দেখার।