Home » পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতিতে বিজেপি’র উত্থান , ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে

পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতিতে বিজেপি’র উত্থান , ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

প্রত্রিকা প্রতিনিধিঃ শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় শাসকদল তৃণমূল। আর তেমনই মাত্র ৩ বছরে ঝড়ের গতিতে বিজেপি-র উত্থানও ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে। তবে ২১ শে নির্বাচনে যদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াতে চান বলে হইচই ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরে চাপের মুখে দাঁড়িয়েই তৃমণূলকে লড়াই করতে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সূত্রের খবর, গত ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচন থেকে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপি-র ভোট ফুলেফেঁপে উঠেছে। তারপর ২০১৬-য় যেখানে ১.৯৬ লক্ষ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। তবে ২০১৯-এ তা ১৩ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। অর্থাৎ ৩ বছরের ব্যবধানে ১১ লক্ষের বেশি ভোট বাড়িয়েছে বিজেপি। তাছাড়া পূর্ব মেদিনীপুরে পদ্ম ফুটিয়ে ছাড়বেন বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু আধিকারী। আর নির্বাচনে মমতা বন্দোপাধ্যায় যদি নন্দীগ্রামে প্রার্থী হন, তাহলে তাঁকে কমপক্ষে ৫০ হাজার ভোটে হারাবেন বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি। তবে শুভেন্দুর এই আত্মবিশ্বাসকে হালকা ভাবে নিতে রাজি নন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

তাঁদের দাবি, শুভেন্দুর এই আত্মতুষ্টির কারন হল, কয়েক বছরে জেলা জুড়ে বিজেপি-র অভাবনীয় উত্থান। এক সময় বামদুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল যে পূর্ব মেদিনীপুর, এখন তাদের প্রতি মোহ কেটে গিয়েছে সাধারণ মানুষের। বরং বাম শিবির থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ গিয়ে ভিড়েছেন গেরুয়া শিবিরে। যে কারণে ২০১৬-য় পূর্ব মেদিনীপুরে ১২.৯১ লক্ষ ভোট পেলেও, ২০১৯-এ তা কমে ২ লক্ষ ৩৩ হাজারে এসে ঠেকে। এই পরিস্থিতি থেকে বামেদের ঘুরে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের যুক্তি, গত কয়েক বছরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বামেদের কোনও নজরকাড়া কর্মসূচি ছিল না। পুরনো ভোটারদের ফিরিয়ে আনা, বা নতুন প্রজন্মকে প্রভাবিত করার মতো যোগ্য নেতৃত্বও নেই দলে। তাই ব্রিগেড দাপিয়ে বেড়ালেও, পূর্ব মেদিনীপুরে তাঁদের নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা ক্ষীণ। তবে শাসক শিবির তৃণমূলেরও প্রায় একই অবস্থা। তবে বঙ্গে আমপানের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ইতিমধ্যে দলে ভাঙন-সহ একাধিক সমস্যায় তারা। নন্দীগ্রাম, উত্তর কাঁথিতে গত বার জয়ী হওয়া শুভেন্দু অধিকারী এবং বনশ্রী মাইতি সরে গিয়েছেন। এগরার বিধায়ক সমরেশ দাস প্রয়াত। দক্ষিণ কাঁথি এবং মহিষাদল বিধানসভার দুই প্রার্থী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারকে ‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে, তাঁদের সরানোর দাবি উঠছে। তাছাড়া হলদিয়া, তমলুক এবং পূর্ব পাঁশকুড়ায় গতবারই হেরেছিল তৃণমূল। বাকি ৮ টি বিধানসভা কেন্দ্রে পশ্চিম পাঁশকুড়া, ময়না, নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, ভগবানপুর, খেজুরি, রামনগর এবং পটাশপুর বিধানসভায় গত বার জয়ী হলেও, সে বার যদিও ভোটের বৈতরণী পার করে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। এ বার তিনি গেরুয়া শিবিরে। এমন পরিস্থিতিতে শাসক দলকে কড়া টক্করের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।

এবিষয়ে জেলা তৃণমূলের কো- অডিনেটর মামুদ হোসেন বলেন, ‘‘ লোকসভা আর বিধানসভা এক নয়। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর নানান জনমুখী প্রকল্পে রাজ্যের প্রায় প্রতিটি মানুষ উপকৃত। সেখানে কেন্দ্রের ভ্রান্ত নীতির জন্য জ্বালানি তেলের দাম আকাশ ছোঁয়া, রান্নার গ্যাসে চুপিসাড়ে ভর্তুকি তুলে নেওয়া এবং দাম বাড়ানোয় নাভিশ্বাস উঠছে মানুষের।’’ তাই এ বারের বিধানসভায় মানুষ বিজেপি-কে যোগ্য জবাব দেবেন বলেই মনে করছেন তিনি।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সিপিএম-এর সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘দলের সমস্ত শাখার নেতারাই মাঠে নেমে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে জেলায় কয়েকটি সভা হয়েছে। সেখানে সমর্থকদের ভিড়ও যথেষ্ট ছিল। তবে এবার ভোটারদের বাড়ি বাড়ি প্রচারেই বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।’’ বাম আন্দোলনে এখনও মানুষের আস্থা রয়েছে ।

You may also like

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.