বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : মহিলা থানার অভ্যন্তরে মারধরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার শুনানি চলাকালীন হাইকোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল রাজ্য। মহিলা থানা পুনর্গঠন করতে বলেছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি। সেই মামলায় এবার সিট গঠনে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আদালতের নির্দেশ, আইপিএস মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে সিট (SIT) গঠন করতে হবে। জোড়া মামলার শুনানি হবে মেদিনীপুরের বিশেষ আদালতে। উল্লেখ্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা মন্ত্রীর গাড়িতে আহত হন এক ছাত্র। তারই প্রতিবাদে গত ৩ রা মার্চ ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। মেদিনীপুর শহরের মেদিনীপুর কলেজ ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল এবং পিকেটিং করে এসএফআই ও ডিএসও কর্মী সমর্থকরা। সেই সময় মেদিনীপুর কলেজ গেট থেকে এসএফআই নেত্রী সুচরিতা দাসকে আটক করে নিয়ে যায় কোতয়ালি থানার পুলিশ। মহিলা থানায় নিয়ে গিয়ে তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। কলেজের অভ্যন্তরেও বেশ কয়েকজন বহিরাগত ঢুকে তাদের উপর চড়াও হয় বলেও অভিযোগ। সেক্ষেত্রে পুলিশের মদতের অভিযোগ তুলেছিল এসএফআই। সেই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। অন্যদিকে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় গেটে মিছিল করে পৌঁছাতেই ডিএসও কর্মী সমর্থকদের আটক করে নিয়ে যায় কোতয়ালি থানার পুলিশ। পরে মহিলা কর্মীদের মহিলা থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের উপর অকথ্য অত্যাচার এমনকি গরম মোম শরীরে ফেলা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। থানায় নিয়ে যাওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয় গেটে তাদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেছিল। ওই ঘটনায় সুশ্রীতা সোরেন নামে এক ডিএসও নেত্রী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। জোড়া মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। রাত দুটোর সময় থানা থেকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই মহিলাদের রাত দুটোই কেন ছাড়া হল, সন্ধ্যা সাতটা-আটটায় কেন ছাড়া গেলো না? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বলেছিলেন, “মেদিনীপুর মহিলা থানার ভূমিকা ঠিক নয়, ডিজিকে বলুন এখনই ব্যবস্থা নিতে। না হলে আমি কড়া নির্দেশ দিতে বাধ্য হব।” তিনি আরও বলেছিলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ আমি দেখেছি। নির্যাতনের প্রমাণ আছে। কাউকে আটক বা গ্রেফতার করে অত্যাচার করা এবং সেই অত্যাচার করে উল্লসিত হওয়া চলতে পারে না।” এমনকি ১৭ ঘন্টার মধ্যে ১৩ ঘণ্টার ফুটেজ দেওয়া হয়েছে। সেই জোড়া মামলায় সিট গঠনের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। এসএফআই নেত্রী সুচরিতা দাস এর ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বলেছে, “হেফাজতে অত্যাচারের প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজে মিলেছে। কুহেলি সাহা নামে এক মহিলা পুলিশ কর্মী সুচরিতার চুলের মুঠি ধরে ধাক্কা মারছেন। অত্যাচারের প্রমাণ আছে। ডিএসপির রিপোর্টও বিশ্বাসযোগ্য নয়।”
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :

আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :
For WhatsApp Group : Click Here
এর পাশাপাশি ডিএসও নেত্রী সুশ্রীতা সোরেনের ক্ষেত্রে যে এফআইআর-এর ভিত্তিতে মামলা তাতে সন্দেহ হাইকোর্টের। পুলিশ অর্থাৎ সরকার যে সমস্ত ডকুমেন্ট কোর্টে প্রডিউস করেছিল অর্থাৎ অ্যারেস্ট মেমো, বেইল বন্ড, টাইমলাইন রিপোর্ট সমস্ত কিছুর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আদালত সন্দিহান। যার ফলে জোড়া মামলায় আইপিএস মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে SIT (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম) গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। হোম মিনিস্ট্রিকে লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে হবে। সিসিটিভি স্টাডি সহ তদন্ত করে রিপোর্ট কোর্টে জমা দিতে হবে। হাইকোর্ট বলেছে, কেসটি হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন, এসসি-এসটি অ্যাক্ট ভায়োলেশন সহ এই অংশটি হিউম্যান রাইটস কোর্ট-পশ্চিম মেদিনীপুর অর্থাৎ সেশন কোর্টে যাবে। সেখানে এই রায়ের ভিত্তিতে কেস চালু হবে।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :
For WhatsApp Group : Click Here
মহিলা থানার অভ্যন্তরে পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ সামনে আসার পরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছিলেন, “থানার অভ্যন্তরে পুলিশি অত্যাচারের যে অভিযোগ করা হচ্ছে, এমন ঘটনা ঘটার কোন অবকাশই নেই। যেহেতু পড়ুয়া, আমরা পড়ুয়াদের যে সামাজিক অবস্থান তা মাথায় রেখে তাদের প্রতি আমরা সংবেদনশীল ভাবে যে ব্যবস্থার নেওয়ার নিয়েছি। এটাকে বামপন্থী একটি রাজনৈতিক দল পুলিশকে চাপ দেওয়া, ওসি-র নামে কমপ্লেন কর, আইসি-র নামে কমপ্লেন কর অযথা এই জিনিসটিকে একটি অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা যদি হাইকোর্টেও যায়, আমরা সমস্ত তথ্য-পরিসংখ্যান সহ জমা দিতে সক্ষম হব। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পুলিশ মানবিক পুলিশ।” শুনানি চলাকালীন হাইকোর্ট সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছিল। ১৭ ঘন্টার মধ্যে ১৩ ঘণ্টার ফুটেজ জমা দিয়েছিল। তাতেও নির্যাতনের ছবি ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছিলেন বিচারক। বাকি চার ঘন্টার ফুটেজ জমা না দেওয়া নিয়ে পুলিশি নির্যাতনের স্পষ্ট দাবি করছে অভিযোগকারী ছাত্র সংগঠনগুলি। ডিএসও নেত্রী তনুশ্রী বেজ বলেন, “মামলাটাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে রাজ্য সরকার যেভাবে ডিসমিস করাতে চেয়েছিল তা পারল না। শুধু তাই নয়, তাদের সাবমিশনগুলি মিথ্যা প্রমাণিত হলো এবং আমাদের মামলার গ্রাউন্ডটা এক অর্থে প্রতিষ্ঠিত হলো। হাজতে আটকে রাখার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ পাওয়া যায়নি। পুলিশের ডকুমেন্টগুলিকে ম্যানুফ্যাকচার্ড বলা হয়েছে। আইনি পথে লড়াই জারি থাকবে।”
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Police Brutality
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper