বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : ক্ষীণ দৃষ্টির সমস্যা থাকা সত্ত্বেও নিজের প্রতিভাকে দিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছে। নিজ হাতে একটি স্বয়ংক্রিয় ঘণ্টা তৈরি করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন স্কুল শিক্ষক। সবসময় বিজ্ঞানের প্রতি গভীর আগ্রহী ছিল। ক্ষীণ দৃষ্টির কারণে অন্যদের মতো সবকিছু স্পষ্ট দেখতে না পেলেও সে হতাশ হয়নি। বরং এই বাধাকে পেরিয়ে নিজের প্রতিভা বিকাশের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে। সম্প্রতি সে নিজ হাতে একটি স্বয়ংক্রিয় ঘণ্টা তৈরি করে সকলকে অবাক করে দিয়েছে। এই ঘণ্টা নির্দিষ্ট সময়ে নিজে থেকে বেজে উঠে।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :
For WhatsApp Group 1: Click Here
For WhatsApp Group 2: Click Here
অন্ধকার কাটিয়ে আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন এই শিক্ষক সুরজিৎ মাইতি । তিনি একজন অসাধারণ শিক্ষক, যিনি নিজের দৃষ্টিহীনতাকে জয় করে শিক্ষা জগতে এক উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করেছেন। জন্ম থেকেই চোখের এক বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও, তিনি নিজের স্বপ্ন পূরণে অবিচল ছিলেন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষক সুরজিৎ মাইতি তাঁর নিজের জন্ম কাহিনী শোনালেন। তিনি এবং তাঁর যমজ ভাই-বোন দুজনেই চোখের এক দূরারোগ্য ব্যাধি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিল। খুব কম দৃষ্টিশক্তি এবং দোদুল্যমান দৃষ্টিশক্তি তাদের পড়াশোনায় অনেক বাধা সৃষ্টি করেছিল। পঞ্চম শ্রেণিতে তাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু হার মানেননি সুরজিৎ।
Paschim Medinipur
এক চক্ষু চিকিৎসকের উৎসাহ এবং বন্ধুদের সাহায্যে তিনি পুনরায় পড়াশোনা শুরু করেন এবং বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষকতা পেশায় আসেন। এরপর নিজের গ্রামের বিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞান শিক্ষক হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন এবং শিক্ষণ মহাবিদ্যালয় থেকে বি.এড ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি আরও জানান তাঁর এই অসাধারণ স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটি আবিষ্কার করতে তাঁর এক বাল্য বন্ধু প্রশান্ত মান্না সর্বত্র ভাবে তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। এবং এই যন্ত্রের সুরেলা কণ্ঠ তাঁরই এক ছাত্রী অত্যুর্মিলা চক্রবর্তী। ভেমুয়া অটল বিহারী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক…. বলেন, তাঁর আবিষ্কার স্বয়ংক্রিয় ঘন্টা মেশিন নির্দিষ্ট সময়েই স্কুলে বেজে ওঠে, ফলে শিক্ষা কর্মীর এই দায়িত্ব থেকে স্বস্তি মিলেছে, ওই শিক্ষা কর্মী অন্য কাজে নজর দিতে পারছেন।
আরও পড়ুন : ২৪০ টাকায় ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেলা মেদিনীপুরে, দেখে নিন কোন থানা এলাকার বাসিন্দাদের কবে সুযোগ
আরও পড়ুন : বনদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই মহিলা কলেজে গাছ কেটে পরিবহনের অভিযোগ
তাঁর এই নয়া আবিষ্কার অন্য স্কুল গুলিও ব্যবহার করলে উপকৃত হবে। ইতিমধ্যেই অনেকে তাঁর খোঁজ খবর নিচ্ছেন শুধু ছাত্র ছাত্রী নয় তাঁর এই আবিষ্কার এলাকার মানুষজনকেও তাক লাগিয়েছেন। অসাধারণ প্রতিভার জন্য স্বাভাবিক ভাবে আমরা সকলেই গর্বিত! এই স্কুলের এক সহকর্মী শিক্ষক জানিয়েছেন, সুরজিৎ বাবু বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি তাঁর প্রতিবন্ধকতা দূরে সরিয়েও চমকদার ম্যাজিক শো করেন, যদিও খুব বেশি দূরে গিয়ে তিনি অনুষ্ঠান করেন না। তাকে সাহায্য করার জন্য কেউ না কেউ পাশে থাকেনই। এছাড়াও পরিবেশ ও সাম্প্রতিক বহু বিষয় নিয়ে তিনি কবিতা সাহিত্য লেখা লিখি করেন।
ইতিমধ্যেই কয়েকটি তাঁর বই প্রকাশ পেয়েছে। আমাদের বিদ্যালয় ও এলাকার মানুষ হিসেবে সুরজিৎ বাবু কে নিয়ে আমরা গর্ব অনুভব করি। সম্প্রতি তিনি একটি বিশেষ ডিভাইস এবং স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে নিজের দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়েছেন। এই প্রযুক্তির সাহায্যে তিনি আরও স্বাচ্ছন্দ্যে পড়তে, লেখতে এবং শিক্ষার্থীদের শিখাতে পারছেন।শুধুমাত্র জ্ঞান দান করেন না, তিনি শিক্ষার্থীদের জীবনে আশার আলো জ্বালিয়ে দিয়েছেন। তাঁর অধ্যবসায় এবং নিষ্ঠা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপ্রেরণা জাগিয়ে তুলেছেন। তাঁর এই জীবন গল্প আমাদের শিখিয়ে দেয় যে, কোনো বাধাই স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হতে পারে না। বলাইবাহুল্য তাঁর অসাধারণ অর্জন সকলের জন্য অনুপ্রেরণার এক জ্বলন্ত উৎস!
আরও পড়ুন : ইসরোর দরবারে পিংলার সৌম্যদীপ! ভবিষ্যতে স্বপ্ন গবেষণার
আরও পড়ুন : পুরোনো মামলায় বিজেপির একাধিক নেতা কর্মীর বাড়িতে অভিযান পুলিশের
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Paschim Medinipur
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper