Home » মনখারাপের দুর্গাপুজো ওড়িষ্যার লক্ষ্মণনাথ রাজবাড়িতে, সুবিশাল মূর্তিপূজা পরিবর্তিত ঘটপুজাতে

মনখারাপের দুর্গাপুজো ওড়িষ্যার লক্ষ্মণনাথ রাজবাড়িতে, সুবিশাল মূর্তিপূজা পরিবর্তিত ঘটপুজাতে

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

পত্রিকা প্রতিনিধি : করোনা! নামেতেই বধ এখন সারা পৃথিবী।তার করাল থাবা ও ছেদ বসিয়েছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ দুর্গাপুজা তে।পুজা হলেও তা নমঃ নমঃ করেই।ফলতঃ আপামর বাঙালির কাছে মন খারাপের ২০২০।একই ছবি বাংলা-উৎকল সীমান্তের লক্ষ্মণনাথ রাজবাড়িতেও।রাজবাড়ি ঠিক নয়,জমিদার পরিবারের ঐতিহ্যময় ৫০০ বছরের দুর্গাপুজাতেও ছেদ করেছে করোনা।সুবিশাল দুর্গা প্রতিমা এবার পুজিতা হবেন ঘটপুজাতেই। Durgapuja, Durgapuja, Durgapuja

বাংলা ওড়িষ্যা সীমান্তে প্রবেশদ্বার লক্ষ্মণনাথ।আর সেখানে রয়েছে সুবিশাল রাজারগড়।প্রতিবছর ঘটা করে বিশালাকার প্রতিমা তৈরী করে পুজা হত দশভুজা দেবী দুর্গার।কিন্তু এবছরের কোন আড়ম্বর নেই পুজাতে।জমিদার পরিবারের প্রতিমা পুজা এবার রূপান্তরিত ঘট পুজাতে।

ঘন সবুজের ধার ঘেঁষে চলেছে সুবর্ণরেখা।আর অন্য দিকে মন্দির ঘেরা সুদৃশ্য গড়ের রাজ বাড়ি বা জমিদার বাড়ি । পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাশের রাজ্য ওড়িশার প্রবেশ দ্বারেই রয়েছে ঐতিহাসিক লক্ষণনাথ । এক সময় লক্ষণ নাথ ছিল এক ব্যক্তির নাম।এখন লক্ষণ নাথ ওড়িশার প্রবেশ দ্বারে অবস্থিত ভ্রমন পিপাসু মানুষের গন্তব্য।  লক্ষণনাথের দুর্গা পুজো বাংলা ও ওড়িশার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে ছিল এক অন্যতম আকর্ষণীয়। সুবিশাল দুর্গা প্রতিমা, নবমীতে মহিষ বলি,আর সুবর্ণ রেখা  নদীতে  বিজয়া দশমীতে  প্রতিমা নিরঞ্জন ছিল প্রাচীন ৫০০ বছরের রীতি।রাজ গড়ের এক শুভাকাঙ্খী বলেন-“পাঁচশ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে দুর্গাপুজা হয়ে আসছে।কিন্তু  করোনা আবহে তার পরিবর্তন করা হয়েছে সরকারী বিধি নিষেধ মেনে।তাই জন সমাগমে ছেদ দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।যা সবার কাছে খুব বেদনার।”

আরও পড়ুন – পাঁশকুড়ার বড়মা কোভিড হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসককে মারধর, গ্রেপ্তার ৪

রাজার গড়ের সামনে দিয়ে প্রবেশ করলে নীল আকাশের নীচে সাদা রং এর বিশাল গড়ের জমিদার বাড়ি।একপাশে পড়বে দেবাদিদেব মহাদেবের মন্দির।বাড়ির মধ্যে গেলে সুদৃশ্য দালান,চুন সুরকির কাজে আর কাঠের জানালা মন কাড়ে সকলের।সরু খাড়া সিড়ি দিয়ে উপরে গেলে দেওয়ালে লাগানো প্রাচীন নানা ঐতিহ্যের কারুকার্য।ক্ষেত্র মোহন সিনহা শোনালেন জমিদার বাড়ির ইতিহাস।

সুবর্ণ রেখা নদীর তীরে অবস্থিত এই গ্রামের কেন্দ্র স্থলেই রয়েছে ১৭২০ সালে তৈরি ঐতিহাসিক মহাশয়গড়।জমিদার বাড়ি বা রাজারবাড়িটি গড়ে উঠেছিল ২ একর জমির উপর ।এক সময় অজয় ও দামোদর নদীর তীরবর্তি এলাকায় রাজত্ব করতেন সুর বংশের রাজারা ।সম্রাট হোসেন শাহ এর আমলে রামচন্দ্র ঘোষ ওড়িষ্যার জলেশ্বর সদর কানুনগোর অর্থাৎ চলতি ভাষায় মহকুমা শাসকের দায়িত্ব পান।১৫০৮ সাল থেকে সদর কানুনগো হওয়ার পর থেকে দুর্গাপুজার প্রচলন শুরু করেন জলেশ্বরে।তারপর লক্ষ্মণনাথে জমিদার বাড়ি তৈরীর পরেই সেখানেই দেবি পুজিতা হন নতুন রুপে।রাজবাড়ির পশ্চিমে রয়েছে প্রকান্ড দুর্গামন্ডপ।সেখানে প্রতিবছর দেবির মৃন্ময়ী থেকে চিন্ময়ী  হয়ে উঠেন কিন্তু  এবারে পুজা নাম মাত্রই।জমিদার বাড়ির ভিতরে অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা পাথরের তৈরি মন্দির।পাশে বিষ্ণু মূর্তি।শিউলী গাছের পাশে দুই অধিষ্ঠাতা দেবতার মন্দির বাড়িয়েছে সৌন্দর্য্য কে।দালান কোঠা, জানালা দরজা উঠোন মন কাড়ে সকলের।প্রবীণ নাগরিক ক্ষেত্রমোহন বাবু বলেণ-” এবারে পুজা তে ভীড় এড়ানোর জন্য মাত্র গুটি কয়েক লোখে নিয়ে পুজা হবে।তাই সবারই মন খারাপ।”

পুজা হবে,তা শুধু রীতি রক্ষায়।তবে এবারে আনন্দ অনুষ্ঠানে বেদনার সুর।ওড়িষ্যার লক্ষ্মণনাথে হলেও এই সংস্কৃতি বয়ে আনে দুই রাজ্যের সংস্কৃতিকে।তবে দুর্গাপুজাতে জমিদার বাড়ি ঘোরার আনন্দের জন্য একবছরের অপেক্ষায় ভ্রমন পিপাসুরা।তবে কাটবে অচালবস্থা,তাই মন খারাপের এবারের পুজা।

লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi

You may also like

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.