পত্রিকা প্রতিনিধি: করোনা ঠেকাতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন।আর সেই লকডাউনে বন্ধ ছিল সমস্ত ছিল দিঘা সহ সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র।কিন্তু সময় গড়াতেই সরকারি নির্দেশকা মেনে খুলে গিয়েছে দিঘা সমুদ্র সৈকত।এরই মধ্যে বেশকয়েকদিন আগে মান্দারমনিতে বিশালাকৃতির পূর্ণবয়স্ক তিমি উদ্ধারের পর ফের দিঘার সমুদ্র সৈকতে মৎস্যজীবীদের জালে আটকে গেল এক বিশালাকৃতির একটি হাঙর। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাঙর দেখতে পর্যটকেরা ভিড় জমে যায় দীঘা মোহনার পাইকারী মাছের বাজারে।এমন এক ঘটনা ঘটলো যা পর্যটক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষদের ও বাইরে একপ্রকার টেনে আনলো।
মৎস্যজীবী সূত্রে জানা গিয়েছে,গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া একটি ট্রলারে মৎস্যজীবীদের জালে এই মাছটি আটকা পড়ে।এরপর মাছটিকে টেনে পাড়ে নিয়ে আসেন মৎস্যজীবীরা।এরপর মাছটিকে তুলে আনে দীঘা মোহনার মাছের পাইকারী বাজারে।তারপর মৎস্য নিলাম কেন্দ্রের NCR কোম্পানির কাঁটায় নিলামে মাছটি ৪২ হাজার টাকায় কিনে নেয় এক মৎস ব্যবসায়ী।তবে উদ্ধার হওয়া হাঙ্গর মাছটির ওজন প্রায় ৪কুইন্টাল হলেও লম্বায় প্রায় ১০ ফুট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামুদ্রিক মাছের ডিম থেকে লক্ষ কোটি পোনা হলেও হাঙ্গর ব্যতিক্রম। ১০ থেকে ১২ বছরে হাঙর পরিপক্ব হয় এবং দুই থেকে ১৬টি বাচ্চা দেয়। এ কারণে হাঙ্গরের সংখ্যা দ্রুত বাড়ে না। কিন্তু দিঘা উপকূলে মাছ ধরার ট্রলারের জালে আটকা পড়ে হাঙ্গর বিলুপ্ত হচ্ছে। যা পরিবেশ প্রতিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মাছ ধরার হাজারো ফাঁস জালে আটকা পড়ে ডিম পাড়তে আসা মা কচ্ছপের মৃত্যু যেমন হচ্ছে, তেমনি ২০০ গ্রাম থেকে তিন মণ ওজনের অসংখ্য হাঙ্গরও ধরা পড়ছে।ইলিশের মতো আইন করে হাঙ্গর নিধন বন্ধ করাও জরুরি।তাছাড়া মূলত এই হাঙ্গর মাছের তেল গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে।
দিঘা ফিশারমেন এন্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডিরেক্টর নবকুমার পয়ড়্যা বলেন,দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে চালানের জন্য হাঙ্গর শিকার করা হলেও দিঘা উপকূলে সে সব হয় না। অন্য মাছ ধরতে গিয়ে মাঝেমধ্যে জালে ওঠে হাঙর।”তবে দিঘা মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে কেঊ হাঙ্গর বিক্রি করলে খোঁজ খবর নিয়ে তারা অ্যাসোশিয়েশন এর তরফে বেবস্থা নেওয়া হবে ।আজ দিঘা তে ১টি হাঙ্গর মাছ ধরা পড়েছে।৪০ হাজার বিক্রি হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা সত্বেও হাঙর চোরাশিকার এত বাড়ছে কেন ?
পাইকারি বাজারে এর দাম খুব একটা বেশি নয়। কোথাও ২০ হাজার টাকা আবার কোথাও বা ৪০হাজার টাকা কেজি। তবে বিদেশের বাজারে এর চাহিদা আকাশছোঁয়া।হাঙ্গরের পাখনার স্যুপ পৃথিবীর অনেক দেশেই অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার। আর খাদ্যরসিকদের কাছে সেই খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য এত বেশি হাঙ্গার শিকার করা হচ্ছে।তাই এক হাজারেরও বেশি হাঙ্গর-প্রজাতি এখন পৃথিবী থেকেই বিলুপ্ত হতে চলেছে।