ওয়েব ডেস্ক, বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : পঞ্চায়েত ভোটের আগে পূর্ব মেদিনীপুরে বাড়তি নজর দিয়েছে তৃণমূল। জেলা ও ব্লক স্তরের মধ্যে সমন্বয়সাধনের জন্য কুণাল ঘোষকে পাঠানো হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। আর এবার কাঁথিতে সভা হল অভিষেকের। এদিন তিনি মঞ্চে উঠতেই দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “আমরা প্রায় সময়মতো সভা শুরু করেছি। আসতে আসতে দেখেছি, সভা ঘিরে মানুষের মধ্যে যে উন্মাদনা, উৎসাহ।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন : Click Here
অন্তত পক্ষে পাঁচগুণ মানুষ সভাস্থলে এসে পৌঁছাতে পারেননি। রাস্তায় রয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর আমরা যখনই সভা করি। আমাদের জায়গাটা বরাবরই একটু ছোট হয়ে যায়। আমি বিধানসভা নির্বাচনের আগে পূর্ব মেদিনীপুরে সভা করেছিলাম। তখনও নির্বাচন ঘোষণা হয়নি। আজ যাঁরা সভাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় অনেকের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখেছিলাম, অনেকের মনে ভয়-ভীতি রয়েছে যে নির্বাচনে কী হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যার উপর ভরসা করে জেলার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছিলেন, তিনি তো নিজের গা বাঁচাতে, বিশ্বাসঘাতকতা করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এবার তৃণমূলের কী হবে।” ” শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর মূর্তির দিকে তাকালে বোঝা যায় তিনি বুক চিতিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। আর সেই মেদিনীপুরের সম্মানই ভূলুণ্ঠিত করেছেন একজন। তাঁকে মানুষ ক্ষমা করবে না।”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁকে জেলার দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তিনি ‘বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন’, আক্রমণ অভিষেকের। ”
আমি হলদিয়ার সভা থেকে ঠিকাদারি নিয়ে সতর্ক করেছিলাম। আমরা মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ । ঠিকাদারদের প্রতি নই।” এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি বলছি, ১৫ দিন সময় দিয়ে গেলাম। এই কলেজ মাঠেই সভা হবে। তুমি তোমার খাতা নিয়ে আসবে। আমি আমার খাতা নিয়ে আসব। দুর্নীতি নিয়ে উলঙ্গ যদি না করতে পারি আমি রাজনীতির ময়দানে পা রাখব না।”শিশির অধিকারীকে অসম্মান করিনি।
আরও পড়ুন : রাত পোহালেই কাঁথিতে হাইভোল্টেজ জনসভা অভিষেকের
তাঁকে কাজের জন্য শ্রদ্ধা করি না, বয়সের জন্য করি। সভা করতে এলেই ধমকানো হয়। জোকায় এক চামচাকে দিয়ে আমাকে সোশাল মিডিয়ায় আক্রমণ করেছিল। আমিও তাকে জবাব দিয়েছিলাম।” পূর্ব মেদিনীপুরজুড়ে ‘বেইমানমুক্ত কর্মসূচি ‘ পালন করা হবে, দলীয় কর্মী-নেতাদের উদ্দেশে এই বার্তা দিয়েছেন তিনি।এদিন তিনি আরও বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে অবাধ ভোট হবে। নির্বিঘ্নেই হবে নির্বাচন।”
তবে এই সভায় মধ্যেও দেখা গেল অন্য ধরনের এক চিত্র। এদিন সভাস্থলে যাওয়ার আগে স্থানীয় এলাকায় জনসংযোগ করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই প্রেক্ষিতে এদিন মারিশদা ৫ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রমাকৃষ্ণ মণ্ডল এবং অঞ্চল সভাপতিকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি তা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অপরদিকে কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার আগের রাতেই বিস্ফোরণে এক তৃণমূল নেতা সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে এমনটাই অসমর্থিত সূত্রে জানা যায়৷ তিন ‘জনের মৃত্যু হলেও গুরুতর জখম হয়েছেন আরও ২ জন বলে জানাগেছে৷ ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত্রি সাড়ে ১০ টা নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর ২ ব্লকের ভুপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়য়াবিলা গ্রামে। মৃতরা হল রাজকুমার মান্না, তার ভাই দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েন। রাজকুমার মান্না এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে পরিচিত।
তৃণমূল নেতার তার ভাই হচ্ছেন দেবকুমার গায়েন৷ আহতদের উদ্ধার করে পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে এমনটা অসমর্থিত সূত্রে জানাগেছে। ঘটনার পর এলাকায় যথেষ্ট থমথমে রয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, ভুপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়ুয়াবিলা গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের বুধ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়ীতে বোম বাঁধার কাজ করছিল। তখনই অতর্কিতে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই ছিল যে বাড়িটি উড়ে যায়। মর্মান্তিক মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতা রাজকুমার মান্না সহ তিনজনের। গুরুতর জখম হয় আরও বেশ কয়েকজন। আহত ও মৃতরা প্রত্যেকে তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতিকারীরা বলে এমনটাই অভিযোগ। এরা প্রত্যেকের বোম বাঁধার কাজ করছিল।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দোলুই বলেন ” তৃণমূল নেতার বাড়ীতে বোম বাঁধতে গিয়ে বিপত্তি৷ তৃণমূল নেতা সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি আরও আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখছি “। ভগবানপুরে বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন ” রাতের অন্ধকারে বোম বাঁধতে এমনই ঘটনা। পুলিশের উপস্থিতিতে মৃতদেহ গায়েব করার চক্রান্ত চলছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি না করে পশ্চিম মেদিনীপুরে নিয়ে যাচ্ছে। দু’জনের মৃত্যু নয় মৃতের সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করছি। পুলিশ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে “।
যদিও এ বিষয়ে ভুপতিনগর থানার পুলিশ ও জেলা পুলিশের কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। একাধিকবার তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব থেকে জেলা নেতৃত্বকে ফোন করা হলে ফোন ধরেননি৷ তাই কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি৷ বস্তুত, বিধানসভা নির্বাচনের থেকেই কার্যত উত্তপ্ত ছিল ভূপতিনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা। রাতের অন্ধকারে বোমাবাজি ও গুলির শব্দ প্রায় দিনই শোনা যায়। সাম্প্রতিক কয়েকদিন আগে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মিহির ভৌমিককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। রাতের অন্ধকারে এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি ও গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় রীতিমতন এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।
আরও পড়ুন : পাঁশকুড়ায় থানার গোডাউনে জমা নিষিদ্ধ আতশ বাজি থেকে বিস্ফোরণে মৃত্যু এক পুলিশ কর্মীর
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Abhishek Banerjee
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali