ওয়েব ডেস্ক, বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : দেড়শো বিঘা জমির ফসলের ওপর দিয়ে চালানো হল ট্রাক্টর। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েছিলেন বিডিও এবং পুলিশ। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডের কদমডিহা এলাকাতে। চোখেরা সামনে ফসল নষ্ট হতে দেখে হা-হুতাশ করলেন চাষীরা। চাষীদের দাবি, প্রায় দেড়শো বিঘা ফসলে ক্ষতি প্রায় দেড় কোটি টাকা।
কিন্তু কেন ফসল নষ্ট করলো প্রশাসন? বিডিও অমিতাভ বিশ্বাস বলেন, “জমিটা এখন এয়ারফোর্সের। তাঁরা তিনদিনের মধ্যে হাজির হবেন। তাদের হাতে দখলমুক্ত জমি দিতে হবে। সেই লক্ষ্যেই এই কাজ করতে হয়েছে।” জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের কদমডিহা এলাকাতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে রেল লাইনের ওপরে একটি ওভারব্রীজ তৈরী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সেই ব্রীজ তৈরী করতে যে জমির প্রয়োজন সেখানে কেন্দ্রের এয়ারফোর্সের পুরনো জমি রয়েছে। তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাজ্য সরকার এয়ারফোর্সের কাছে জমি বদল করে। বলা হয়, যে পরিমাণ জমি এয়ারফোর্স রাজ্যের ওভারব্রীজ তৈরী করতে দেবে, সেই সমপরিমাণ জমি এয়ারফোর্সকে দিতে হবে রাজ্যের তরফে। রাজ্য সরকার সেই মতো এয়ারফোর্সের পরিত্যক্ত এরোড্রামের পাশে একটি রাজ্য সরকারের খাস জমি দেয় কয়েকমাস আগে।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ওই খাস জমিতে স্থানীয় শতাধিক কৃষক চাষ করে থাকেন। এবারেও সেখানে চাষ হয়েছে। তার মাঝেই রাজ্য সরকার সম্প্রতি নোটিস করে কৃষকদের জানিয়ে দিয়েছে, “জমি হস্তান্তর হয়ে গিয়েছে। তাই ফসল তুলে নিতে হবে৷” তবে এমন নোটিস আগেও দেখেছেন চাষীরা। তাই সেভাবে গুরুত্ব না দিয়ে চাষ তোলার অপেক্ষা করছিল। অন্যদিকে এয়ারফোর্স তাদের পাওয়া জমিতে চাষ হচ্ছে দেখে জমি খালি করতে নির্দেশ দেয় রাজ্যকে।
সেই মতো রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বিডিও অমিতাভ বিশ্বাস সহ পুলিশ আধিকারিকরা ট্রাক্টর নিয়ে গিয়ে হাজির হয় মাঠে। প্রায় দেড়শো বিঘা জমিতে কুমড়ো ও বিভিন্ন সব্জী চাষ করেছিলেন চাষীরা। বিডিও-র কাছে চাষীরা অনুরোধ করেন ২০ দিন সময় দিতে। তাহলে সেখানে শেষ ফলে যাওয়া চাষটা তুলে নেবেন। কিন্তু বিডিও সেই সময় দিতে পারেন নি। চাষীদের চোখেরা সমানেই ট্রাক্টর চালিয়ে সব ফসল নষ্ট করে দেয়।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষী গৌতম মন্ডল বলেন, “আমরা জানি জমি আমাদের নয়, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই চাষ করছিলাম। শেষ চাষটা ফলে গিয়েছিল। কুড়িদিন হলেই বাড়িতে তুলে নিতে পারতাম। কিন্তু প্রশাসন সময় দিল না। এই বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। তিনি বলেন, “এই ভাবে ফলা ফসল নষ্ট করার কাজটা মহাপাপ হয়েছে। কুড়িদিন হলেই চাষীরা ফলানো ফসল বাড়িতে তুলে নিতে পারতো। কেন্দ্রের এই চাপ দেওয়ার কাজটা অমানবিক। একটু সময় দিতেই পারত।”
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Chandrakona
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper