পত্রিকা প্রতিনিধি : করোনায় হলদিয়া বন্দরে মেরিন বিভাগের এক কর্মীর মৃত্যুতে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত শনিবার সকালে কলকাতা মাঝেরহাট পোর্ট ট্রাস্টের হাসপাতালে ৫৭ বছর বয়সি ওই কর্মীর মৃত্যু হয়। ইতিমধ্যে মেরিন বিভাগের ২৮ থেকে ৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
জাহাজ চলাচলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের নিজস্ব টাগ ভেসেল অপারেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।আপাতত বেসরকারি সংস্থার টাগ ভেসেলের সাহায্যে বন্দরে জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে। মেরিন বিভাগ ছাড়াও কল বার্থ, বন্দর প্রশাসনের মূল অফিসে জ ওহর টাওয়ারে একের পর এক কর্মী করোনা ধরা পড়েছে।
সব মিলে গত একমাসে প্রায় ৪০ জন বন্দর কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।করোণা সংক্রামক বাড়াতে থাকায় উদ্বিগ্ন হলদিয়া বন্দর প্রশাসন।হলদিয়া পৌরসভা এলাকায় মোট করণা আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে দুর্গা চক টাউন ও টাউন শিপের শিল্প আবাসন এলাকাতেই সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি।
দুর্গাচকে ৫ থেকে ৬ টি ওয়ার্ডের প্রায় ৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ১০ নম্বর ওয়ার্ডে।হলদিয়া বন্দরের মেরিন বিভাগের কর্মী পেশাগত কারণে বাইরের লোকজন এবং বিদেশি জাহাজে কর্মীদের সংস্পর্শে আসতে হচ্ছে ।ফলে ওই বিভাগের সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি । বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে ওই বিভাগে প্রায় দেড়শ জন শ্রমিক কর্মচারীও পাইলট রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ করণায় আক্রান্ত। মাসখানেক আগে মেরিন বিভাগের পাইলটরা প্রথম আক্রান্ত হন ।তারপর একের পর এক কর্মীর করণা পজিটিভ রিপোর্ট আসতে থাকে।
এর মধ্যেই হলদিয়া পৌরসভা চিরঞ্জীব পুর এলাকার বাসিন্দা এক বন্দর কর্মীর মৃত্যুতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শ্রমিক কর্মচারী ও স্থানীয় মানুষজন।
ওই বন্দর কর্মী মেরিনে মেকানিক্যাল ছিলেন। মেরিন বিভাগের কর্মীদের অনেকেই করোণা আক্রান্ত সহকর্মীদের সংস্পর্শে আসা গৃহবন্দি হয়েছেন। আবার অনেকে ভয় কাজে যোগ দিচ্ছেন না ।ফলে বন্দরের নিজস্ব ৬ টি টাগ ভেসেলের অপারেশন বন্ধ রয়েছে।
বেসরকারি তিনটা টাক ভেসেল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।প্রসঙ্গত নাব্যতা সমস্যার জন্য এই টাগ ভেসেল গুলি পণ্যবাহী জাহাজ কে হুগলি নদীর চ্যানেলে যাতায়াতের সময় বা ডকে বাথিংয়ের সময় সাহায্য করে।
বন্দরের ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার( প্রশাসন) প্রবীন কুমার দাস বললেন বন্দরে বিভিন্ন বিভাগে কর্মীদের মধ্যে সংক্রামক বেড়ে যাওয়া উদ্বেগ রয়েছে। এজন্য টাউনশিপ সেক্টর ফোর এবং ফাইভের যে আবাসন গুলি কর্মী ও তার পরিবারের করো না ধরা পড়েছে, সেগুলি সিল করে দেয়া হয়েছে ।ঐ আবাসনের কাউকে বাইরে বের হতে দেয়া হচ্ছে না ।তাদের বাড়িতে জরুরী পরিষেবা দেওয়ার জন্য বন্দরের স্বেচ্ছাসেবক টিম তৈরি করা হয়েছে। প্রবীন বাবুর অফিসের দুই কর্মী করণায় আক্রান্ত হওয়ায় তিনি নিজেও হোম করেনটাইন রয়েছেন।হলদিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলর সদস্য সত্যব্রত দাস বলেন, পৌরসভার 1 নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুরে এক ব্যবসায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে । কিন্তু বারবার সতর্ক করার পরও পৌর এলাকা জুড়ে বাজার হাট গুলিতে মানুষ অহেতুক ভিড় করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন শিল্প সংস্থা, স্বাস্থ্য দপ্তর ,পুলিশকে নিয়ে চলতি সপ্তাহে প্রশাসন ও পৌরসভার জরুরী মিটিং করবে।