পত্রিকা প্রতিনিধি : করোনাকে সামনে রেখেই পাতা হয়েছিল প্রতারণার ফাঁদ। সেই ফাঁদে পা দিয়েই প্রায় ৫৫লক্ষ টাকা খুইয়েছেন পাঁশকুড়ার এক ব্যবসায়ী। করোনা প্রতিষেধক তৈরির কাঁচামাল সরবরাহের নাম করেই প্রতারকরা তাঁকে ধোঁকা দিয়েছে। আর সেই প্রতারণা চক্রের মুখ এক মহিলা। অনেকটা হানিট্র্যাপের স্টাইলেই স্কটিস নাগরিক পরিচয় দেওয়া ওই মহিলা ফাঁদ পেতেছিল। ২৩জুলাই প্রতারিত ব্যবসায়ী আশিস সামন্ত পাঁশকুড়া থানায় এব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন। পাঁশকুড়া থানার ওসি অজয় মিশ্র বলেন, একটা অভিযোগ এসেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত ৬ এপ্রিল আশিসবাবুর সঙ্গে ওই মহিলার পরিচয় অনলাইনে। নিজেকে স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে ওই মহিলা আলাপ জমায়। দু’জনের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। চলতে থাকে নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। মহিলা নিজেকে আমেরিকার একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার প্রোকিওরমেন্ট ম্যানেজার বলে পরিচয় দেয়। গত ২১জুন চ্যাট চলাকালীন ওই মহিলা আশিসবাবুকে জানায়, তাদের সংস্থা করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন ও ওষুধ নিয়ে গবেষণা করছে। ভারত থেকেই নেওয়া হচ্ছে এই ওষুধের কাঁচামাল। সেই কাঁচামাল যারা পাঠাচ্ছে, তারা মোটা কমিশন পাচ্ছে। আশিসবাবুকেও সে ওই কাজে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেয়। প্রথমে তিনি না করে দেন। পরে অবশ্য মহিলার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।
তারপরই ওই মহিলা আশিসবাবুকে সাহায্য করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। ভাবখানা এমন, বিদেশি বন্ধুর উপকারের জন্য যান কবুল করে দিতেও প্রস্তুত। খুব তাড়াতাড়ি কাঁচামাল প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে। মহারাষ্ট্রের সেই সংস্থার ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেল সহ যাবতীয় তথ্য দিয়ে দেয়। আশিসবাবুকে জানিয়ে দেয়, ৬ জুলাই বিদেশ থেকে বিশেষ ফ্লাইট গিয়ে ওই কাঁচামাল নিয়ে যাবে। হাতে সময় কম। তাই আশিসবাবু ফোন নম্বর পাওয়ামাত্র দেরি না করে কাঁচামাল কেনার জন্য অর্ডারও দিয়ে দেন।আশিস সাউ বলেন, বলেন, আমি নিজে একজন আইটি বিশেষজ্ঞ। তারপরেও এই প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব খোয়ালাম। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন ও ওষুধ তৈরির কাঁচামাল পাঠিয়ে মোটা কমিশনের লোভ দেখিয়েছিল। ইচ্ছা ছিল না। তবুও স্কটিশ পরিচয় দেওয়া ওই মহিলার জেদাজেদিতে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। প্রতারণার বিষয়টা আমার কাছে এখন জলের মতো পরিষ্কার। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তিনটির মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট ক্লোজ। বাকি দু’টি চালু আছে। তদন্তকারী অফিসাররা চাইলে আমার কিছু টাকাও ফিরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু, পুলিস আগ্রহ দেখাচ্ছে না।