ওয়েব ডেস্ক, বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : মনসুকা ব্রিজ নির্মাণের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন জেলাশাসক। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে ঠিকাদার সংস্থাকে সরকারিভাবে কালো তালিকাভুক্ত করার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন খোদ জেলাশাসক। জেলাশাসকের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পার হতে হাতে আর মাত্র চার দিন বাকি। কিন্তু সময়সীমা শেষ হলেও কাজ শেষ হওয়া তো দূরের কথা।এতদিন ধরে কেবল পিলারগুলি দাঁড়িয়েছে। ছাদ থেকে শুরু করে ব্রিজের দুই দিকের অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ সম্পূর্ণ বাকি। তিন বছর ধরে এভাবেই শামুকের গতিতে চলছে কাজ।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন : Click Here
২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি তড়িঘড়ি ব্রিজের শিলান্যাস করে গিয়েছিলেন তৎকালীন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ১৮ কোটি টাকা। ব্রিজ তৈরির সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল দেড় বছর। কিন্তু শুরু থেকেই কাজ থমকে থেকেছে দফায় দফায়। ২০২২ সালের শীতকালীন সময়ে কাজ করার যখন অনুকূল সময় ছিল,তখনও কাজ বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ব্রিজের কাজে গতি আনতে তৎকালীন জেলাশাসক আয়েশা রানি। মনসুকায় এসে ঠিকাদার সংস্থার ম্যানেজারকে ডেকে ধমক দিয়ে তিনি বলেছিলেন এক বছরের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। অন্যথায় ব্ল্যাক লিস্ট করা হবে ওই ঠিকাদার সংস্থাকে।
Mansuka Bridge
কিন্তু তাতে কোনো টনক নড়েনি ঠিকাদার সংস্থার। পরের এক বছরে কাজ সেই ভাবে এগোয়নি। এর পরেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে দুই পারের হাজার হাজার মানুষের। প্রতিদিন গাঁটের টাকা খরচ করে বাঁশের সাঁকো বা বর্ষায় নৌকার ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে এলাকার মানুষজন ব্রিজ তৈরির কাজে গতি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এলাকার মানুষের ক্ষোভের কথা পৌঁছায় নতুন জেলাশাসক খুরশেদ আলি কাদরির কানে। ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর সেতুর কাজ দেখতে মনসুকায় আসেন বর্তমান জেলাশাসক। সেদিন ঠিকাদার সংস্থাকে ফের ধমক দিয়ে তিনি জানিয়ে দেন, এপ্রিল মাসের মধ্যে কাজ শেষ না হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।ঠিকাদর সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
জানা গিয়েছে,কালো তালিকাভুক্ত কথার অর্থ হলো ওই ঠিকাদার ভবিষ্যতে কোনোদিন সরকারি টেন্ডার পাবেন না এবং ওই কাজ থেকে তাঁকে বরখাস্ত করা হবে। কিন্তু সময় গড়ালেও জেলাশাসকের সেই ধমকে কাজ হলো না। কাজ শেষ হতে এখনো বছর দেড়েক সময় লাগবে বলে অভিমত স্থানীয়দের। জানা গিয়েছে, ব্রিজের পশ্চিম দিকের অ্যাপ্রোচ রোড করার জন্য জায়গা সংক্রান্ত জটিলতা এখনও কাটেনি। ওই জায়গাটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন।সরকারি নিয়ম মোতাবেক সেই জায়গা জট এখনও কাটেনি। কিন্তু একের পর এক জেলাশাসকের ধমক আর হুঁশিয়ারির দাওয়াই যে কোনো কাজে আসছে না তা কার্যত স্পষ্ট।
আরও পড়ুন : পুরুলিয়ার চাকরির সিটগুলি মেদিনীপুরের লোককে বিক্রি করেছিল শুভেন্দু?
আরও পড়ুন : নির্বাচনী প্রচারে পশ্চিম মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী
তাহলে কি ঠিকাদার এবার কালো তালিকাভুক্ত হবেন নাকি বিগত দিনের বেঁধে দেওয়া সময়ের কোনও মূল্যই থাকবে না, সেই প্রশ্নই তুলছেন অনেকে। এই নিয়ে ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন,বড় বড় সরকারি আধিকারিকরা ঠিকাদারকে পরিচালনা করেন নাকি ঠিকাদার জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকদের চালান এটাই বড় প্রশ্ন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ঠিকাদারের উপর বলার কেউ নেই। যদিও এই নিয়ে মনসুকা- ১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মিলন পাত্র বলেন, স্থানীয় প্রধান এবং এলাকার মানুষ হিসেবে চাই এই ব্রিজ নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ হোক।
বন্যা সহ সারাবছর নদী পারাপার করতে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। কিন্তু এত ধীর গতিতে কাজ চলছে যে কাজ কবে শেষ হবে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। এলাকার মানুষজন ক্ষুব্ধ। জেলাশাসক কড়া ব্যবস্থা নিক ঠিকাদারের উপর। অপরদিকে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি বিকাশ কর বলেন, ২১ সাল থেকে শুরু হয়ে আজ ২৪ সাল, এলাকার মানুষ বড় আশা নিয়ে থাকে। কিন্তু প্রশাসনের শীর্ষস্তরের আধিকারিক বলার পরেও কেন কাজে গতি নেই সেটা ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ অবশ্যই দেখবেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে চাই ব্রিজটি দ্রুত শেষ হোক।
আরও পড়ুন : ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে এবার অভিনেতা বনাম অভিনেতার লড়াই! জল্পনা তুঙ্গে
আরও পড়ুন : হুটার বাজিয়ে এসকর্ট করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছাবে বনদপ্তর, থাকবে কড়া নজরদারি
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Mansuka Bridge
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper