পত্রিকা প্রতিনিধিঃ প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে আসছেন নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার আসার জন্য ইতিমধ্যে বটতলা সংলগ্ন মাঠে তৈরি হয়েছে হ্যালিপ্যাড ময়দান। এদিন দুপুর ৩ টা নাগাদ নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের বটতলা সংলগ্ন মাঠে কপ্টার থেকে থেকে নেমে ওই এলাকার একটি কর্মী সভায় যোগ দেবেন তিনি। এরপর কর্মীসভা শেষে নন্দীগ্রাম-১ ও ২ ব্লকের কিছু নেতাকে নিয়ে সাংগঠনিক আলোচনা করবেন। পরের দিন অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনোনয়নপত্র জমা দেবেন হলদিয়া মহকুমার শাসক দপ্তরে। । তার আগে বেশ কয়েকটি মন্দির, পীরস্থান যাবেন এবং শহিদ বেদিতে মালা দিবেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়ায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার পথে সঙ্গী হবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আরো দুজন হলদিয়া ও মহিলাদল বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিবেন। ওই বিধানসভার ১৭টি পঞ্চায়েত এলাকার কর্মীরা। তার জন্য ইতিমধ্যেই বেশকিছু বাসের বুকিং হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় নেতা কর্মীরাই নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে এসব করছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী আসার আগেই নন্দীগ্রামে চলে আসছেন তৃণমূলের মন্ত্রীরাও।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের নেপথ্যে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আন্দোলনকারীদের সমর্থন করার জন্য তিনি বারবার নন্দীগ্রামে ছুটে এসেছিলেন। কখনও রাস্তা অবরোধ করে, কখনও গুলি চালিয়ে ভয় দেখানো হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু, এসব করেও তাঁকে আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়নি। সেই কারণেই নন্দীগ্রামকেই বিধানসভা ভোটে নিজের নির্বাচনী লড়াইয়ে ময়দান হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
অপরদিকে তাঁর ইলেকশন এজেন্ট শেখ সুপিয়ান বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের উপর ভরসা রেখেছেন। জমি আন্দোলনের পবিত্র ভূমির মানুষজন সেই আস্থার মর্যাদা দেবেন। বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটের সময় মুখ্যমন্ত্রী মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। তার আগে সকালে জানকীনাথ মন্দির, বাসুলি মন্দির, রেয়াপাড়ার শিবমন্দির, সামসাবাদে পীরস্থান এবং গোকুলনগরে শহিদবেদিতে যাওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই গোটা বিধানসভা এলাকার সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি রিপোর্ট রাজ্য সভাপতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট নিয়ে বুধবার জরুরি বৈঠক হবে। নন্দীগ্রাম বিধানসভার ১০-১২জনের একটি নির্বাচনী কমিটি গঠন করা হয়েছে। খোদ রাজ্য সভাপতি নিজে নন্দীগ্রাম বিধানসভার দায়িত্ব নিয়েছেন। পূর্ণেন্দু বসু এবং দোলা সেন মঙ্গলবার থেকে প্রচারের শেষদিন পর্যন্ত টানা নন্দীগ্রামে থাকবেন। ব্লক থেকে বুথস্তর পর্যন্ত নেতাদের সঙ্গে মুখোমুখি বসে ভোটের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে দেবেন। নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকায় মোট চারটি বাড়ি ভাড়ায় নিয়েছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরা নন্দীগ্রামে এসে সেখানে উঠবেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জানুয়ারি তেখালির জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। পরদিন থেকেই দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছিল। গোটা বিধানসভায় এই মুহূর্তে দেওয়াল লিখন, ফ্লেক্স টাঙানো থেকে পতাকা লাগানোর ৮০ শতাংশ কাজ সেরে ফেলেছে তৃণমূল। তবে নন্দীগ্রামে প্রচারের ঝড় তুলতে তৃনমূল ও বিজেপি উভয় দল। নন্দীগ্রামে দুই হেভিওয়েট নেতা নেত্রীর ভোট লড়াই ঘিরে সরগরম নন্দীগ্রামের রাজনীতি।দু দলই ইতিমধ্যে তৈরি করছে রণনীতির ব্লু প্রিন্ট।কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে চাইছে না। তবে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রচার যে একটু অন্যরকম হবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।