Home » বাসেই মৃত্যু পিংলার বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিকের

বাসেই মৃত্যু পিংলার বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিকের

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

পত্রিকা প্রতিনিধি :অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে টাকা জোগাড় করে বাস ভাড়া করেছিলেন ঘরে ফেরার জন্য। কিন্তু ফেরা হল না। মহারাষ্ট্র থেকে বাড়ির পথে বাসেই মৃত্যু হল এক পরিযায়ী শ্রমিকের। সহযাত্রীরা জানান, বাসে ওঠার সময় থেকেই অসুস্থ ছিলেন পিংলার জাহাড়দা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন সুদর্শন মণ্ডল (৫৫)। জ্বর ছিল তাঁর। সঙ্গে সর্দি ও কাশি। বাসে আসার সময় তাঁর পরিস্থিতির অবনতি হয়। মুম্বইয়ের একটি হোটেলে হাউসকিপিং স্টাফ ছিলেন সুদর্শনবাবু। লকডাউন শুরুর পর থেকেই ঘরে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় ট্রেন-বাস সবই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘরে ফিরতে পারেননি। দিন তিনেক আগে মহারাষ্ট্র থেকে ৩৫ জন পরিযায়ী শ্রমিককে নিয়ে পিংলার জলচকের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল একটি বেসরকারি বাস। সেই বাসেই একটি আসন সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন কোনও মতে। মঙ্গলবার সকাল ন’টা নাগাদ বাসটি ওড়িশায় ঢোকে। ভুবনেশ্বরের কাছাকাছি এসে বাসের মধ্যেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সুদর্শনবাবু। কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। ওড়িশা প্রশাসন বাস থেকে মৃতদেহ নামাতে না দেওয়ায় চালক বাধ্য হয়ে বাস নিয়ে এই রাজ্যে চলে আসেন। বুধবার ভোররাতে দাঁতন সীমান্ত দিয়ে বাসটি এসে পৌঁছায় মেদিনীপুরে। জানানো হয় পুলিশকে। তারপরেই পুলিশ রীতিমতো ব্যরিকেড করে শহরের উপকণ্ঠে গ্লোবাল হাসপাতালে দেহ নামায় পুলিশ। বাসের যাত্রী বাকি ৩৪ জন পরিযায়ী শ্রমিককে রওনা করিয়ে দেওয়া হয় পিংলার দিকে। জানা গেছে সুদর্শনবাবুর দেহ থেকে লালারস সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে, তবেই দেহ তুলে দেওয়া হবে তাঁর পরিবারের হাতে। ওই বাসের অন্য যাত্রীদের লালারসও সংগ্রহ করা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। পুলিশ জানিয়েছে, বাসের সব যাত্রীকেই পিংলা আইটিআই এর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে সুদর্শনবাবুর মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছতেই ভেঙে পড়েন তাঁর পরিবার। তাঁর মা-স্ত্রী ও ছেলে রয়েছে পিংলার জাহাড়দা গ্রামের বাড়িতে। মঙ্গলবার রাতেই তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছে যায় বাড়িতে। এখন তাঁকে শেষবার দেখতে পাবেন কি না তাও জানেন না পরিবারের লোক। যদি করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তবেই পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা। এ দিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের গ্রামে ফেরার খবর পাওয়ার পরেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল ডেবরা থানার জালিমন্দা গ্রামে। ভাঙচুর করা হল দুই পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়ি। ব্যাপক মারধর করা হল তাঁদের বাবা ও ভাইকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজনের বাবা মেঘনাথ সামন্ত মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন। দীর্ঘদিন ধরে মহারাষ্ট্রের সোনার কাজ করেন জালিমান্দা গ্রামের দুই যুবক। লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন সেখানে আটকে থাকার পর সরকারের অনুমতি নিয়ে গ্রামে ফেরার উদ্যোগ নেন তাঁরা। সেই খবর গ্রামে আসতেই ওই দু’জনের পরিবারের ওপর চড়াও হয় গ্রামবাসীরা। গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

You may also like

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.