পত্রিকা প্রতিনিধি : পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সম্প্রতি শুরু হয়েছে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও এই টেস্ট করা হচ্ছে, তবে এখনো ব্যাপকহারে নয়। গতকাল মেদিনীপুর মেডিক্যালের একজন প্রাক্তন ল্যাব-কর্মীর এই অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়। দেখা যায়, তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ। এরপর একে একে তাঁর স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধ বাবা-মা’রও এই টেস্ট করা হলে দেখা যায়, প্রত্যেকেই উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত! মেদিনীপুর শহরের পাটনাবাজার সাহেবপুকুরের কাছে ট্যাংরাপুকুরের পাড়ের বাসিন্দা এই পরিবারে ৫ জনের রিপোর্টই এভাবে পজেটিভ আসায় একদিকে যেমন সকলেই বিস্মিত, অপরদিকে তেমনই র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের উদ্দেশ্যও সাফল্যমন্ডিত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এই টেস্টের মাধ্যমে উপসর্গহীন বা স্বল্প-উপসর্গযুক্ত আক্রান্তদের দ্রুত খুঁজে বের করাই উদ্দেশ্য।
এদিকে, মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন এই প্যাথলজিক্যাল কর্মী (বয়স আনুমানিক ৪০) বর্তমানে পুরুলিয়াতে কর্মরত। সম্প্রতি তিনি শহরে ফিরেছিলেন। গতকাল (৫ আগস্ট) তাঁর অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হলে দেখা যায় পজিটিভ। তাঁর স্ত্রী মেদিনীপুর পৌরসভার কর্মী। তাঁর রিপোর্টও পজিটিভ আসে। এরপর একে একে তাঁদের সন্তান ও বাবা-মা সহ ৫ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওই মহিলা কর্মী আক্রান্ত হওয়ার পরই, মেদিনীপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, আজ (৬ আগস্ট) থেকে এই সপ্তাহ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে পৌরসভার কাজকর্ম। খুলবে একেবারে সোমবার। জীবাণুমুক্তও করা হবে বলে জানা গেছে। পৌরসভার এক কর্মী জানিয়েছেন, আজ সকালেই এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এদিকে, এই অ্যান্টিজেন টেস্টের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন, “গতকাল মোদের প্রাক্তন কর্মী নিজের পুরানো কর্মীদের সাথে মেডিক্যাল কলেজে দেখা করতে এসে জানায়, যেহেতু সম্প্রতি বাইরের জেলা থেকে এসেছে এবং শরীরটাও ঈষৎ দুর্বল লাগছে, তাই যদি অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়। সেজন্যই নতুন আসা এই কিটে তাঁর পরীক্ষা করা হয়। দ্রুত জানা গেল তিনি পজিটিভ। এরপরই তাঁর অনুরোধে পরিবারের বাকি সদস্যদের টেস্ট করা হয়, দেখা যায় সকলেই পজেটিভ। তবে, ওই ব্যক্তি ছাড়া কারুরই বিশেষ উপসর্গ নেই। তবুও প্রশাসন ও স্বাস্থ্য ভবনকে এই ঘটনা জানানো তাঁরা উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে, অ্যান্টিজেন টেস্ট নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। টেস্ট করলে অনেকেরই উপসর্গহীন করোনা ধরা পড়তে পারে। সংক্রমণ যে বাড়ছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই, তবে এর ফলে একটি সুফলও সামগ্রিক ভাবে মিলতে চলছে। বেশিরভাগ মানুষের শরীরে স্বাভাবিকভাবেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বোধহয় তা হচ্ছেও, উপসর্গহীন বহু মানুষ হয়তো আক্রান্ত হয়ে, স্বাভাবিক নিয়মে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে, ভ্যাকসিন না এলে সংক্রমণ রোধ করা খুব মুশকিল! আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন আসবে।”