পত্রিকা প্রতিনিধি: জেলা স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী মেদিনীপুর শহরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪। তাঁর মধ্যে বেশিরভাগ আক্রান্তের ফল এসেছে অ্যন্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে। অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে শহরে বৃহস্পতিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ জন।
মেদিনীপুর শহরের হবিবপুরে একসাথে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন স্বামী (৫৬) – স্ত্রী (৪৮)।জানা যায় ওই মহিলা শহরের স্টেশন রোডে কোনো এক জেরক্স দোকানে কাজ করতেন। দোকানের অন্য এক কর্মীর মেয়ে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য বিভাগের নার্স। সেখানে কর্মরত অবস্থায় তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। যেহেতু শহরে ছুটি নিয়ে এসেছিলেন ওই নার্স তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন পরিবারের বাবা, মা , ও দুই মেয়ে সহ জেরক্স দোকানে কর্মরত ওই মহিলাও। জ্বর ও শুকনো কাশি থাকায় ১২ আগস্ট অ্যন্টিজেন পরীক্ষা করা হলে তাঁর স্বামীরও বৃহস্পতিবার রাতে কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। স্বামী -স্ত্রী দুজনেরই করোনার উপসর্গ (জ্বর) রয়েছে বলে জান যায়।
শহরের নতুন বাজার সংলগ্ন জগন্নাথ দেবের মাসি বাড়ী এলাকায় বছর ২৯ এর এক যুবকেরও করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তিনি এক ব্যবসায়ী। পরিবার সূত্রে জানা গত ২-৩ দিন যাবৎ নাকে কোনো কিছুর গন্ধ পাচ্ছিলেন না । তাই বৃহস্পতিবার সকালেই অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হলে রাতে কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। অপরদিকে শহরের মিত্র কম্পাউন্ডে বছর ৭৪ এর এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত রেলের কর্মী। পরিবারে স্ত্রী,ছেলে,বৌ-মা ও নাতিকে নিয়ে থাকতেন বলে জানা যায় পরিবার সূত্রে। তাঁর ছেলেও খড়গপুর রেল বিভাগের কর্মী।জানা যায় ওই ব্যক্তি স্টেশন রোড সংলগ্ন গেট বাজারে বাজের করতে যেতেন।সম্প্রতি ওই বৃদ্ধ মুখের স্বাদ পাচ্ছিলেন না।তাই ১৩ আগস্ট সকালে অ্যন্টিজেন টেস্ট করালে ওই দিনই রাতে করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
শহরের কোতোয়ালীর অধীনে মির্জাবাজার এলাকায় এক মহিলার (৩৮) কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ অাসে বলে জানা যায় স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায় তিনি গৃহবধূ। তবে তাঁর স্বামী রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। গত ২-৩ দিন যাবৎ ওই মহিলার শরীরে জ্বরের দেখা মেলায় লালারসে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
শহরের পুলিশ লাইনেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক মহিলা (৩১) সহ ৪ (৩০,৩১,২৯ ও ৩০)জন পুলিশ কর্মী। জানা যায় ওই মহিলা পুলিশ লাইনের পি.জি দফতরে কাজ করতেন। তিনি সারেঙ্গার বাসিন্দা। পুলিশ আবাসনেই থাকতেন।তবে তাঁর কোনো উপসর্গ নেই বলে জানা যায়। অপরদিকে বাকী আক্রান্ত ৪ পুলিশ কর্মীর মধ্যে একজন বাঁকুড়া ও অন্যজন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা। কয়েকদিন ধরেই গা-হাত-পা ব্যাথা হওয়ায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়। তবে তাঁদের সম্প্রতি পুলিশ লাইনের ভেতরেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে বলে জানা যায় বিশেষ সূত্রে।তবে তাঁরা প্রত্যেকেই উপসর্গহীন।
অন্যদিকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এক হাউস স্টাফেরও (২৬) কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তিনি ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা যায়। কর্মসূত্রে তিনি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলেই থাকতেন। করোনা যুদ্ধের প্রথম সারির যোদ্ধা হওয়ায় বিভিন্ন রোগীর সংস্পর্শে এসেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুমান স্বাস্থ্য দফতরের।মেদিনীপুর শহরের জজকোর্ট সংলগ্ন এলাকায় একই পরিবারের মা (৬৪) ও ছেলের (৪৫) কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানা যায়। মায়ের অ্যন্টিজেন ও ছেলের আর.টি.পি.সি. পরীক্ষায় করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। জানা যায় ওই ব্যক্তি রোগী কল্যাণ সমিতির অন্যতম পদাধিকারী ও সমাজসেবক। এছাড়াও মেদিনীপুর শহরে ৫৬ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তবে তিনি কোন জায়গার বাসিন্দা ও কিভাবে আক্রান্ত হয়েছেন তা জানা যায় নি।