Home » মুখ ফিরিয়েছে প্রশাসন, রাহুল-রিঙ্কিকে কাছে টানলেন রূপমালা

মুখ ফিরিয়েছে প্রশাসন, রাহুল-রিঙ্কিকে কাছে টানলেন রূপমালা

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

পত্রিকা প্রতিনিধি: ঘর নেই তাতে কি,মন তো বড়।পুজোর মধ্যে নতুন উপহার রিঙ্কি ও রাহুলের।হাসপাতালের খারাপ ব্যবহার পেয়ে বেলদা রেল স্টেশনে চলে এসেছিলেন রিঙ্কি গিরি। সেখানেই কোলের চারবছরের সন্তানকে নিয়ে পেতেছিলেন সংসার। কুড়িদিনের মধ্যেই সেখান থেকে তুলে এনে মা ও কোলের সন্তান রাহুলকে নিজের ঘরে ঠাঁই দিলেন দেউলী মধ্য পাড়া এলাকার এক মহিলা। নাম রূপমালা দাস। Belda Bengali news, Belda Bengali news, Belda Bengali news

আরো পড়ুন- বেলদাতে শুভেন্দুর ছবি ছেঁড়ায় শোরগোল


প্রসঙ্গত রাহুলের জন্ম হয় বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে।তখন পিতৃ পরিচয় নেই।হাসপাতালের এক বেডে নার্স ডাক্তার দের কোলে পিঠে মানুষ হয় রাহুল।কিন্তু  বছর তিনেক হাসপাতালে থাকার পর ডাক্তার ও নার্সদের ব্যবহারে ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতাল ছাড়ে রিঙ্কি ও রাহুল।প্রতিশ্রুতি ছিল ঘর করে দেওয়ার কিন্তু  অবশেষে তাও অলীক কল্পনা।হাসপাতাল ছেড়ে ফিরতে হয়েছে তার পূরোনো বাসস্থানে।তবে দিন কুড়ির মধ্যে সেই জায়গা বদল হল রিঙ্কির।রূপমালা তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রেখে মা-ছেলে দুজনকে।জানা গিয়েছে রূপমালার একটি সাত বছরের কন্যা সন্তান আছে। এখন ভবঘুরে রাহুলকে পেয়ে ভাইয়ের সঙ্গে বেশ মজা করছে ছোট সানায়া। একসঙ্গে থাকা, খাওয়া এবং খেলা সবই চলছে রূপমালার বাড়িতে।  রূপমালা ও গুরুপদ দাসের ভাঙা ছোট মাটির বাড়ি। নীড় ছোট হলেও মনটা বড় দুজনের। তাই অসহায় মা, ছেলেকে গত রবিবার নবমীর দিন স্থান দিয়েছেন বাড়িতেই।  রূপমালা জানান,” রিঙ্কি আমার দিদির মতো। এলাকাতেই বাড়ি। এখন ঘরছাড়া। আমার দিদির বন্ধু ছিলেন। স্টেশনে তার এই অবস্থা দেখে খারাপ লাগল। তাই দুজনকেই বাড়িতে এনে রাখার সিদ্ধান্ত নিই। ছেলেটির দায়িত্ব আমাদের। সবার মোটামুটি চলে যাবে।” গুরুপদের মা-সহ তিনজনের সংসারে এখন পাঁচজন সদস্য। গুরুপদ বেলদা দাঁতনগামী বাসস্ট্যান্ডে স্ট্যাণ্ড ম্যানেজারের কাজ করতেন। লকডাউনে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় সে কাজ বন্ধ হয়েছে। মাছ ফেরি করা ছাড়াও আনলোডিং এর কাজ করেন। রূপমালার আছে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। তাতেই কোনমতে চলে সংসার। উপার্জন কম তবু  বড় মন আছে দুজনের। কোলের সন্তানকে নিয়ে অসহায় রিঙ্কি জানান,” হাসপাতাল থেকে চলে আসার পর চারবছরের সন্তানকে নিয়ে স্টেশনে পড়ে থাকতাম। ভিক্ষে করে খেতাম। বোন তার বাড়িতে ডেকে এনেছে। এখানেই থাকব। ছেলেটির ভালো হবে।” হাসপাতালে আর ফিরবেন না ? তার সাফ জবাব,” না।”এদিকে খুশি রূপমালা ও গুরুপদ।ছোট বাড়িতে কোনকরে মানিয়ে নেবে তারা।এমনই জানিয়েছে।

Belda, Bengali news,
মুখ ফিরিয়েছে প্রশাসন, রাহুল-রিঙ্কিকে কাছে রূপমালা


তখন ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি বেলদা স্টেশন চত্বর থেকে রিঙ্কিকে এক আশাকর্মী বেলদা হাসপাতালে ভর্তি করেন। গর্ভবতী রিঙ্কি ওই দিন পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। খাবার ও পোশাক সবই জুটত। ঘটা করে করা হয় রাহুলের মুখেভাতের অনুষ্ঠানও। ভবঘুরে রিঙ্কি প্রশাসনের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পায় মাথার ওপর ছাদের। যদিও আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে করোনা থাবা বসালে রিঙ্কিকে অন্য কক্ষে চলে যেতে বলা হয়। রিঙ্কির অভিযোগ তাকে হাসপাতাল থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল। গত প্রায় একমাস ধরে বেলদা স্টেশনেই পড়ে ছিলেন রিঙ্কি ও রাহুল। গুরুপদ বলেন,” স্টেশনে থাকবে বছর তিনের ছোট ছেলেটি।দেখতে খারাপ লাগে।তাই এনেছি। যাইহোক করে সবার চলে যাবে। কষ্ট হবে না। ছেলেটিকে আমরা দেখব।” নিজের মেয়ের সঙ্গে রাহুলকেও বড় করতে চান রূপমালা।নিজের ছেলের মতো সানায়ার ভাইকে মানুষের মতো মানুষ করতে চায় গুরুপদ-রূপমালা। খাওয়া, পোশাক ও পড়াশোনার ভার এখন থেকে দুইজনের। প্রতিশ্রুতি পেয়েছে,কিন্তু  বাস্তব রূপ পায়নি। তবে সামান্য উপার্জন, ভাঙা ঘরেও যে সহৃদয় মন বেঁচে আছে সেখানে যে কোনও প্রতিশ্রুতি নেই তার দৃষ্টান্ত দেখালেন রূপমালা।

লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi

You may also like

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.