বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : প্রাকৃতিক উপায়ে ময়ূরের সংখ্যা ঠিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল না জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে। তিনটি ময়ূর থেকে দশটি হতে সময় লেগে গেছে প্রায় ১১ বছর। কৃত্রিম উপায়ে ময়ূরের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে প্রথম সফলতা পেল জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক। যা বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছেন বনদপ্তর। ময়ূরের বাচ্চার খাবারের যোগান দিতেও ঘুম উড়েছে পার্ক কর্তৃপক্ষের। জানা গিয়েছে, ময়ূরের বাচ্চা ঘাসফড়িং খেতে খুবই ভালোবাসে। ঘাসফড়িং ধরে আনার জন্য চিড়িয়াখানার এক কর্মীকে নিযুক্ত করা হয়েছে। সকাল ,বিকাল পার্কের মধ্যে ঘাসফড়িং ধরে এনে খেতে দেওয়া হচ্ছে ময়ূরের বাচ্চাদের।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :
For WhatsApp Group : Click Here

আরও পড়ুন : ক্লাসরুমে ঢুকে শিক্ষককে আঁচড় হনুমানের, ভর্তি হাসপাতালে
বছরে কেবলমাত্র একবারই ময়ূর ডিম পাড়ে। মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। এক একটা ময়ূর গড়ে ৮ থেকে ১০টি ডিম দিয়ে থাকে। চিড়িয়াখানার ইনক্লোজারে ময়ূর ডিম দিলেও বেশিরভাগ সময় ডিম নষ্ট করে ফেলে। বেঁচে থাকা বাকি ডিমে বাচ্চা ফোটাতেও ব্যর্থ হয় ময়ূর। হলে ময়ূরের সংখ্যা খুব একটা বৃদ্ধি পাচ্ছিল না চিড়িয়াখানার মধ্যে। ময়ূরের সংখ্যা বৃদ্ধি করাতে বহুবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ইনকিউবেটর (কৃত্রিম উপায়ে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর যন্ত্র) সাহায্যে ময়ূরের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর চেষ্টাও করা হয়।

আরও পড়ুন : উধাও ৭৫ হাজার হেক্টর শালজঙ্গল
ইনকিউবেটরের ডিম রাখার ঘর গুলি ছোট থাকার কারণে ময়ূরের ডিম ঠিকভাবে বসানো সম্ভব না হওয়ায় ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোতে ব্যর্থ হয় পার্ক কর্তৃপক্ষ। তারপর নিজেদের উদ্যোগেই থার্মোকলের একটি বড় পেটিতে বৈদ্যুতিক বাল্ব বসিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ইনকিউবেটর বানিয়ে ফেলেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। নিজেদের বানানো ইনকিউবেটরে একের পর এক সফলতার মুখ দেখতে পাই তারা। কয়েক মাস আগেই ইনকিউবেটরের সাহায্যে দক্ষিণ-পূর্ব চীনের পাহাড়ি এলাকার রূপালী তিথির পাখির ডিম থেকে দশটি বাচ্চা ফোটানো হয়।

আরও পড়ুন : ৫৫০ বাদুড় মেরে বনদপ্তরের জালে খড়্গপুরের চারজন
জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের আগে চিড়িয়াখানার ইনক্লোজারে তিনটি ময়ূর ছিল। যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ন’টি ময়ুর। তারমধ্যে চারটি পুরুষ ময়ূর এবং পাঁচটি স্ত্রী ময়ূর রয়েছে। ময়ূরের ডিম পাড়ার সময় প্রতিদিন সকালে ময়ূরের ইনক্লোজার থেকে ডিমগুলি সংগ্রহ করা হয়। ডিমের উপরে তারিখ লিখে রেখে দেওয়া হয় ইনকিউবেটরের মধ্যে। এইভাবে ইনকিউবেটরের মধ্যে ২৫ টি ডিম রাখা হয়েছিল। ২৮ থেকে ৩০ দিন থাকার পর এক একটা ডিম ফুটে বাচ্চা বাইরে আসতে শুরু করে। জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে চারটি, বৃহস্পতিবার চারটি এবং শুক্রবার সকালে দুটি ডিম ফুটে ময়ূরের বাচ্চা হয়। আরও ১৫টি ডিম ইনকিউবেটরের মধ্যে রয়েছে যেগুলি থেকেও ময়ূরের বাচ্চা পাবে বলে আশাবাদী পার্ক কর্তৃপক্ষ। প্রথম দিন থেকে দশ দিন পর্যন্ত ময়ূরের বাচ্চাগুলোকে আলাদাভাবে রেখে ইমিউনিটি বুস্টার দেওয়া হয়। ময়ূরের বাচ্চাকে ঘাসফড়িং, অঙ্কুর ছোলা, গোটা মুগ, গাজর ও কুমড়োর টুকরো খাওয়ানো হচ্ছে। দশ দিন পেরিয়ে গেলে প্রতিটি বাচ্চাকেই পূর্ণবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত করেন্টিনে রাখা হবে বলেও জানা গিয়েছে। পূর্ণবয়স্ক হলেই মেন ইনক্লোজারে ছেড়ে দেওয়া হবে।

ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের ডিএফও উমার ইমাম বলেন,’শাল জঙ্গলে ঘেরা পার্কের মধ্যে বন্য পশু, পাখি থেকে শুরু করে জীবজন্তুদের স্বাভাবিক ইনব্রিডিং হচ্ছে। এই প্রথম আমরা ইনকিউবেটরের সাহায্যে ময়ূরের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে সক্ষম হয়েছি। আগামী দিনে আরও পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে চলেছে চিড়িয়াখানায়’।২২.৪৮ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক। ১৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী ,১৭ প্রজাতির পাখি এবং ৯টি প্রজাতির সরীসৃপ রয়েছে এই চিড়িয়াখানায়। সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। দিনের পর দিন বন্য পশু, পাখিদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সফল হচ্ছে পার কর্তৃপক্ষ।
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Artificial Hatching
Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspape