Home » প্রতিদিন সংসারে ৩০ টাকা না দিলে বৃদ্ধ বাবাকে কাটাতে হবে উপোস করে, সমন জারি ছেলের

প্রতিদিন সংসারে ৩০ টাকা না দিলে বৃদ্ধ বাবাকে কাটাতে হবে উপোস করে, সমন জারি ছেলের

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

পত্রিকা প্রতিনিধি: ছেলের সংসারে টাকা না দিতে পারলে মিলবে না খাবার। প্রতিদিন ৩০ টাকা না দিতে পারলে সেদিন বৃদ্ধ বাবাকে খাবার দেবে না ছেলে। দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় বৃদ্ধ বাবা আজ কর্মহীন হয় উপোস করে দিন কাটাচ্ছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের এক বৃদ্ধ বাবার গল্প সমাজের সামনে উঠে এল।
তিন সন্তান- সন্ততি নিয়ে সংসার চালাতেন স্ত্রী হার‍া স্বামীর। একটি ছেলে, আর দুই মেয়ে। দাম্পত্য র পূর্নতা র খুশি চোখে মুখে।জীবনের সমস্ত স্বাদ আল্লাদ কে বিসর্জন দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় হকারি করে ছেলে মেয়েদের মানুষ করল। জীবনের চক্রব্যূহে মেয়েরা পাড়ি দিয়েছে স্বামীর বাড়ি, ছেলেও ব্যস্ত নিজের সংসার নিয়ে।বৃদ্ধ ভেবেছিল ছেলের কাছে নাতি নাতনি দের নিয়ে বাকী জীবনটা আনন্দে কাটিয়ে দেবে।কিন্তু ছেলে তো বৃদ্ধ পিতাকে আরো বড় উপহার দিল, ছেলে বিধান দিল তার কাছে থাকতে খেতে গেলে রোজ দিতে হবে তিরিশ টাকা! সেটাও এক বেলার জন্য। বৃদ্ধর কথায় – পরে তিরিশ টাকা থেকে সেটা বেড়ে চল্লিশ টাকা হয়,কারন জিনিস পত্রের দাম যে বেড়েছে।
দিশেহারা বৃদ্ধ মাথায় আইসক্রিম এর বাক্স আর হাতে চকলেট এর ব্যাগ নিয়ে বিভিন্ন স্কুলের সামনে রাস্তার মোড়ে হাঁক পাড়ত – আাইসক্রিম নাও, চকলেট নাও।দুপুরের খাবার বলতে কোনো কোনো স্কুলের কিছু শিক্ষক শিক্ষীকাদের দেওয়া মিড ডে মিলের রান্না।কিংবা রাস্তার পাশে কেনো অনুষ্ঠান বাড়ির খাবার। রোদ বৃষ্টি ও তখন ওর কাছে ফিকে! তাকে যে রোজগার করতেই হবে। নাহলে যে ছেলের কাছে রাতের খাবার জুটবেনা।
করোনা আর আমফানের প্রভাবে রাস্তা ঘাট জন মানব শূন্য।স্কুল, কলেজে তালা। আইসক্রিম নাও চকলেট নাও ঐ ডাক ও বন্ধ।লকডাউন কেড়ে নিল বাঁচার শেষ রসদটাও!
না ঐ বৃদ্ধ আর পারেনি ছেলের হাতে তিরিশ টাকা তুলে দিতে!খাবার বন্ধের সাথে বাড়ির দরজাটাও বন্ধ হয়ে যায়!তাই মূমুর্ষ বৃদ্ধ মাথা গোঁজার জায়গা করে নিয়েছে মহিষাদল রাজ বাড়ির ভাঙা দালানে।রাস্তার লোকজন কিছু খাবার কিনে দেয় তা দিয়ে কোনেরকম চলে যায়।কোনো সহৃদয় ব্যক্তির দেওয়া ছেঁড়া পাথনিতে কোনোরকমে পড়ে আছে।এই ভাবেই কেটে গেছে প্রায় দুমাস।না ছেলে কোনো খোঁজ নেয়নি। পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম এটার মানেও হয়ত জানেনো।
বৃদ্ধ মানুষটির চোখের জল যেন জানান দিয়ে যায়,-ছেলে তো ডাস্টবিনে কবেই ছুঁড়ে দিয়েছে।আর লকডাউন তার বাঁচার শেষ দরজাটাতেও তালা মেরে দিয়েছে।
৮ই জুন লকডাউন কিছুটা লঘু হলেও স্কুল কলেজ বন্ধ!থমকে যাওয়া জীবনে র প্রদীপ আবার জ্বলার অপেক্ষায় দিন গুনছে বৃদ্ধ।

You may also like

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.