৩৩ তম বর্ষ, ১৭ সংখ্যা ২০ আগষ্ট ২০২০, ৩ ভাদ্র ১৪২৭
এবার স্বাধীন্তা দিবস উদযাপনের অন্যতম অঙ্গ ছিল করোনা যোদ্ধাদের সংবর্ধনা জ্ঞাপণ। রাজ্য সরকারি তথা মুখ্যমন্ত্রীর এহেন চিন্তা নিঃসন্দেহে যথোচিত বোধের প্রতিফলন। এবারে দেশের ৭৪তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হল এক ভয়ঙ্কর অতিমারির আবহে। যে অতিমারি কোভিড-১৯ শুধু আমাদের ভরতবর্ষেই নয়, গোটা বিশ্বের জনজীবন জীবন্ধারা, মূল্যবোধ, কর্মধারায় আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছে। বহুমানূষের মৃত্যুর মিছিল মানস সমাজকে আতঙ্কে সিঁটিয়ে দিয়েছে রীতিমতো। এমন একটি কঠিন সময়েও যাঁরা করোনাকে পরাস্ত করতে সামনে থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই সব চিকিৎসক সমাজ, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসনিক আধিকারিক, পুলিশ কর্মীদের সংবর্ধিত করার থেকে এখন বড় কিছু কাজ হতে পারে না। সেদিক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন পদক্ষেপ সাধুবাদযোগ্য অবশ্যই। ১৫ আগষ্ট তিনি তাই রাজ্যের মূল অনুষথানে ২৫ জন কোভিড যোদ্ধাকে সংবর্ধিত করেন। সরকারের নির্দেশমতো রাজ্যের প্রতিটি জেলায় করোনা যদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। একই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে দুই মেদিনীপুর ও ঝারগ্রাম জেলাতেও । কোনও সন্দেহ নেই, এই করোনা কালেও যেভাবে চিকিৎসক থেকে নার্স, সর্বস্তরের স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ কর্মীরা বুক চিতিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তাতে তাঁদের সকলের কুর্নিশ-ই প্রাপ্য। প্রশাসনের দেওয়া এই স্বীকৃতি তাঁদের মনোবল বৃদ্ধি করবে, উৎসাহিত করে তুলবে। তাঁরা পেশাগত দায়বদ্ধতায় মহামারির আতঙ্ক দূরে সরিয়ে যে সেবা দিয়ে চলেছেন তাতে তাঁদের প্রতি সমাজেরও দায়িত্ব সম্মান জ্ঞাপন করা। এই মারণ ভাইরাসের মোকাবিলা করতে গিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, পুলিশ কর্মীর প্রাণ গিয়েছে, অনেকে আবার করোনা যুদ্ধে জয়ী হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। দুঃখের বিষয়, এঁদের প্রতিই আমরা কোনও কোনও জায়গায় সহমর্মী না হয়ে অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছি। করোনা অস্পৃশ্যতার অজুহাতে নির্মম ঘৃণা প্রকাশ করেছি। যা কখনই কাম্য নয়। মনে রাখা দরিকার এই ভয়াবহ অতিমারির মোকাবিলায় এঁরাই আমাদের প্রধান ভরসা। তাই আসুন, এদের সকলের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে উঠি আমরা, তাঁদের পাশে দাঁড়াই এবং আসুন, সবাই আমরা করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। সকলে মিলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরস্পর সহযোগী হয়ে উঠি।