বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : পরিকল্পিতভাবে সেন্দরাতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে বনদপ্তর। সেই অভিযোগ তুলে রবিবার রেঞ্জ অফিস ঘেরাও করলো তাড়া বির সেন্দরা কমিটি ও ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল মেদিনীপুর সদর তল্লাট। গত ২৩ এপ্রিল চন্দ্রকোণা রোডের কেন্দ্রাইশোলের জঙ্গলে শিকার উৎসব ছিল। ঐদিন রাতে টহল দিতে গিয়েছিলেন বনদপ্তরের কর্মী এবং স্থানীয় কয়েকজন। তাদের মারধর এবং আটক করে রাখার অভিযোগ উঠেছিল এলাকার বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। যদিও মারধরের ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন তারা। ওই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। আদিবাসী সমাজের দাবি, শিকার নয়, সেন্দরায় ধর্মীয় আচার পালনে বনদপ্তর এবং কিছু এনজিও প্রতিনিধি তাতে ব্যাঘাত ঘটায়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে সাপ ও পেট্রোল নিয়ে সেখানে হাজির হয়েছিল। ওই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রেঞ্জ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসী সমাজের মানুষজন। দুপুর একটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ঘেরাও বিক্ষোভ চলে।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :
For WhatsApp Group : Click Here

বনদপ্তরের দাবি ছিল, ওই এলাকায় শিকার উৎসব ছিল। তার আগে জঙ্গলে টহল দিতে গিয়েছিল বনকর্মীরা। সেই সময় তাদের ঘিরে ধরে আটক করে রাখা হয়। আটক করে রাখার কথা স্বীকার করে মনোরঞ্জন মুর্মু বলেন, “আমাদের ধর্মীয় আচারে ব্যাঘাত ঘটাতে বনদপ্তর ষড়যন্ত্র করেছিল। বেশ কিছু এনজিও এবং বনদপ্তরের লোকজন সাপ এবং পেট্রোল নিয়ে রাতের অন্ধকারে জঙ্গলে প্রবেশ করে, যাতে আমরা ধর্মীয় আচার পালন না করতে পারি। দেখতে পেয়ে তাদের আটক করে রাখে। পরের দিন তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। জানানো হয়েছিল রেঞ্জার স্যার যেন একটি মিটিং আয়োজন করেন। সেই মিটিংয়ে আমাদেরকে অপমান করা হয়। ওইদিনই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম রেঞ্জ অফিস ঘেরাও বিক্ষোভের। আমরা যে স্থানে আচার উৎসব পালন করি, সেই জায়গাটির সংরক্ষণ করা সহ একাধিক দাবি জানিয়েছি। রেঞ্জ আধিকারিক ওনার ভুল বুঝতে পেরেছেন। উনি যদি ২৪ তারিখ বুঝতে পারতেন, তাহলে আজকে এই ধরনের বিক্ষোভ হতো না।”

আরও পড়ুন : “মার্কিনী টাকায় উগ্রবাদী তৈরি হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়াকে বিপদে ফেলার জন্য” : সেলিম
তবে শিকার শব্দটি নিয়ে আপত্তি আদিবাসী সমাজের মানুষজনের। তাদের দাবি, শিকার নয়, সেন্দরা ছিল। যা একটি ধর্মীয় আচার পালন। সেন্দরা মানে পশু হত্যা নয়। ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের পক্ষে শিবুলার মুর্মু বলেন, “এটি আদিবাসী সমাজের আত্মিক, সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক অনুসন্ধানের একটি পবিত্র ধর্মীয় আচার। বনদপ্তর শুধুমাত্র অপমানজনক নয়, আদিবাসী সংস্কৃতি ও ধর্মীয় অনুভূতির উপর এক নির্মম আঘাত করেছে।” রেঞ্জ অফিসে উপস্থিত হয়েছিলেন গড়বেতা-৩ বিডিও, গড়বেতা থানার ওসি, চন্দ্রকোনা ফাঁড়ির আইসি সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। তাদের কাছে লিখিত আকারে দাবিপত্র জমা দেয়।
আরও পড়ুন : ডেবরায় পথ দূর্ঘটনায় মৃত ২, আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেদিনীপুর হাসপাতালে ভর্তি কিশোরী
সেন্দরা স্থানটির উন্নয়নে হাইমাস্ট লাইট, সাবমার্সিবল, কমিউনিটি হল, সাংস্কৃতিক মঞ্চ করার দাবি রাখা হয়েছে। শিবুলাল বলেন, হাইমাস্ট লাইট, সাবমার্সিবল দ্রুত করে দেওয়া হবে এবং বাকি গুলো সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন।” এই বিক্ষোভ ভারত জাকাত মাঝি পারগাণা মহলের নয় বলে দাবি করে পরেশ সরেন। তিনি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “তারা বির সেন্দরা নিয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা তীব্র নিন্দনীয়। কিন্তু এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে, আদিবাসী মানুষের সেন্টিমেন্ট তৈরি করে ব্যক্তি স্বার্থে কিছু মানুষ ভারত জাকাত মাঝি পারগাণা মহলের নাম করে চন্দ্রকোনা রোড রেঞ্জার অফিস ঘেরাও এর ডাক দিয়েছে।”
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Sendra Protest
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper