পত্রিকা প্রতিনিধি:বিপদের আঁচ করেছিল রাজ্য সরকার।আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে।পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতেই একে একে করোনা পজিটিভ হচ্ছেন তাঁরা।এই মূহূর্তে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা চার লক্ষ ছাড়িয়েছে।সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র,গুজরাত-সহ পশ্চিমবঙ্গও।এই পরিস্থিতিতে আরও এক দফা লকডাউন বাড়তে চলেছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে।রাজ্যে গত দুদিন ধরে পরিযায়ী শ্রমিকরা আসতে শুরু করে দিয়েছেন ট্রেনে করে। আর সেই সঙ্গে আশঙ্কা ছড়িয়েছে, হয়তো-বা সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়বে রাজ্যে।
এমতাবস্থায়, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি১ ব্লকের রায়পুর পশ্চিম পঞ্চায়েতের তেঁতুলামুড়িতে বুধবার পাওয়া গেলো ১জন করোনা পজিটিভ রোগীর খোঁজ।
জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে কাঁথিতে একাধিক ব্যক্তির করোনা পজিটিভ রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিলো।এরপর আবারও করোনা সংক্রমিতের খোঁজ মেলায় স্থানীয়রা যথেষ্ট চিন্তিত।হাসপাতাল সূত্রে খবর,ওই পরিযায়ী শ্রমিক কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকতেন।কিন্তু লকডাউনের কারনে তিনি চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নিজের বাড়ি ফিরে আসেন।এরপর সরকারি নির্দেশিকা মেন তিনি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ছিলেন।এরপর কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের কর্মীরা বেশ কয়েকদিন আগে তার লালারস সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠায়।এরপর বুধবার তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।এরপর তাকে আজ, পাঁশকুড়া বড়োমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ল লকডাউন।রাজ্যে গত দুদিন ধরে পরিযায়ী শ্রমিকরা আসতে শুরু করে দিয়েছেন ট্রেনে করে। আর সেই সঙ্গে আশঙ্কা ছড়িয়েছে, হয়তো-বা সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়বে রাজ্যে। সেই মতো, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সুতাহাটায় একটি শিশু সহ ৪জন পরিযায়ীর করোনা ধরা পড়ল। এদের মধ্য দুজন মহিলা ও একজন ৬৪বছরের ব্যক্তি রয়েছেন। বয়স্ক ব্যক্তি ও তাঁর ৪৫ বছর বয়স্ক স্ত্রী মলদা থেকে এসেছিলেন। এদের বাড়ি কৃষ্ণনগরে। শিশু ও তার ৪০বছর বয়স্ক বাবা মহারাষ্ট্র থেকে এসেছিল। এদের বাড়ি গুয়াবেড়িয়া এলাকায়। স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে ছিলেন সবাই। গত শনিবার সুতাহাটার আমলাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১২০জন পরিযায়ীর লালারস নেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে চার জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে বলে জানান বিএমওএইচ লক্ষ্মীকান্ত প্রামাণিক। এদের পাঁশকুড়া বড়মা করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল হলদিয়া পুরসভা এলাকার একজনের করোনা ধরা পড়ে। ২৪ঘণ্টার মধ্যে ৫জনের হলদিয়ায় করোনা ধরা পড়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু হলদিয়া শিল্পাঞ্চল ও গ্রামীণ এলাকার বহু মানুষই মাস্ক ছাড়া বাজার এলাকায় ভিড় করছেন বলে অভিযোগ। প্রশাসনের কোনও কড়াকড়িও নেই।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি পুরসভার এলাকায় ফের দুজনের করোনা ভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেল বুধবার। এদের মধ্যে একজন মহিলা ও একজন পুরুষ।স্বাভাবিক ভাবে শহরের দুই বাসিন্দার করোনাতে আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত ১৭ জুন কাঁথি পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ডের মহিলা ও ১২ নং ওয়ার্ডের পুরুষ বাসিন্দা দুই জনে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।আরো জানা গেছে মহিলা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।তবে অসুস্থ্য হওয়ার কয়েকদিন আগে তমলুক বা হলদিয়া গিয়েছিলেন কোন প্রয়োজনে।আর ১২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক।কিছুদিন আগে বাড়ি ফিরেছিলেন।
এরপর হাসপাতালে ভর্তির দুদিন পর সুস্থ হয়ে যাওয়ায় দুই জন কাঁথি হাসপাতাল থেকে বাড়ি চলে যান ।তবে এদের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় । হাসপাতাল থেকে এদ্রর নির্দেশ দিয়ে বলা হয় আগামী ১৪ দিন বাড়ির বাইরে না বেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে রিপোর্ট এলে জানা যায় দুজন আক্রান্ত । ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর কাঁথির অন্যান্য প্রান্তের সাথে সাথে হাসপাতাল চত্বরে ও কর্মী মহলে ছড়িয়েছে আতঙ্ক।
হাসপাতাল সূত্রে খবর,এই দুই জন কয়েক দিন আগে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎস্যার জন্যে ভর্তি ছিলেন।তাই বুধবার হাসপাতাল স্যানিটাইজ করা হলো।পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।
অন্যদিকে৬ জন করোনা রুগী বড়মা করোনা হাসপাতাল থেকে বুধবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন।কয়েক দিন আগে ৫৫ জন করোনা রোগীকে সুস্থ করে নজির গড়ে এই হাসপাতাল।আজ আরো 6 জন সুস্থতার খবরে ফের হাসি ফুটেছে হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মুখে।জানা গিয়েছে,এই ৬ জনের মধ্যে তমলুক ১,ভগবানপুর ২,পটাশপুর-১,পাঁশকুড়া -১,মহিষাদল-১।আজ এই ৬ জন করোনা রুগীর সুস্থতার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান হাসপাতালের অবজারভার আবজল আলী শা।তিনি পরিদর্শন করেন গোটা হাসপাতাল চত্তর।রুগীদের সাথে কথা বলেন।তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা জানতে চান।এবং ওই ৬ জন সুস্থ করোনা রুগীদের ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান।তাঁর এই মহতী কাজে রুগীরা ও হাসপাতালের স্টাফরা অত্যন্ত খুশী হন।হাসপাতালের সুপারভাইজার কিশোর মাদুলী জানান- “করোনা হাসপাতালে থেকে রুগীদের সাথে মিলেমিশে খুব ভালো লাগছে।আনন্দিত হয়েছি আস্তে আস্তে আমাদের বড়মা হাসপাতাল থেকে সব রুগীই সুস্থ হয়ে উঠছেন।এবং আমাদের এম. ডি আবজল বাবুর এইভাবে রুগীদের সংবর্ধনা দেখে খুব ভালো লেগেছে।”