পত্রিকা প্রতিনিধি: পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের তেখালিতে জনসভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সভা শুরুর আগেই ২০০৭ সালে জমি আন্দলন করতে গিয়ে নিখোঁজদের পরিবারের হাতে চার লক্ষ টাকার চেক প্রদান করেন তিনি।
তিনি বলেন ,নন্দীগ্রাম আন্দোলন তৈরি হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে। আমি তখন রাস্তায় বসে অনশন করছি। অনেকে বড় বড় কথা বলে কিন্তু আন্দোলন তৈরি হয় সিঙ্গুর থেকে। আমার আন্দোলনের ফলে কেন্দ্রীয় সরকার বাধ্য হয়েছিল বলতে, কৃষিজমি জোর করে দখল করা যাবে না, আমি আইনটাকে বদলে দিয়েছিলাম।তাছাড়া নানাভাবে আটকানোর চেষ্টা চলেছিল, সব বাধা পেরিয়ে নন্দীগ্রাম পার হই। তখন কাউকে দেখতে পাইনি। আন্দোলন করেন আবু সুফিয়ান, আবু তাহের, এখানকার মা বোনেরা। নাম না করে শিশির–শুভেন্দুকে খোঁচা মমতার।আমি কারও কাছে জ্ঞান নেব না, নন্দীগ্রাম আন্দোলন কে করেছে আর কারা করেছে। সূর্যোদয়ের পর সিপিএম এখানে মিডিয়াকেও ঢুকতে দেয়নি। আমি বসে বসে পাহারা দিতাম।তিনি আরও বলেন , নন্দীগ্রামে কোথায় হেলেঞ্চার বড়া পাওয়া যায় জানি। আবু সুফিয়ান, আবু তাহেরের বাড়ি চিনি। আমিই লিখেছি, নন্দী মা। নন্দীগ্রাম নিয়ে আমার বই আছে, কবিতা আছে। নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়া যোগাযোগের জন্য রাস্তা-ব্রিজ করে দেব।তাছাড়া কৃষি আইন প্রত্যাহার না করলে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের মতো করে দেখাব’।তাছাড়া ইতিমধ্যে কেউ কেউ একটু ইধার উধার করছে। আগে তো সুপ্রকাশ গিরিকে লড়, তারপর তৃণমূল কংগ্রেসকে লড়বে। কেউ কেউ যেতেই পার, স্বাধীনতা। রাজনীতিতে তিন ধরনের লোক হয়, একদল লোভী, একদল ভোগী, আর একদল ত্যাগী। যারা ত্যাগ করতে জানে তারা কোথাও যাবে না। আর একদলের প্রচুর সম্পত্তি, প্রচুর টাকা। সেই টাকা রক্ষা করতে তারা দল ছাড়ছে। বিজেপি নেতারা বলছে, হয় জেলে নয় ঘরে। তৃণমূল করলে জেলে ভরব, বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। কালো হয়ে ঢুকবে, সাদা হয়ে বেরিয়ে আসবে।আমি সব জানি ভেতরকার গেম প্ল্যান। আসল সমীক্ষায় আছে তৃণমূল ২০০-র বেশি আসন পাবে। বিজেপি পাবে মাত্র ৫১টা। সব ভিডিও বিশ্বাস করবেন না। ফেক মানে ভেক। ভেকধারীরা নাটক তৈরি করে তা ছেড়়ে দিচ্ছে, মানুষ বিশ্বাস করছে। বিজেপি হাজার হাজার কোটি টাকার মানুষ, মিথ্যে কুৎসা রটায়।
আমি নন্দীগ্রামকে ভালো বাসি। সব সময় মনে রাখবো। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামকে কেউ ভুলতে পারি না। আমি বার বার আসব। নন্দীগ্রাম আনার জন্য লাকি জায়গা। ২০১৬ সালে আমি নন্দীগ্রাম থেকেই প্রচার শুরিু করেছিলাম। ২০২১ সালেও এখান থেকেই প্রচার শুরু করলাম। সব আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা জিতবেন।’‘আমি যদি এখান থেকে প্রার্থী হই কেমন লাগবে? ভাবছিলাম, এবার বলেই ফেললাম। আমি ঘোষণা করছি এবার নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হব আমিই। আমি ভোটের সময় বেশি সময় দিতে পারব না। আপনারা কাজটা করে দেবেন।বক্সিকে বলব নন্দীগ্রামে যেন আমার নামটা থাকে। তারপর আমি দেখবো। এইরকম দল দেখেছেন যে ভালোবাসার টানে আমি ছেড়ে যেতে পারলাম না।‘আমি ভবানীপুরকেও ভালোবাসি। ওখানেও আমি ভালো প্রার্থী দেব। পারলে দু’জায়গাতেও দাঁড়াবো। কিন্তু, জানবেন নন্দীগ্রামে দাঁড়াচ্ছিই।’
উল্লেখ্য,২০১৫ সালে শেষবারের জন্য নন্দীগ্রামে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে আর নন্দীগ্রামে যাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় সবটাই সামলে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু গতবছরের অক্টোবর ও নভেম্বর এলাকায় একাধিক সভা করার পর ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। ফলে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে এটা নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম সভা।আর প্রথমবারের জন্য এদিন নন্দীগ্রামের সভায় নেই অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্য।