পত্রিকা প্রতিনিধিঃ মোদীর সফরের আগে জল্পনা বাড়িয়ে কাঁথির শান্তিকুঞ্জে হাজির হয়ে তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। শনিবার কাঁথিতে দলীয় কর্মসূচি শেষ করে তিনি অধিকারী পরিবারের নিবাস শান্তিকুঞ্জে পৌঁছন। সেখানে শিশির-লকেটের সাক্ষাতের সময় হাজির ছিলেন দিব্যেন্দু ও সৌমেন্দু অধিকারীও। এরপর তাঁর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন বিজেপি সাংসদ। শিশির অধিকারী নিজে সামনে বসিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে খাওয়ান। এদিন মাছ ভাতের সঙ্গে এলাহি পদের আয়োজন করা হয়েছিল। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর মায়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পর তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন আরেক ভাই সৌমেন্দু অধিকারীও। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে বিধানসভা ভোটের আগেই শান্তিকুঞ্জে জোড়াফুলের অস্তিত্ব ছেঁটে ফুটবে আরও পদ্ম। তবে শিশিরবাবু ও তাঁর আরেক সাংসদ ছেলে দিব্যেন্দুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। এরমধ্যে শিশিরবাবু ও দিব্যেন্দুবাবুকে একে একে বিভিন্ন পদ থেকে সরিয়ে দিতে শুরু করে রাজ্য সরকার। উলটো দিকে শান্তিকুঞ্জ আনাগোনা বাড়ে বিজেপি নেতাদের। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীকে বিজেপি নন্দীগ্রাম থেকে দলের প্রার্থী ঘোষণার পর সরাসরি দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন শিশিরবাবু। তিনি বলেন, ছেলে বললে তাঁর হয়ে ভোটপ্রচারে নামবেন তিনি।
তবে এদিন শিশিরবাবুর সঙ্গে সাক্ষাতের আগে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘শিশিরবাবু জেলার সব থেকে প্রবীণ নেতা। তাঁর আশীর্বাদ আমাদের চাই। মেদিনীপুর মানেই অধিকারী পরিবার। আর শুভেন্দুদা এখানকার ভূমিপুত্র।’ তবে শিশিরবাবু কি বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন? তেমন সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন লকেট।
তবে তাতেও থামছে না জল্পনা। তবে ছেলের পাশে থাকবেন বলেছেন বাবা, শিশিরবাবুর মতো মানুষের খুব দরকার, ভূমিপুত্রই জিতবে, মেদিনীপুর মানেই অধিকারী পরিবার, এখানে আসব আর শান্তিকুঞ্জে আসব না তা হতে পারে না। তবে আগামী ২৪ মার্চ কাঁথিতে ভোটপ্রচারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করতেই শনিবার সেখানে গিয়েছিলেন লকেট। সেদিন কি মোদীর মঞ্চে হাজির থাকবেন শিশিরবাবু? ওটাই দেখার ।
আপরদিকে শিশির অধিকারী বলেন , অধিকারী পরিবার এভাবেই অতিথি অপ্যায়ণ করে। এর মধ্যে নতুন কিছু নেই। বিজেপিতে যাওয়া নিয়ে তিনি কোনও কথা বলতে চাননি। তবে দলের সঙ্গে যে এখন আর তার কোনও সম্পর্ক নেই সেকথা বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। দল তাঁদের উপর একের পর এক আক্রমণ করেছে বলে অভিযোগ তার।
এবিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন , যে কেউ উনার সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারেন। ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে যেতেই পারেন তাতে কোন ক্ষতি নেই। দুপুরে গিয়ে তার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করেছেন এটা নতুন কিছু নয়। এনিয়ে দলীয় কিছু বলার নেই। তাছাড়া ব্যক্তিগত ভাবে লকেট চট্টোপাধ্যায় আমন্ত্রিত হতেই পারেন। তাছাড়া যেহেতু বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তাই আমি ভাববো , ব্যক্তিগত সম্পর্কে একজন আরেকজনের বাড়ি গিয়েছেন।