Home » বিপুল ক্ষয়ক্ষতি, সামাল কিভাবে !

বিপুল ক্ষয়ক্ষতি, সামাল কিভাবে !

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

৩২ তম বর্ষ, ২৯৫ সংখ্যা, ৩১ মে ২০২০, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭।

দীর্ঘ লকডাউনের পর সবে যখন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় ঘোষণা করায় সবাই কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিল আর তখনই কিনা ঘূর্ণিঝড়। যে বিধ্বংসী ঝড় এরাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলার কৃষি অর্থনীতির সর্বনাশ করে ছাড়ল। তবে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব থেকে বাস যায়নি খোদ রাজ্য রাজধানী কলকাতাও। করোনার পাশাপাশি এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের নজির বিহীন এই আগ্রাসনের ক্ষত মেরামত করা যে কতখানি সাংঘাতিক কাজ তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের  সরকার। তাই রাজ্য সরকার ও দু একটি বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এই ক্ষয়ক্ষতিকে জাতীয় বিপর্যয় আখ্যা দেওয়ার দাবি উঠেছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে এসে দুর্গত এলাকাগুলি আকাশপথে দেখে গিয়েছেন। তাই রাজ্যের দাবি মেনে এই দুর্যোগকে জাতীয় বিপর্যয় বলে গণ্য করা হবে কি না সেটা কেন্দ্রের ব্যাপার। তবে প্রকৃতির এই ধ্বংসলীলা যে অতি মারাত্মক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে অজস্র ঘরবাড়ি, নদীবাঁধ ছাড়াও ধান, আনাজ, পাট, তিল, পান থেকে আরও বিভিন্ন চাষ তছনছ হয়ে গিয়েছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দুই ২৪ পরগণা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ অন্যান্য কয়েকটি জেলা। পশ্চিম মেদিনীপুরেরই ১৩,২৫৪ হেক্টর জমিতে আনাজের ৯০শতাংশই ঝড়ের কবলে পড়েছে। আর পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৩,২০০ হেক্টরে পান, বাদাম, ১৩,০৫০ হেক্টর, তিল ১৯৮০ হেক্টর, আনাজ ৮৯২০ হেক্টর এবং ১০৫০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষের দফারফা ঘটেছে। কেবল পশ্চিম মেদিনীপুরেই বরো ধান, আনাজ, তিল প্রভৃতি চাষে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা এবং ফুল, পান প্রভৃতি ক্ষেত্রে ক্ষতির অঙ্ক ৮ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত চাষির সংখ্যা ৪লক্ষ ৬ হাজার ৬৮৯ জন। তাই যদি হয় তবে পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগণা, কলকাতা, হাওড়া, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি প্রভৃতি সব জেলা মিলিয়ে সামগ্রিক ক্ষতির পরিমাণ যে কত হাজার হাজার, লক্ষ কোটি টাকা, তা সহজেই অনুমেয়। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই আপাতত হাজার কোটি টাকার তহবিল তৈরি করেছে। কেন্দ্রও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মতো আপাৎকালীন ভাবে এই হাজার কোটি টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এতো সমুদ্র গোষ্পদ। কেবল ঘূর্নিঝড়ের ক্ষতি সারাতেই চাই বিপুল অঙ্কের টাকা, তারপর তো রয়েছে কোভিড-১৯ এর মোকাবিলা। এখন রাজ্যের যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তাতে কেন্দ্র যদি রাজ্যেকে পর্যাপ্ত অর্থ না দেয় তবে ঘোরতর বিপাকে পড়তে হবে রাজ্যেকে। এই শোচনীয় ক্ষতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব এখন। দুর্গত ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের মুখে হাসি না ফোটানো পর্যন্ত বিরাম নেই তাঁর সরকারের।

You may also like

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.