ওয়েব ডেস্ক, বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : বিয়ে করতে নাবালিকাকে জোর বাবা-মা’য়ের! বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ বাবা-মা’য়ের বিরুদ্ধে।“বিয়ে করতে না চাইলে বিষ খেয়ে বা গলায় দড়ি নিয়ে মরবি যা,”-মেয়েকে এমন মন্তব্য বাবা-মা’য়ের! উপায় খুঁজে না পেয়ে নিজের বিয়ে আটকাতে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে প্রধানের কাছে হাজির নবম শ্রেণির ছাত্রী।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন : Click Here
প্রধানের কাছে নাবালিকার আর্জি, “কাকু আমাকে বাঁচাও। বাবা-মা আমার জোর করে বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছে।আমি পড়তে চাই।তুমি যেমন করে হোক আমাকে রক্ষা করো।” নাবালিকার কাছ থেকে সমস্ত কথা শুনে তাকে আশ্বস্ত করেন পঞ্চায়েত প্রধান। পঞ্চায়েত অফিসে ডেকে পাঠানো হয় নাবালিকার বাবাকে।মেয়ের ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবে না বলে বাবা মায়ের থেকে মুচলেকা লেখান পঞ্চায়েত প্রধান। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার কথা জানান বিডিও এবং পুলিশকে।
ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের ভগবন্তপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।ঘটনার কথা স্বীকার করছেন ভগবন্তপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ইসমাইল খান। তিনি বলেন,সোমবার বিকেলে পঞ্চায়েত অফিসে একটি মিটিং চলছিল। এমন সময় একটি মেয়ে এসে দরজার সামনে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। কী ব্যাপার জানতে চাইলে সে বলে- “কাকু আমাকে বাঁচাও। আমার বাবা-মা জোর করে আমার বিয়ে দিতে চাইছে। আমি ভগবন্তপুর হাই স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ি। আমি লেখাপড়া করতে চাই।
আমাকে বলছে আজ হলেও বিয়ে করতে হবে, দু-বছর পরে হলেও করতে হবে। বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় আমার বাবা-মা আমাকে বলছে, বিয়ে না করলে বিষ খেয়ে বা গলায় দড়ি নিয়ে জঙ্গলে গিয়ে মরবি যা!” আমি এখন কী করবো কাকু?” পঞ্চায়েত প্রধান ইসমাইল খান বলেন,মেয়েটিকে ধন্যবাদ জানাতে হয়।তার সাহস,প্রতিবাদের মানসিকতা দেখে আমরা খুশি।সব কথা শুনে মেয়েটির বাবাকে ডেকে পাঠায়।বাবাকে জিজ্ঞাসা করলে সেও স্বীকার করে, রাগের বসে এমন কথা মেয়েকে বলেছে বলে।
তাকে মুচলেকা লেখানো হয় মেয়ের ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবে না বলে। ঘটনার কথা বিডিও-কে জানাই।মেয়েটির লেখাপড়ায় যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিই।’জানা গিয়েছে,ভগবন্তপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মেটেলা গ্রামের মুচে পাত্র’র মেয়ে এই নাবালিকা,হত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে।বাবা-মা দিনমজুর।ভগবন্তপুর জ্ঞানদা সুন্দরী উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা।পাড়ার সব মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে,তাই নিজের মেয়েরও বিয়ে দিয়ে দিতে চান!সেই কারনেই লেখাপড়া বন্ধ করিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছিল বলে জানাগেছে।
আরও পড়ুন : ২৪ ঘন্টা পার! এখনও পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে জ্বলছে আগুণ, বাস্তু ও জীববৈচিত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন
গতকাল বিকেলে গ্রাম পঞ্চায়েত কার্য্যালয়ে ওই নাবালিকার বাবা মাকে ডেকে বুঝিয়ে মুলচেকা নিয়েও ক্ষান্ত থাকেননি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ইসমাইল খাঁন।আজ সকালে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে সাথে নিয়ে পৌঁছে যান ওই নাবালিকার বাড়িতে।গতকালের পর আজ নাবালিকার বাড়িতে খোঁজ নেন কেমন আছে ওই নাবালিকা,গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কথা বলেন গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে,তাদেরও সচেতন করেন নাবালিকা বিয়ে বন্ধে সকলেই যাতে সজাগ হন।পড়াশোনা করার আগ্রহ প্রকাশ করে নিজের বিয়ে বন্ধ করার নাবালিকার এই উদ্যোগের পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের এহেন তৎপরতার প্রশংসায় এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন : পশ্চিম মেদিনীপুরে স্কুলছুটদের ফেরাতে অভিনব উদ্যোগ! দুয়ারে দুয়ারে ঘুরলেন পড়ুয়া ও শিক্ষকরা
আরও পড়ুন : শহরে টোটোর ধাক্কায় গুরুতর জখম একব্যক্তি, বেপরোয়া চলাচলে ক্ষুব্ধ শহরবাসী
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Minor Marriage stopped
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper