বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : স্ত্রী পর পর তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তাই স্ত্রী-র থেকে মন সরে গিয়েছিল। মন পড়েছিল শ্যালিকার দিকে। তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। অমত শ্বশুর বাড়ির লোকেদের। চরম গন্ডগোল শুরু হয়েছিল। সেই রাগে রাতের অন্ধকারে শ্বশুরবাড়িতে একটি হলের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা সকলকে বাইরে থেকে দরজা-জানলা বন্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। যেখানে নিজের স্ত্রী সহ শ্বশুরবাড়ির পরিবারের ছয় জন মারা গিয়েছিল। পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছিলেন। সেই ঘটনাতে অভিযুক্ত জামাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল মেদিনীপুর আদালতে। আইনজীবী জানিয়েছেন, মৃত্যুর পর তার দেহ বেরোবে জেল থেকে।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :
For WhatsApp Group : Click Here

মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর থানার অন্তর্গত বাগাগেড়া এলাকায়। জানা গিয়েছে, বাগাগেড়ার পাশের গ্রামের যুবক তাহের আলীর সঙ্গে বাগাগেড়ার মিনারা বেগমের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পরপর তাদের তিনটি কন্যা সন্তান হয়। তখন থেকেই নিজের স্ত্রীর ওপর মন সরে গিয়েছিল তাহেরের। মন ধরে শ্বশুরের ভাই এর মেয়ে তথা শ্যালিকাকে। তাকে বিয়ে করার জন্য ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে। বিষয়টি শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জানতে পারাই অশান্তি শুরু হয়ে। স্ত্রীকে নিয়ে গন্ডগোল শুরু হয় প্রথমে। বেধড়ক মারধর করা হয় স্ত্রী-কে। পরিস্থিতি খারাপ দেখে মিনারা সহ তিন মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যান তাহেরের শ্বশুর।
আরও পড়ুন : টানা ১৯ দিন ধরে ২১২ টি লোকাল ও ২৭ টি এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল হাওড়া – খড়গপুর ডিভিশনে
২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল গভীর রাতে তাহের শ্বশুরবাড়িতে হাজির হয়ে গিয়েছিল। রাত এগারোটা নাগাদ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের অধিকাংশ বড় হল ঘরের মধ্যে ঘুমাচ্ছিলেন। সেই সময় চুপিসারে ওই হলের বাইরের দরজা-জানলা সবটা বন্ধ করে দিয়েছিল। কোনভাবে ভেতরে পেট্রোল ঢেলে দেয় প্রচুর পরিমাণে। তারপরে বাইরে থেকে আগুন লাগিয়ে দেয়। মুহূর্তে দাও দাও করে আগুন জ্বলতে থাকে। ঘুমিয়ে থাকা শ্বশুরবাড়ির ১১ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে যান। ওই ঘরে তাহেরের স্ত্রী, তিন কন্যা সন্তান সহ শ্বশুর, শাশুড়ি ও অনেকেই ছিলেন। চিৎকার চেঁচামেচিতে পাড়ার লোকজন এসে বুঝতে পারে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়েছে। জামাইয়ের ওই কর্মকাণ্ড কোনোভাবে দেখে ফেলেছিলেন অনেকে। জামাই সেখান থেকে ফেরার হয়ে যায়।

ঘটনার পর কোনোভাবে দরজা জানালা ভেঙে ভেতর থেকে সকলকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মেদিনীপুর হাসপাতালে ভর্তি করলেও তাহেরের স্ত্রী সহ ৬ জন মারা গিয়েছিল চিকিৎসা চলাকালীন। বাকি পাঁচজনের আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলে। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ তাহের সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে মামলা শুরু করেছিল। ৬৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করার পর মঙ্গলবার মেদিনীপুর আদালতের বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন তাহের আলীকে। বাকি ১৩ জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেন বিচারক। বুধবার তাহের আলীর অমৃত্যূ কারাদণ্ড ঘোষণা করেন বিচারক। এই মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর রাজ কুমার দাস বলেন, “বিচারক এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন আগেই। বুধবার আমৃত্যু কারাদণ্ড ঘোষণা করেছেন তাহের আলীর।”
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Wife’s Family Murder
Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper