Public health
আরও পড়ুন ঃ–ভুয়ো ভ্যাকসিন কান্ডে জড়িত দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের পশ্চিম মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানায়
অরুপ নন্দীঃ কাজের চাপে আশা কর্মীদের এমনিতেই হিমশিম অবস্থা, তার উপর গত বছর থেকে করোনা অতিমারির বিপুল কাজের ভার আশাকর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় । কোনরকম সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই এই কাজ করতে হয় বলে অভিযোগ।
গ্রাম বাংলার তৃণমূল স্তরের জনস্বাস্থ্যের ভার এঁদের ওপর। কার জ্বর হয়েছে, কোন মায়ের কি অবস্থা, কে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত, টিকার ব্যবস্থা করা, গর্ভবতী মহিলাদের দিনে রাতে যখনই দরকার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সহ নানা পরিষেবা দিয়ে চলেছেন আশাকর্মীরা। গত বছর থেকে বাড়তি যুক্ত হয়েছে করোনা চিকিৎসার দায়িত্ব। প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে (Survey) করা, কারও জ্বর হলে করোনা টেস্টের (Covid Test) ব্যবস্থা করা, করোনা পজিটিভ (corona Positive) হলে ওষুধ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া, প্রতিদিন অক্সিজেন মাপা, ভ্যাকসিনের জন্য তালিকা প্রস্তুত করা এবং সমস্ত রিপোর্ট প্রতিদিন সেন্টারে গিয়ে জমা দেওয়া। এক কথায় স্বাস্থ্য পরিষেবার বিরাট দায়িত্ব এঁদের উপর। তবুও ‘স্বেচ্ছাসেবক’ হিসেবেই রয়েছেন আশারা। সমস্ত কাজ করা আশাকর্মীদের আশা ছিল একদিন সরকারি কর্মীর স্বীকৃতি পাওয়া যাবে। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এঁদের সরকারি কর্মীর স্বীকৃতি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ।
কোভিড চিকিৎসার দায়িত্ব পালন করতে হলেও আশাকর্মীদের জন্য সরকারি কোনও সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ। বহু আশাকর্মী কোভিডেও আক্রান্ত হয়েছেন। গত বছর এই কাজের জন্য কেন্দ্র মাসে ১০০০ টাকা বরাদ্দ করেছিল। ছ’মাস পর বন্ধ করে দেয়। রাজ্য সরকার গত বছর করোনা পজিটিভ স্বাস্থ্যকর্মীদের এক লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল, কিন্তু আজ পর্যন্ত এ টাকা অধিকাংশ আশাকর্মীই পাননি বলে অভিযোগ। এবছরও এপ্রিল মাস থেকে কেন্দ্র মাসে ১০০০ টাকা করে ঘোষণা করেছে বলে জানান আশাকর্মীরা। কিন্তু তাঁর টাকা এখনও পাননি। এবারে আবার ভ্যাকসিনেসনের জন্য ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে।
সকাল ন’টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। বাড়ি থেকে দূরে হলে যাতায়াত খরচও হচ্ছে বেশি, সঙ্গে খাওয়া দাওয়ার খরচ। এজন্য আলাদা কোনো ভাতা না মেলায় ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে আশাকর্মীদের। ডেবরা ব্লকের আশাকর্মীরা এ নিয়ে বিএমওএইচ-এর কাছে মৌখিক জানিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এক আশাকর্মী বলেন, আমরা ডেপুটেশন দিব বলে একদিন সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সময় দেননি। মাসে ১০০০ টাকা ভাতা দিয়ে দিনের পর দিন কাজ চাপিয়ে দিচ্ছে আমাদের উপর। কাজ অনুযায়ী ভাতা না পেলে ওই টাকা না নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আশাকর্মীরা। সমস্যার সমাধান না হলে নির্দিষ্ট দাবি নিয়ে বিক্ষোভ, ধর্মঘটেও সামিল হবেন বলে জানান।
আশাকর্মী ইউনিয়নের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদিকা পাপিয়া অধিকারী বলেন, প্রতিদিন আশাকর্মীদের কাজ বেড়েছে চলেছে। অথচ টাকা মিলছে না। নেই কোনো সুরক্ষা। নেই ছুটি। ১০০০ টাকা মাসে দেওয়া হলেও, তার দরুন প্রতিদিন কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। টিকাকরণের জন্য মানুষদের নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে গ্রাম বাংলার স্বাস্থ্য পরিষেবার সমস্ত কাজ করতে হচ্ছে আশাদের। গতবারে বিক্ষোভের জেরে রাজ্য সরকার আশাকর্মীদের কিছু কিছু দাবি মেনে নিয়ে বোনাস ২০০০ টাকা, অবসর ভাতা তিন লক্ষ টাকা এবং সাম্মানিক ভাতা ১০০০ টাকা বাড়ালেও সরকারি কর্মী হিসাবে স্বীকৃতির মূল দাবি সরকার আজও মানছে না।
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Public health
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper In Midnapore