পত্রিকা প্রতিনিধিঃ করোনা মোকাবিলায় এরাজ্যে লকডাউন শুরু হয়েছে। আর তার আগে থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সমুদ্রে (Sea) মৎস্য শিকার। পরে ৬১ দিন ব্যান পিরিয়ড কাটতেই সমুদ্রে(Sea) মৎস্য শিকারে বেরিয়েছেন মৎস্যজীবীরা(Fishermen)। আষাঢ় মাসের ভরা বর্ষা। তবুও যেন উলট পুরাণ! এক সময় যেখান থেকে ‘রুপোলি শস্য’ ও অন্যান্য সামুদ্রিক রাজ্যের নানা প্রান্তে যেত, সেই দিঘা মোহনায় কার্যত ইলিশ মাছ নেই বললেই চলে। এই ভরা মরসুমেও হতাশার ছবি দেখা গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘা(Digha) ও শংকরপুরে (Shankarpur)। নিজের রোজগার হারানোর ব্যাথা বুকে নিয়ে এখন কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। একদিকে বড় মাপের জ্বালানি যন্ত্রণা। আবার জ্বালানির অতিমাত্রায় দাম বৃদ্ধি। অপরদিকে আবার যখনতখন প্রাকৃতিক দূর্যোগ। সঙ্গে করোনা সংকটও রয়েছে। দুর্যোগ আর জ্বালানির দামের কোপে পড়ে ভরা বর্ষায় ভরা মাছের বাজারেও বহু ট্রলারই এখনও পর্যন্ত সমুদ্রে পাড়ি দিতে পারেনি। মালিকরা যেখানে হতাশ, সেখানে কাজ হারানোর আশঙ্কায় বহু মৎস্যজীবী(Fishermen)এবং ট্রলার মালিকেরা। অথচ প্রতিবারের মতো এবারও সকলেই আশায় ছিলেন পরিস্থিতি এবার অনুকূলই থাকবে। গত বছরের মতো সংকট মোকাবিলা করতে হবে না। কিন্তু সেই আশা ভেঙে চুরমার। ইয়াসের ঝঞ্ঝার সঙ্গে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে রীতিমতো বিপাকেই পড়েছেন সমুদ্র উপকূলের হাজার হাজার মৎস্যজীবী(Fishermen)।
বিগত বছরগুলিতে এই সময় ইলিশ ও আন্যান্য সামুদ্রিক মাছ ভরে উঠত দিঘা মোহনায়। এখান থেকেই কাঁথি(Contai), এগরা(Egra) -সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে ইলিশ ও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হত। কিন্তু এ বছর মরসুম শুরু হওয়ার সপ্তাহ খানেক বাদে একদিনে দেড় কুইন্ট্যাল ইলিশ আমদানি হয়েছিল। তার পরে আ তেমন বেশি পরিমাণে ইলিশ আসেনি। এ দিকে, ঝিরঝিরের বৃষ্টির মতো ইলিশের আর্দশ আবহাওয়া কিন্তু বজায় রয়েছে।
দিঘা(Digha) মোহনার এক ট্রলার(Trawler)
মালিক জানান, মরশুমের প্রথমদিকে বেশ কয়েকটা ইলিশ ধরা পড়েছিল। তবে তারপর থেকে আজ পর্যন্ত তেমন কোনো ইলিশ বা অন্যান্য মাছের দেখা নেই। লঞ্চ সাজিয়ে সমুদ্রে মৎস্য শিকারে নামাতে প্রায় ১০-১২ লাখ খরচ হয়। এদিকে জ্বালানির দাম অতিমাত্রায় বেড়েছে। পাশাপাশি রয়েছে মাঝিদেরও বেতন। তবে এই মরশুমে ইলিশ ও অন্যান্য মাছ তেমন না ওঠায় ক্ষতি তো হচ্ছেই।
‘দিঘা মোহনা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র কর্মকর্তা নবকুমার পয়ড়্যা বলেন, ‘‘দিঘায়(Digha) ইলিশ ও অন্য সামুদ্রিক মাছের খরা চলছে। যেসব ট্রলার শুধুমাত্র ইলিশ মাছ ধরে তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যদি না ইলিশ মাছ আগামী কয়েকদিনে ধরা না পড়ে, তবে ওইসব ট্রলার(Trawler)
মালিকদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। ৬০-৭০ লক্ষ টাকার দামের ট্রলার সারা বছর ফেলে রাখা হয়। তারা শুধু মাছের মরসুমে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। কিন্তু এ বার মাছের আকাল দেখা দেওয়ায় সমস্ত মালিকের মাথায় হাত। ’’