পত্রিকা প্রতিনিধি :করোনা সংক্রমণের চিকিত্সায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার আপাতত বন্ধ করতে বলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু। এখনও পর্যন্ত করোনা চিকিত্সায় যাঁদের উপর হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনপ্রয়োগ হয়েছে তাঁদের শরীরে এর প্রভাব কি- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই আপাতত ম্যালেরিয়ারোধী এই ওষুধ ব্যবহার বন্ধের কথা বলেছে হু।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯-এর চিকিত্সার জন্য সলিডারিটি ট্রায়াল গ্রুপ তৈরি হয়েছে। রবিবারসেই গ্রুপের সদস্যরা বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, করোনা সংক্রমণের চিকিত্সায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার আপাতত বন্ধ করা হবে। সলিডারিটি ট্রায়াল গ্রুপ স্বেচ্ছায় বিভিন্ন ওষুধের ট্রায়ালে রাজি হয়েছেন।
ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তথা সাইড এফেক্ট রয়েছে। বিশেষ করে হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, হাসপাতালে ভর্তি কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের এই ওষুধ দিয়ে যে খুব উপকার পাওয়া গেছে-এমনটাও নয়। ল্যানসেটের গবেষণায় বিশ্ব জুড়ে কয়েকশ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৯৬ হাজার রোগীর রেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়েছে। তার উপরই চলেছে গবেষণা। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাওকরোনা চিকিত্সায়ায় ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি নিয়ে মানুষকে সতর্ক
করেছিল।
তবে, ভারতে করোনা চিকিত্সায় ম্যালেরিয়ার ওষুধকেই এখনও কাজে লাগানো হচ্ছে। করোনা চিকিত্সার সঙ্গে যুক্তদেরও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়া হচ্ছে। ওই ওষুধের কার্যকারীতা উপলব্ধি করে আমেরিকাও ভারতের থেকে এই ওষুধ চেয়ে পাঠিয়েছিল। করোনায বিধ্বস্ত আমেরিকা। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে, তিনি নিজে এই ওষুধ খাবেন। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অ্যান্টি মাইক্রোবিকেল এজেন্টের ফরাসী বিজ্ঞানী, কোভিড ভাইরাস রোধে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকরীতাকে মান্যতা দিয়েছিলেন।
এদিকে হু-র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন অবশ্য জানিয়েছেন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের প্রয়োগ নিয়েই মূলত সমীক্ষা করা হয়েছে। ক্লোরোকুইনের প্রয়োগ নিয়ে কোনও সমীক্ষা করা হয়নি। তা ছাড়া হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের প্রয়োগ সাময়িক ভাবে বন্ধ করতে বলা হয়েছে মাত্র। তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাও ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি নিয়ে মানুষকে সতর্ক করে বিবৃতি দিয়েছিল। নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোও জানিয়েছিলেন, বড় এক গবেষণার প্রাথমিক ফলাফলে করোনাভাইরাসের চিকিত্সায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করে সুস্থ হওয়ার হারে তেমন কোনও হেরফের দেখা যায়নি।
করোনাভাইরাস নিরাময়ের সম্ভাব্য ওষুধ হিসেবে এখন কাজ করছে ম্যালেরিয়া তাড়ানোর ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন। এই বিষয়ে হু-এর (WHO) মত, করোনা তাড়াতে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার বন্ধ হোক।