৩৩ তম বর্ষ, ৩৭ সংখ্যা, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২৩ ভাদ্র ১৪২৭
গোটা দেশে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে আমাদের রাজ্য, জেলা, গ্রাম, শহর সর্বত্র সংক্রমণের গতি উর্ধ্বমুখী। সমগ্র পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে কোভিড নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসার জন্য নানাবিধ পরিকল্পনা, পরিকাঠামো বৃদ্ধি করে পরিস্থিতি সামলানোর। আর এজন্যই মাঝে মাঝে লকডাউন করে রাজ্যে করোনায় রাশ টানার চেষতা করে চলএছে সরকার। বিশৃঙ্খল যেসব মানুষ করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি অবজ্ঞা করে চলেছে, মাস্ক পরা বা দূরত্ব বিধি অমান্য করে চলেছে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য লকডাউন অন্যতম পথ। এজন্যই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে একটানা প্রায় তিন মাস কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশে লকডাউন ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিল। করোনা ভাইরাসে রাশ টানার জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি ছিল, যদিও এতে গোটা দেশের অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে উঠেছে, কোটি কোটি শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষ কাজ হারিয়ে পথে বসেছেন। কিন্তু সবাই বাস্তব, আবার এ-ও বাস্তব লকডাউনই অতিমারি নিয়ন্ত্রণে অন্যতম প্রধান অঙ্গ। এ রাজ্যেও ক্রমশ পরিস্থিতি খারাপ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন আমাদের দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় সংক্রমোণ বেড়েই চলেছে। এমনকী এই মেদিনীপুর শহর এবং পার্শ্ববর্তী রেলশহর খড়গপুরেও করোনার রক্তচক্ষুতে নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষের। চিন্তা বাড়িয়েছে কোমর্বিডিটি। হ্যাঁ, কোভিডের বারাবাড়ির পিছনে এটা একটা বড় কারণ। করোনা সংক্রমণের সঙ্গে এই সব উপসর্গ যুক্ত হওয়ায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেই সেরোলজিক্যাল সার্ভের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে জেলার অনেকেই ডায়াবেটিশ, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ জনিত সমস্যায় ভুগছেন। জেলার প্রায় ৯ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপে ১১.৩ শ্তাংশ এবং ১.৬ শতাংশ মানুষ হৃদ্রোগে ভুগছেন। স্বাস্থ্যকর্তাদের মূল্যায়ন, বিশেষ করে বয়স্ক করোনা রোগী যাঁদের এই সব কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। সেজন্য চিকিৎসকদের নিদান, এই সব অসুখ নিরাময়ে সঠিকভাবে চিকিৎসা করানো দরকার। সুগার ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। সঠিক পরামর্শ। ভয়ঙ্কর কোভিড-১৯ যেন এই বার্তাই দিয়ে চলেছে, সময় থাকতে ওইসব রোগ নিরাময় ও নিয়ন্ত্রণে করা হোক নচেৎ জীবনহানির আশঙ্কা অনেক বেশি। সুতরাং পরিস্থিতি অতীব জোটিল। এই অবস্থায় চিকিৎসকদের আরও বেশি মানবিক হএ হবে। করোনার অজুহাতে যে কোনও ধরণের রোগাক্রান্ত মানুষদের চিকিৎসায় যেন ফাঁক না থাকে তা দেখা দরকার। আর সরকারি হাসপাতালে কোনও রোগীই যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হন সেজন্য রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা