Home » ঘোরতর আতান্তরে রাজ্য

ঘোরতর আতান্তরে রাজ্য

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

৩৩ তম বর্ষ, ২৭ সংখ্যা, ৩০ আগষ্ট ২০২০, ১৩ ভাদ্র ১৪২৭

সত্যিই, একেবারে খাদের কিনারায় দেশের অর্থনীতি। এখন করোনা মহামারি বলে নয়, অনেক আগে থেকেই দেশের অর্থনীতি, বেকারত্ব, উৎপাদন শিল্পের করুণ অবস্থা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার এক্ষেত্রে সাফল্য বজায় রাখতে না পারায় বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই সোচ্চার হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রের আর্থিক নীতির করুন অবস্থা নিয়ে পদে থাকার সময় বা পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পর বারবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন। তাঁর বক্তব্য ছিল একটিই, দৃপ্ত দৃষ্টিভঙ্গির অভাবে ভারতের অর্থনীতি দিশা হারাচ্ছা। ২০১৯ সালেই রাজন কন্দ্রের বেহাল আর্থিক দিশার জন্য নোটবাতিল ও তড়িঘড়ি জিএস টি চালুকেই দাহী করেন। শুধু রঘুরাম রাজনই নন, কেন্দ্রের ভ্রান্ত আর্থিক নীতির সমালোচনা করেছেন মনমোহন সিংহ, দুই নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে আরও অনেক প্রথিযশা অর্থনীতিবিদ। কিন্তু অর্থমন্ত্রক কোনও কথাকেই গুরুত্ব দেননি। ফলে এখন এই অতিমারির কারণে দেশের আর্থিক সংকট আরও চরমে। এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে রাজ্যগুলিকেও কারণ দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্যই উপরেই রাজ্যের সমৃদ্ধি নির্ভর করে। কিন্তু ঘটনা হল, রাজ্যগুলি বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রের ভাড়ার থেকে প্রাপ্য টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে চলেছেন। এই নিয়ে কয়েকবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুযোগ জানিয়েও সুরাহা পায়নি। এখন কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে আরও কঠিন সিদ্ধান্তের কথা। কোনও রাজ্যকে তাদের প্রাপ্য জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ করোনার কারণে দেশে দীর্ঘ লকডাউনে কন্দ্রের এই খাতে আদায়ের পরিমান খুবই কম। ২০২০-২১ এ জিএসটির সেস আদায় হবে যেখানে ৬৫ হাজার কোটি টাকা, সেখানে রাজ্যগুলির প্রাপ্য দাঁড়াবে ৩লক্ষ কোটি টাকা। অতেব রাজ্যগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে বা বাজার থেকে ঋণ নিয়ে প্রয়োজন মেটাক। স্বভাবতই আরও সঙ্কটে সব রাজ্যই। পরিস্থিতি এমনই জটিল যে রাজ্যের যা কর আদায় হয় তা করোনা মোকাবিলা করতেই সব সাবাড় হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে আমাদের রাজ্যো সব উন্নয়ন্মূলক কাজ ও জনগণকে বিভিন্ন খাতে পরিষেবা চালু রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্র যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, কীভাবে নিজেদের রোজগারে ভাঁড়ার সচল রাখা যাবে তার উপায় বের করতে হবে সরকারকেই। কোনও সন্দেহ নেই, পরিস্থিতি অতীব জটিল, এই গভীর সংকটের মাঝে যথাযথ ভাবনাচিন্তা করে এগিয়ে চলাই সব রাজ্যের পথ। তবে দেশের গভীর আর্থিক সংকটের জন্য দায়ী যে কন্দ্রের মোদী সরকারই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

You may also like

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.