Home » আবারও যাত্রা শুরু অধীরের

আবারও যাত্রা শুরু অধীরের

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

৩৩ তম বর্ষ, ৪৩ সংখ্যা, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২৯ ভাদ্র ১৪২৭

অধীর চৌধুরী আবারও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হলেন। সোমেন মিত্র প্র্যাত হওয়ার পর পদটি শূন্য ছিল, পূরণ করলেন সনিয়া গান্ধী। তাঁর একান্ত অনুগত, স্নেহ ভাজন, অধীরকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব দিয়ে তিনি বিধানসভা ভোটের আগে দলকে সংগঠিত ও শক্তিশালি করতে চেয়েছেন বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। হয়ত এর পিছনে বামেদের সঙ্গে জোট করা বা জোট পোক্ত করার কাজটিও অধীরকে দিয়ে করাতে চান সনিয়া। যদিও কয়েকদিন আগেও ভার্চুয়াল সভায় নিট, জেইই পরীক্ষা পিছনো ও জি এস টি-র প্রাপ্য টাকা আদায়, যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রথা ভাঙার জন্য বিজেপি সরকারকে দায়ী করে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সখ্য দেখে অনেকেই বলতে শুরু করেহিলেন বামেরা নয়, সনিয়ে বোধ হয় তৃণমূলের সঙ্গেই বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে আগ্রহী। তবে ঘটনা হল রাজনীতির ময়দানে তো ঘোলা জলে পরিপূর্ণ। তাই কে কোথায় থাকবে, যাতে তা বোঝা যায় না। অধীরকে প্রদেশের দায়িত্ব দিয়ে সনিয়ে কি উদ্দেশ্য সাধন করতে চান তা বুঝে নিতে বেশি দেরি হবে না। করোনা তাই, নচেৎ এখন থেকেই বিধানসভা ভোটের বাদ্যি বেজে উঠত। তা যাই হোক, দলে কাকে কোথায় বসানো হবে, কাকে নামানো হবে সেটা দলের নিছকই আভ্যন্তরীন বিষয়। হাইকমান্ডের এক্তিয়ার রয়েছে কাউকে কোনও পদে ওঠানো, নামানোড়। সুতরাং দলের সর্বস্তরের সবাই কিনা তা বোঝা মুশকিল, কারণ কংগ্রেস এখানে অর্থাৎ এই রাজ্যে কবে কখন থেকেছে। সোমেন মিত্রের আগেও তো প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন অধীর, তখন কী দলের সর্বস্তরে একতা দেখা গিয়েছিল ? বোধ হয় না। এই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেই তো দেখা গিয়েছিল অধীর তাঁর অনুগতদের জেলা সভাপতি বা অন্যান্য পদে বসালেও দলের একটি বড় অংশকে তাঁদের সমর্থণ না করে সমান্ত্রাল নানান দলীয় কর্মসূচিতে সামিল হতে দেখা গিয়েছিল, তখন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল কংগ্রেসের গোষ্ঠী রাজনীতি যা কতখানি দগদগে। ১০ তারিখ প্রদেশ দফতরে দায়িত্ব নেওয়ার দিনেও সোমেন অনুগামীদের দেখা যায়নি। সুতরাং অধীরবাবু আবারও প্রদেশ সভাপতি হওয়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অথচ দলের এই কর্কট রোগটাই নির্মূল করতে হবে অধীরকে। অবশ্যই দক্ষ সংগঠক, বাম জমানায় এবং এই তৃণমূল জমানাতেও বহরমপুরের লোকসভা আসন থেকে উৎখাত করতে পারেনি কেউ। এখন সনিয়াজির আকান্ত অনুগত হওয়ায় লোকসভাতে দলের সংসদীয় নেতার পদে রয়েছেন তিনি। সুতরাং যোগ্যতা রয়েছে বলেই তাঁর এই উত্তরণ। কিন্তু এখন ‘মহাযুদ্ধের’ ভেরি যখন বাজতে চলেছে তার আগে তিনি নিজের দলের গোষ্ঠী ক্ষত সারিয়ে সমস্ত জেলার দলকে সুসংগঠিত করতে সমর্থ হবেন? কোটী টাকার প্রশ্ন এখন তো এটাই। আগে তো ঘর সামলানো, তারপর তো জোট-ফোট। কট্টর তৃণমূল বিরোধিতার রাস্তায় হেটের বিজেপির পথ সুগম করে দেওয়া হবে না তো? বিজেপির তো প্রধান ভরসা বাম ও কংগ্রেসের ভোট। যেটা বিগত বিভিন্ন নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। এবারও মমতায় ফেরার চেষ্টায় বিজেপি। তা অধীরবাবু কী পারবেন বিজেপির আশা চূর্ণ করতে ? তারপর তো ক্ষমতার দলকে ক্ষমতাচ্যুত করার খোয়াব দেখবেন। দেখা যাক, অধীর বাবু এবার কী ভেল্কী দেখান।

You may also like

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.