পত্রিকা প্রতিনিধিঃ তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম কর্মীসভা হল মঙ্গলবার। আগামীকাল হলদিয়ায় মনোনয়ন পত্র দিবেন তিনি। নন্দীগ্রামের প্রাক্তন সেনাকর্মীর বাড়ির দোতলায় থেকেই শুরু তৃণমূলনেত্রীর প্রচার। এদিন কর্মীসভা থেকে তিনি বলেন, ‘মানুষে মানুষে ভাগাভাগি হয় না। নন্দীগ্রামই শিখিয়েছে সম্প্রীতি। সারা বিশ্বে দরবারে নন্দীগ্রাম পৌঁছে গেছে।’ নন্দীগ্রামের মানুষের কথা আমি দিল্লিতে পৌঁছে দিয়েছি। নন্দীগ্রামে আমি কেন দাঁড়ালাম? ভবানীপুর থেকেও তো দাঁড়াতে পারতাম। শেষবার যখন এসেছিলাম সেদিন কথা দিয়েছিলাম। আপনাদের উদ্দীপনা দেখে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভুলতে পারি নিজের নাম, ভুলব নাকো নন্দীগ্রাম। ‘সিঙ্গুর না হলে নন্দীগ্রামের আন্দোলনের তুফান আসত না। মাথায় ছিল সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াব। আর নন্দীগ্রামে গুলি চলেছিল এই ১৪ মার্চ । সেদিন অসুস্থ ছিলাম, হাসপাতাল থেকে চলে এসেছিলাম।
কোলাঘাটে আমার গাড়ির উপর হামলা, সেদিন কেউ ছিল না। রাজ্যপাল’কে ফোন করে বললেন, আপনাকে পেট্রোল বোমা মারার চক্রান্ত চলছে। সেই সময় আনিসুরের বাইকে লুকিয়ে তমলুক হাসপাতালে যাই। এখন আনিসুর জেলে আছে, তাকে আজ চক্রান্ত করে জেলে ভরেছে, নাম বলব না। তাছাড়া সেই সময় সিপিএম ভাবতে পারেনি, আমি স্কুটারে করে পৌঁছে যাব। তারপর চণ্ডীপুর হয়ে নন্দীগ্রামে ঢুকেছিলাম, শুরু হয়েছিল অকথ্য অত্যাচার।
১০ নভেম্বর সূর্যোদয়ের নামে ১০ জনের দেহ লোপাট করা হল। ভাঙাবেড়া থেকে সোনাচূড়া, একই অত্যাচার হয়েছে। সেদিনও আমি আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, আজও আছি।’ তিনি আরও বলেন , ‘কেউ কেউ বলছে আমি নাকি বাইরের লোক। আমি বাংলার লোক, বাইরের লোক হলাম কী করে? গুজরাত থেকে যারা আসছে তাঁরা বাংলার লোক? কেউ কেউ হিন্দু-মুসলমান করার চেষ্টা করছে। আমি হিন্দু ঘরের মেয়ে, চণ্ডীপাঠ করে বাড়ি থেকে বের হই। সব ধর্মের মানুষ নিজের ধর্মকে সম্মান করেন।
আমায় হিন্দু ধর্ম শেখাচ্ছে?’ ‘ধর্ম নিয়ে খেলবেন? খেলা হবে? কবে খেলবেন? মুখস্থ করে এসে বুলি আওড়াচ্ছেন?’ হাসপাতাল-কলেজ থেকে জলপ্রকল্প, সব করে দিয়েছি। আগামীদিনে নন্দীগ্রামকে মডেল করে দেব। নানারকম চক্রান্ত চলবে, চক্রান্তে পা দেবেন না। নন্দীগ্রামে বাড়ি ভাড়া নিয়েছি, পরে কুঁড়ে ঘর বানিয়ে নেব। আমি যা কথা দিই, তা রাখি।’ তিনি বলেন, ‘১ এপ্রিল খেলা হবে। পুরনো অত্যাচারী অনেক সিপিএম নন্দীগ্রামে ফিরেছে। লক্ষ্মণ শেঠের সঙ্গীদের নিয়ে অত্যাচার করেছিল, তারা ঘরছাড়া ছিল পুনরায় নন্দীগ্রামে ঢুকছে। আগামী শিব চতুর্দশীর দিন তৃণমূলের ইস্তেহার প্রকাশ হবে।’ এরপর তিনি ওই এলাকার চন্ডী মন্দিরে পরিদর্শন করেন পাশাপাশি মন্দিরে পূজো দেন।