ওয়েব ডেস্ক, বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : বন (সংরক্ষণ) আইন সংশোধনী বিল ২০২৩ ও বন সংরক্ষণ অধিনিয়ম ২০২৩ প্রত্যাহার এবং অরণ্যের অধিকার আইন ২০০৬ লাগু করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখালো অল ইন্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা কমিটি। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাসক দপ্তরের সামনে বিক্ষোভের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর উদ্দেশ্যে জেলা শাসকের মাধ্যমে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের জেলা সম্পাদক বঙ্কিম মুর্মু, সুনীল হেমরম, বুদ্ধদেব সরেন, লুলু হাঁসদা প্রমুখ।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন : Click Here
সংগঠনের বক্তব্য, জঙ্গলের অধিকার আইন ২০০৬-ও এক দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল। ১৯৮৮ সালে রিজার্ভ ফরেস্ট অ্যাক্ট চালু করার ফলে দেশে বহু মানুষ যখন উচ্ছেদের সম্মুখীন হয়েছিল তখনই দেশজুড়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনের ফলেই জঙ্গলের অধিকার আইন প্রণয়ন করা হয় এবং ২০০৬ সালে ওই আইন চালু হয়। আদিবাসী ও গরিব মানুষের শোষণ, জুলুম, অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে জঙ্গলকে কেন্দ্র করে বেঁচে থাকার যে চিরাচরিত অধিকার ছিল, জঙ্গলের অধিকার আইন-২০০৬-এর মধ্যে সেই সুযোগ যতটুকু ছিল বন (সংরক্ষণ) আইন সংশোধনী বিল ২০২৩ ও বন সংরক্ষণ অধিনিয়ম ২০২২ লাগু হলে সেই সুযোগ কার্যত কেড়ে নেওয়া হবে।
পেটের ভাত জোগায় জঙ্গল। জঙ্গল থেকে পাতা, কাঠ ও ডালপালা সংগ্রহ করে সাইকেলের পেছনে বেঁধে বা মাথায় করে নিয়ে গিয়ে শহরে বা অন্য কোথাও বিক্রি করেন জঙ্গলের মানুষজন। তবেই তাঁদের বাড়িতে হাঁড়ি চড়ে। আইনের চোখে এঁরাই ‘অপরাধী’। জল-জঙ্গলের অধিকার থাকবে আদিবাসী মানুষের হাতে। এই শপথ নিয়েই মধ্যপ্রদেশ থেকে ভাগ করা হয়েছিল ছত্তিশগড়কে। অথচ রাজ্য ভাগের ১৩ বছর পর ছ’টি নদী বেসরকারি সংস্থার হাতে বিক্রি হয়ে গেছে বলে অভিযোগ। হাজার হাজার বছর ধরে যে জঙ্গলের ওপর ভরসা করে জীবনযাপন করতেন আদিবাসী-বনবাসীরা সেই অরণ্যের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ সংগঠনটির।
Paschim Medinipur
আরও পড়ুন : জল নেই, শুকনো জমিতেই পুঁতে দেওয়া হচ্ছে ধানের চারা, মাথায় হাত কৃষকদের
আরও পড়ুন : মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সিনিয়রদের দ্বারা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ দিল্লিতে, বৈঠকে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি
জেলা সম্পাদক বঙ্কিম মুর্মু বলেন, “বনাধিকার আইন ২০০৬ অনুযায়ী আদিবাসী এলাকাতে গ্রামসভার অনুমতি ছাড়া ওই জমি অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না৷ সেই আইন পাল্টে দিয়ে নতুন আইন আনছে কেন্দ্র সরকার। বাদল অধিবেশনে বিতর্কে না এনে সংসদে পাশ করে নিয়েছে। নতুন আইন লাগু হলে বনভূমিকে অন্য কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাস্তবে কোন বাধা থাকবে না। কেবল শর্ত থাকবে সমপরিমাণ জমিতে বনসৃজনের জন্য কেন্দ্র সরকারকে কিছু অর্থ দিতে হবে। সরকার এই জমির ব্যবস্থা করবে এবং এই জমি আসবে সরকারি ল্যান্ড ব্যাঙ্ক থেকে। পাশাপাশি আদিবাসী- বনবাসী-গরিব মানুষদের কি অবস্থা হবে তা সহজেই অনুমেয়।
তারা যে দীর্ঘ বছর ধরে বসবাস করছে সেখান থেকে উচ্ছেদ হতে হবে। বনভূমিকে কেন্দ্র করে তাদের জীবন-জীবিকাও ধ্বংস হবে।” আদিবাসী ও জঙ্গলে বসবাসকারী পরিবারগুলির একটা বড় অংশ জঙ্গলের উপর নির্ভর করে জীবন নির্বাহ করে। ফলে জঙ্গল থেকে উচ্ছেদ হলে কোথায় যাবে? সংগঠনটির অভিযোগ, কেন্দ্র ও রাজ্যে ক্ষমতাসীন কোনও সরকারই জঙ্গলে বসবাসকারী মানুষদের জন্য ভাবে নি। জঙ্গলের জমি কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিতে তারা যেন বদ্ধপরিকর। যার ফলে প্রকৃতিকে খামখেয়ালিভাবে ব্যবহার করাই জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে জঙ্গল। বন সংরক্ষণ আইন সংশোধনী বিল বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে অল ইণ্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা কমিটি।
আরও পড়ুন : জেলায় কন্যাশ্রীতে প্রথম সোনাখালি হাইস্কুল ও মেদিনীপুর সিটি কলেজ
আরও পড়ুন : পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপিকা সহ চাল
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Paschim Medinipur
– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper