পত্রিকা প্রতিনিধিঃ রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলেও কয়েকটি পঞ্চায়েতে কোণঠাসা। দল ভাঙিয়ে বোর্ড গঠন করাও যখন অস্তাচলে তখন নিজেদের ক্ষমতা তো যেভাবে হোক দেখাতেই হয়! বিধানসভা ভোটের ফলাফলের পরই রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক হিংসা চলছেই। পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur) জেলাতেও ঘটেছে একাধিক ঘটনা।
এরই মাঝে পঞ্চায়েত অফিসের কর্মচারীদের মারধরের ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে শালবনীতে (Salboni)। শালবনী ব্লকের ভীমপুর (Bhimpur) গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি (Bjp) পরিচালিত। গত পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayet Election) ১২ টির মধ্যে বিজেপি ৯ টি এবং তৃণমূল ৩ টিতে জয়লাভ করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় বিজেপি (Bjp) বোর্ড গঠন করে। তারপর থেকে পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে ক্ষোভ -বিক্ষোভ ছিলই শাসক- বিরোধীর। দুর্নীতির অভিযোগে বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরেও অভিযোগ জমা পড়েছিল। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলেও ভীমপুর ছিল বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। শালবনী (Salboni) ব্লকের দুটি পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পুণরায় ক্ষমতায় তৃণমূল। এর ফলে লালগেড়িয়া (Lalgere) বিজেপির হাত থেকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও ভীমপুরে কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না বলে সূত্রের খবর।
অভিযোগ, বোর্ড গঠন করতে না পারলেও কাজের তদারকির দায়িত্ব নিজেদের হাতে রাখতে মরিয়া ভীমপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজ নিয়ে অফিসের কর্মচারীদের হুমকি, মারধর, ওঠবোস করানোর অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত অফিসের সেক্রেটারি (Secretary), ট্যাক্স কালেকটর (Tax Collector) সহ বিভিন্ন কর্মচারীদের উপর হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন ভীমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিমান মাহাত (Biman Mahato)। তবে কর্মচারীদের করলেও বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যদের অফিসে ঢুকতে বাধা বা কোনো রকম হেনস্তা করা হয় নি বলেও জানান তিনি।
জানা গিয়েছে, ভোটের রেজাল্ট বেরোনোর কিছুদিন পর প্রথমবার হুমকির অভিযোগ দেয়। তা শালবনী ব্লক বিডিও অফিসে জানালে মীমাংসা হয় দুই পক্ষের। পরে আবার অভিযোগ ওঠে। এবার অফিস সেক্রেটারিকে (Secretsry) ওঠবোস সহ অন্যদের মারধর, এমনকি ফোনেও কাজ না করার হুমকি দেওয়া হয়। বিমান বাবু জানান, এর ফলে অফিস সেক্রেটারি প্রায় কুড়িদিনের মতো অফিসে আসেননি। নির্মাণ সহায়কদের বিক্ষোভে শালবনী ব্লক (Salboni Block) জুড়ে কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল একশো দিনের কাজ।
সূত্রের খবর, দ্বিতীয়বার বিডিও-র দরবারে গিয়ে শালবনী ব্লকের সমস্ত নির্মাণ সহায়ক সহ কর্মচারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ইয়াসের (Cyclone Yaas) দু’দিন আগে বিডিও অফিসের মিটিং-এ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের সামনেই তুমুল বিক্ষোভ দেখান তারা। ঘটনার অভিযোগ শালবনী ব্লক তৃণমূলের সভাপতি এবং জেলা শাসকের দপ্তরেও মৌখিক জানিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
অভিযোগের তীর তৃণমূল নেতা সনৎ মাহাতর (Sanat Mahata) বিরুদ্ধে। যদিও এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন তিনি । তিনি বলেন, “বিজেপির প্রধান, উপপ্রধানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পঞ্চায়েত অফিসের কর্মচারীরা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। কাজ না হলেও কুড়িটির বেশি স্কীমের টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিডিও-র (BDO) মাধ্যমে জেলা শাসকের দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছিলাম বলে আমার নামে কুৎসা রটাচ্ছে। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলে এখানে বিজেপির কেউ অভিযোগ করতে পারছে না তাদের হেনস্তা করেছি। তাই কর্মচারীদের দিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।”
ঘটনার কথা জেনেছেন শালবনী ব্লক (Salboni Block)তৃণমূল নেতৃত্বও। নিন্দা জানিয়েছেন ঘটনার। তদন্ত করে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিক চাইছেন নেতৃত্বও। চারিদিকে জানাজানি হতে আপাতত কিছুটা পিছু হটেছে ভীমপুরের (Bhimpur) তৃণমূল (Tmc) নেতৃত্ব, এমনটাই জানা গিয়েছে।