পত্রিকা প্রতিনিধি : সামনে দুর্গা পুজো। তার আগেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে সরাতে হবে হাতির পালকে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে হাতি। মেদিনীপুর সদরের গুড়গুড়িপাল এলাকায় তিরিশটি হাতির একটি পাল রয়েছে। সেই হাতির পালকে সরাতে শনিবার দুপুর থেকে চেষ্টা চালিয়ে গেলেন বন দফতরের কর্মী থেকে হুলা পার্টি। কিন্তু কতটা সফল হবেন তা নিয়ে বেশ চিন্তা ছিলেন স্থানীয় বন দফতরের কর্মীরা। পুজোর আগে হাতির পালকে অন্যত্র সরিয়ে নিজেদের পাশাপাশি এলাকাবাসীকেও স্বস্তি দিতে চেয়েছিলেন। রাত বারোটা পর্যন্ত হাতির পালকে কোনভাবে সরাতে পারে নি। অবশেষে স্থানীয় মানুষজন রাস্তা ছেড়ে বাড়ি চলে যেতেই ভোর তিনটা নাগাদ কংসাবতী নদী পেরিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলায় হাতির পালকে পাঠিয়ে কার্যত জয় হুলা পার্টির। Gurguripal Elephant, Gurguripal Elephant, Gurguripal Elephant, Gurguripal Elephant, Gurguripal, Dherua Elephant, Medinipur Elephant news, Latgest Bengali news, bengal news, biplabi sabyasachi news
আরো পড়ুন- ক্ষোভ প্রকাশ করেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান বিলকিসের
শনিবার দুপুর থেকে শুরু হয় হাতির পালকে সরানোর কাজ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাতিগুলিকে একত্রে করে। তখন সন্ধ্যা সাতটা জঙ্গল থেকে হাতিগুলিকে বের করে মনিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের পলাশিয়া গ্রামের পিচ রাস্তার কাছাকাছি নিয়ে আসে হুলা পার্টির লোকজন। হয়তো আশাবাদী ছিলেন মেদিনীপুর ধেড়ুয়া সড়ক পেরিয়ে গেলেই হাতির পালকে নদী পের করিয়ে দেওয়া যাবে। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালো রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার জনতা। হাতে টর্চ লাইট, হুলা আর প্রবল চিৎকার। সেই টর্চের আলো, হুলা দেখে এবং চিৎকার শুনে হাতি ফিরে যায় এনায়েতপুরের দিকে। সেখানেও রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে সেই হাজার হাজার জনতা। শুধু স্থানীয় নন, মেদিনীপুর শহর থেকেও এসেছেন হাতি দেখতে। রাত্রি আটটা পুনরায় হাতি জঙ্গলে প্রবেশ করে। আবার হুলা পার্টির লোকজন জঙ্গলে প্রবেশ করে। কিন্তু হাতির পাল জঙ্গলে প্রবেশ করে তার চরিত্রের বদল ঘটিয়ে ফেলে। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে, যাতে একত্র করে তাদের তাড়াতে না পারে। হাল ছাড়েনি হুলা পার্টি। ফের হাতির পালকে গুড়গুড়িপালের কাছে নিয়ে এলো। আবার হুলা পার্টির থেকে দূরত্ব তৈরি করে হাতি গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করে। হুলা পার্টির লোকজন মাঝে মধ্যে জঙ্গল ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসে জল এবং কিছু খাবার খেয়ে আবার জঙ্গলে ঢুকে পড়ছে। যদি হাতিগুলিকে কোনরকমে নদী পের করে দেওয়া যায়। তাহলে পূজায় স্বস্তি মিলবে এলাকাবাসী সহ বন দফতর সকলের।
কিন্তু স্থানীয় মানুষজন এভাবে পথ আটকালে কিভাবে সম্ভব হাতির পালকে সরানো? স্থানীয়রা কেউ রাস্তা ছাড়তে চাইছেন না, যাতে জমির ফসলের ক্ষতি না হয়। ঘটনাস্থলে গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ থাকলেও হাতির যাতায়াতের জন্য রাস্তা করে দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ। অন্যদিকে স্থানীয়দের কিছু বলতে গেলেই আক্রান্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে বনকর্মীদের। এই পরিস্থিতিতে মাঝে মাঝে বনকর্মীদের বিরক্তি লক্ষ্য করা যায়। হুলা পার্টির নেতা পিন্টু চালক বলেন, স্থানীয়দের বোঝানোর চেষ্টা করেছি, একদিন যদি ক্ষতির জন্য রাস্তা ছেড়ে না দেন, তাহলে হাতি থাকলে প্রতিদিন ক্ষতি করবে তো। তিনি আরও বলেন, হাতি তাড়াতে গিয়ে আমরা আক্রান্ত হচ্ছি। পাথর ছুঁড়ে, কটু গালিগালাজ তো আছেই, তারপরও আমরা চাই যাতে হাতির পালকে অন্যত্র সরিয়ে দিতে। তবে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করেনি বলে আক্ষেপ অনেকেরই। সামনে ভোট তাই জনসাধারণকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য কোনো কথা বলতে চাইছেন না শাসক বা বিরোধী কোনো দলই। ফলে এভাবে বাধা পেয়ে হাতি থাকছে জঙ্গলে। সরানোর চাপ বাড়ছে নীচু স্তরের বন কর্মীদের ওপর।
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi