পত্রিকা প্রতিনিধি : জেলা স্বাস্থ্য ভবনের গতকালের (মঙ্গলবারের) তথ্য অনুযায়ী, মেদিনীপুর শহরের প্রায় ৩২ জনের করোনা রিপোর্ট ‘অমীমাংসিত’ ছিল। আজ (বুধবার), পুনরায় সেগুলি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ভাইরাল ল্যাবরেটরিতে (ভিআরডিএল) টেস্ট করার পর, ১২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এল! ফলে, গত দু’দিনেই শহরে ২৯ জন করোনা আক্রান্ত হলেন। গতকালও ভোলাময়রারা চক এবং পাটনা বাজারে একই পরিবার থেকে একাধিক সদস্যের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। আজও শহরের তিনটি পরিবার থেকে মোট ৯ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে!
মেদিনীপুর শহরের মীরবাজারে অবস্থিত সিপিআইএম পার্টি অফিস সংলগ্ন এলাকায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হলেন ৪ জন। তাঁরা সকলেই একই পরিবারের সদস্য। জানা গেছে, ওই পরিবারের এক সদস্যা বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে অবস্থিত বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য ভবনে কর্মরতা ছিলেন। সম্প্রতি তিনি কোভিড সংক্রমিত হয়েছিলেন। উপসর্গহীন এই মহিলা বাড়িতেই আইসোলেশনে আছেন। এদিকে, তাঁর সংস্পর্শে আসায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা গত ৮ আগস্ট শহরের উপকণ্ঠে আয়ুশ হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসেন। গতকাল রিপোর্ট অমীমাংসিত এসেছিল, আজ রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ওই পরিবারের চারজন সদস্য ও সদস্যার বয়স যথাক্রমে, ৬২ বছরের প্রৌঢ়, ৫৭ ও ৫১ বছরের দু’জন প্রৌঢ়া এবং ২৫ বছরের এক তরুণী। তবে, তাঁরাও সকলে উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত। অন্যদিকে, বল্লভপুরের করাতিপাড়া (১৭ নং ওয়ার্ড) এলাকার এক মুদি দোকানের মালিক ও তাঁর ভাইপো করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মুদি দোকানের ওই মালিক (৪৮) গত কয়েকদিন ধরেই শুকনো কাশিতে ভুগছিলেন। সাধারণ ওষুধপত্রে কাজ না করায়, তাঁর স্বাস্থ্যকর্মী স্ত্রী’র (খড়্গপুরে কর্মরতা এবং সেখানেই সরকারি আবাসনে থাকেন) পরামর্শে তাঁরা কোভিড টেস্ট করান। কাকা ও ভাইপো (দু’জনে মিলেই দোকান সামলান) দু’জনের রিপোর্টই পজিটিভ এসেছে। ওই ব্যক্তির শরীরের অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ১৩-১৪ দিন দোকানও বন্ধ রেখেছিলেন। শহরের অপর পরিবার, মিঞাবাজারের ইব্রাহিমসা বাবার মাজারের সামনে হিলু মিঞা’র গলির ভেতরের বাসিন্দা, যাঁদের ৩ জন্য সদস্য ও সদস্যা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আরো একজনের রিপোর্ট এখনো আসেনি, তাঁর রিপোর্টও পজিটিভ আসার আশঙ্কা করছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। কারণ, এখনো রিপোর্ট না আসা ব্যক্তিই সম্প্রতি রাঁচি থেকে ফিরেছেন। তাই, পরিবারের সকল সদসই কোভিড টেস্ট করানোর জন্য আয়ুশে গিয়ে লালারস দিয়ে আসেন গত ৮ আগস্ট। তিনজনের (২৭ ও ৫৫ বছরের পুরুষ, ৩৮ বছরের মহিলা) রিপোর্ট পজিটিভ এলেও, ওই ব্যক্তির রিপোর্ট আসেনি। তবে, সকলেই উপসর্গহীন এবং হোম আইশোলেশনে আছেন বলে জানা গেছে।
শহররে শরৎপল্লীর এক মহিলা (৩৫)’র রিপোর্ট আজ পজিটিভ এসেছে। তবে, তাঁর স্বাস্থ্যকর্মী স্বামী (খড়্গপুরের চাঙ্গুয়াল স্বাস্থ্যকেন্দ্র)’র রিপোর্ট নেগেটিভ, ও তাঁদের মায়ের রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছ। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজ করার জন্য পরিবারের সবার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে কোভিড পরীক্ষার জন্য পাঠালে বুধবার রাতেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। মেদিনীপুর শহরতলীর আরো দু’জনের করোনা রিপোর্ট এদিন পজেটিভ এসেছে। ৪৫ বছরের এক মহিলা ও ২২ বছরের এক যুবক। তবে, তাঁদের সম্পর্কে বিশদ কিছু জানা যায়নি।