পত্রিকা প্রতিনিধি : ঘাটাল মহকুমার প্রথম করো না আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে । এই নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ঘাটালে দ্বিতীয় করোনা রোগীর মৃত্যু হল । মৃত ব্যক্তির নাম তারক বেরা (৪৫)। ওই ব্যক্তির বাড়ি দাসপুর থানার নবীন শিমুলিয়া তে। উত্তরপ্রদেশে তিনি সোনার কাজ করতেন। মৃত ওই পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়ি ফেরার সময় লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয় ।কিন্তু সেই রিপোর্টে রোগীর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।বাড়ি ফেরার প্রথম দিন থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর প্রথমে তাকে ঘাটালের সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান এবং পরে ঘাটাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘাটাল হাসপাতাল তাকে মেদিনীপুর করোনা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে । গত ৩ জুন মেদিনীপুর যাওয়ার পথে তিনি মারা যান । শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়ায় নিয়মমতো পুনরায় তার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মৃত্যুর পরেই তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সরকারি বিধি মেনে পরিবারের হাতে মৃতদেহ তুলে না দিয়ে তার সতকারের দায়িত্ব নেয় জেলা প্রশাসন ।
জানা গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের স্বর্ণ শিল্পীর কাজ করতেন ওই ব্যক্তি। লকডাউন এর মধ্যেই আর পাঁচজনের মতো বাস ভাড়া করে বাড়ি ফিরছিলেন ওই ব্যক্তি ।গত ২১ মে জেলায় প্রবেশের সময় হিজলি গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে লালারসে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ওই পরিযায়ী শ্রমিকের।
শুক্রবার সকালেই তারকের পরিবারের ৮ জনকে নিয়ে এসে মেদিনীপুর শহরের করোনা হাসপাতাল আয়ূসে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সকালে পুরো বাড়িটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে ।অন্যদিকে ওই এলাকাজুড়ে কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয় স্বাস্থ্য দপ্তর ও পুলিশ প্রশাসনের তরফে । এর আগে গত ২৯ মে জেলায় করোণায় প্রথম মৃত্যু হয় খড়গপুর শহরের এক ব্যক্তির (৪৫)। শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হবার পরেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল পরিবার সূত্রে জানানো হয় ওই ব্যক্তি কোথাও না গিয়ে করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন ।
বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার রিপোর্ট অনুযায়ী দাসপুর ১ ব্লক এর সুর নারায়নপুর একজন , গোপিনাথপুরের একজন,বাড়কাসেমপুরের একজন, চন্দ্রকোনা থানার একজন জাড়াহাটপুকুরের একজন করোণায় সংক্রমিত হয়েছেন ।এছাড়াও কেশপুর ,মেদিনীপুর সদর ব্লক , চন্দ্রকোনা ও গড়বেতায় মোট ৯ জনের নতুন করে সংক্রমণ হয়েছে । এরমধ্যে কেশপুরের তিনজন, মেদিনীপুর সদর ব্লকের দুজন, গড়বেতায় তিনজন ও চন্দ্রকোনায় একজনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
করোনা থেকে সুস্থ হয়ে দুই মেদিনীপুর জেলার ৯ জন।
অপরদিকে করোনা থেকে সুস্থ হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৮ জন ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১
জন রোগী।এই ৯ জন রোগী পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া বড়মা করোনা হসপিটালে ভর্তি থাকার পর দুবার এদের সবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে,তাই এদের সবাইকে শুক্রবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।তাছাড়া করোনা থেকে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি আক্রান্ত রোগীরা।
এদিন বড়মা হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আফজল শাহ বলেন, বড়মা হাসপাতালে এই মুহূর্তে প্রায় আটানব্বই জন ভর্তি আছে, সংখ্যাটা আরো বাড়তে পারে। ভিন রাজ্যে কর্মরতরা বাড়ি ফেরায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বাড়ছে। তিনি আরো বলেন, এই হাসপাতালে যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে এসেছেন প্রত্যেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। হাসপাতালের ডাক্তার, সিস্টার, স্বাস্থ্যকর্মী, সুপারভাইজার প্রত্যেকের আন্তরিক চেষ্টায় আমরা এই জায়গায় আজ পৌঁছতে পেরেছি। অবিভক্ত মেদিনীপুর অধুনা পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা এই হাসপাতালে করা হচ্ছে ।