৩২ তম বর্ষ, ২৯৮ সংখ্যা, ৩ জুন ২০২০, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক ভাল কাজের মধ্যে আরও একটা ভাল কাজ করলেন। ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত, দুর্গত মানুষজনের খাওয়া পরা নিশ্চিত করতে নগদ টাকা তুলে দিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ভয়ঙ্কর উম্পুনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ, জল রাস্তা সহ সামাজিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন সহ বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ২৯ মে ৬২৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ। এর মধ্যে ২,৯০০ কোটি টাকাই নগদ সাহায্যের জন্য। রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ খুবই বাস্তবোচিত সন্দেহ নেই। বর্তমান সময়ে কোটি কোটি দুর্গত মানুষের জন্য এটাই আপাতত তাঁদের বিপন্মুক্ত করে তোলার জন্য একমাত্র পথ বলে বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদরা মত প্রকাশ করেছেন। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বিশেষত ভয়ঙ্কর মহামারি করোনার লকডাউনে কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষ। বভুক্ষু কোটি কোটি পরিযায়ী শ্রমিক যাঁরা খিদের যন্ত্রণায় কাতর, পরিবারগুলি দরিদ্র-জর্জরিত, তাঁদের জন্য ১০ হাজার টাকা করে নগদ দেওয়ার জোরালো মত প্রকাশ করেছেন। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এই সব মানুষদের কাছে এখনই এই পরিমাণ টাকা দেওয়া উচিৎ। এতে করে তাঁরা এই টাকা দিয়ে সংসার প্রতিপালনে বাজারে জিনিস কিনতে পারবেন। এতে থমকে যাওয়া বাজারও কিছুটা চাঙা হয়ে উঠবে। কিন্তু ঘটনা হল, অর্থনীতিবিদ বা বিরোধী দলগুলির মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকার নগদ টাকা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় নি। করোনা পরিস্থিতির সামাল দিতে ২০ লক্ষ কোটি টাকার যে প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কোনও বরাদ্দ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানেই কেন্দ্রের থেকে এগিয়ে। তাই সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও ঝড়ে দুর্গতদের জন্য নগদ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন। করোনার পর এই ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়। যে ঝড়ে রাজ্যে প্রায় ৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য নগল ২৯০০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা অর্থনীতিবিদদের মতামতের অনুসারি বলা চলে। এক্ষেত্রে অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাবকেও গুরুত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এজন্যই বলা হয় বিভিন্ন দিক থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের চেয়ে এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ।