Home » Paschim Medinipur : বাঁকুড়ায় খাঁচাবন্দী বাঘিনী, পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূল নেতার ফুল-মিষ্টিতে কি বাঘ ‘খুনে’ অধরা দোষীরা!

Paschim Medinipur : বাঁকুড়ায় খাঁচাবন্দী বাঘিনী, পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূল নেতার ফুল-মিষ্টিতে কি বাঘ ‘খুনে’ অধরা দোষীরা!

by Biplabi Sabyasachi
0 comments

বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ঘুরে অবশেষে বাঁকুড়ায় বন্দি বাঘিনী ‘জিনাত’। সাড়ে ছয় বছর আগে পশ্চিম মেদিনীপুরে শিকারিদের হাতে ‘খুন’ হয়েছিল এক পূর্ণ বয়স্ক বাঘকে। সেই বাঘ খুনে অভিযুক্তরা আজও অধরা। তবে এখনো গুঞ্জন রয়েছে, সেই সময় শাসক দল তৃণমূলের ফুল-মিষ্টির জন্যই নাকি অধরা খুনিরা! তবে সেদিনের ঘটনা আজও ভুলতে পারেনি তারা। ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল মেদিনীপুর সদর ব্লকের গুড়গুড়িপাল থানার বাঘঘরার জঙ্গলে খুন হতে হয়েছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে।

আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ

ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :

For WhatsApp Group 1: Click Here

For WhatsApp Group 2: Click Here

নিজস্ব চিত্র

ওইদিনই বাঘের আক্রমণে জখম হন ওই গ্রামের বাসিন্দা বাবলু হাঁসদা ও বাদল হাঁসদা। তাদের ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। থানায় এফআইআর করে বনদপ্তর বাবলু ও বাদলের নামে। তাদের দেখতে হাসপাতালে ফুল-মিষ্টি নিয়ে হাজির হন তৎকালীন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। বাদল স্বীকার করেছিলেন তাঁকে দশ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন অজিত মাইতি। সামনেই ছিল পঞ্চায়েত ভোট। ফলে এর প্রভাবে ভোট বাক্সে যাতে না পড়ে তারই কি পরিকল্পনা ছিল? তবে এখনো গুঞ্জন রয়েছে, ভোটের আগে যাতে তাদের গ্রেফতার না করা হয়, তার চাপ তৈরি করা হয়েছিল শাসকদলের পক্ষ থেকে।

তবে সেই বাঘ খুনে অভিযুক্ত বাদল ও বাবলু আজও আফসোস করে। তাদের শরীরে বাঘের আঁচড় দেখে আজও আঁতকে উঠে। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রথম বাঘের উপস্থিতির খবর শোনা যায় শালবনীর মধুপুর এলাকায়। জঙ্গলে চরতে যাওয়া কয়েকটি গরু কোন অজানা প্রানীর আক্রমণে আহত হয়। এই ঘটনা বাঘের দ্বারা বলে প্রচার শুরু হয়ে যায়। অনেকে আবার নেকড়ে বা হায়না হতে পারে বলে সন্দেহ করেন। পরে বিভিন্ন এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়ার খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক। জঙ্গল লাগোয়া স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই পরিস্থিতি সামাল দিতে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ লালগড়ের জঙ্গলে বসানো হয় সাতটি ট্র্যাপ ক্যামেরা।

নিজস্ব চিত্র

২ মার্চ লালগড়ের মেলখেড়িয়ার জঙ্গলে বসানো একটি ক্যামেরায় ধরা পড়ে বাঘের ছবি। তারপরই এলাকায় বাঘ দেখার একদিকে উৎসাহ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি আতঙ্কও বাড়ে মানুষের মধ্যে। সূর্য ডোবার আগেই বাড়ি ফেরার ধুম লেগে যায়। ৩ মার্চ বাঘ ধরার জন্য সুন্দরবন থেকে নিয়ে আসা হয় খাঁচা ও বিশেষজ্ঞ টিম। যেখানে বাঘের ছবি ধরা পড়ে তার আশেপাশে ছাগলের টোপ দিয়ে বসানো হয় খাঁচা। খাঁচার কাছ থেকে বাঘ ফিরে গেলেও ধরা দেয়নি ছাগলের ফাঁদে। তারপর থেকে বিভিন্ন এলাকায় মিলতে শুরু করে বাঘের পায়ের ছাপ। এমনকি মেদিনীপুর শহরের কাছে মুড়কাটার জঙ্গলেও মেলে পায়ের ছাপ। ৮ মার্চ সেনাবাহিনীর সাহায্য নিয়ে বাঘের খোঁজে আকাশে উড়ানো হল ড্রোন ক্যামেরা। দেখা মিলল না মহারাজের।

১৩ মার্চ বাঘের উপর নজরদারি রাখতে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় ঐরাবত গাড়ির ভেতরে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় অমল চক্রবর্তী ও দামোদর মুর্ম্মু নামে দুই বনকর্মী। সবরকম চেষ্টা করেও বাঘ ধরতে ব্যর্থ হয় বনদপ্তর! ৩০ মার্চ মেদিনীপুর বনবিভাগের চাঁদড়া রেঞ্জের বাঘঘরার জঙ্গলে একটি সিমেন্টের সেচ পাইপের ভেতরে বাঘ থাকার খবর পেয়ে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেন বনকর্মীরা। কিন্তু বাঘ বেরিয়ে এসে গর্জন দিতেই জাল ফেলে দৌড় লাগালো বনকর্মীরা। ক্রিকেটে একটা প্রবাদ আছে, “ক্যাচ মিস মানে ম্যাচ মিস।” আর তাই হলো। সেইসময় জঙ্গলমহল জুড়ে চলছে শিকার উৎসব। ১৩ এপ্রিল বাঘঘরার জঙ্গলে ছিল শিকার করার দিন।

আরও পড়ুন : ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নামলো পুলিশ ও পৌরসভা

আরও পড়ুন : বনদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই মহিলা কলেজে গাছ কেটে পরিবহনের অভিযোগ

আর ওখানেই শিকারিদের বল্লামের খোঁচায় প্রাণ হারালো বাঘটি। তারপরই বনদপ্তরের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। সাড়ে ছয় বছর অতিক্রান্ত হলো বাঘের মৃত্যু। বাঘ মৃত্যুর প্রায় দেড় বছর পর সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে ব্যাঘ্র নিরাপত্তা বিষয়ক দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় দফতর। বাঘ মৃত্যুর ঘটনাস্থলও ঘুরে দেখেন। বাঘের নিরাপত্তায় বনদফতরের ভূমিকা নিয়েও অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছিলেন। তারপর থেকে তদন্ত কত দূর এগিয়ে বা কি রিপোর্ট জমা দিয়েছে তা জানা যায় নি।নতুন করে ডিসেম্বর মাসে উড়িষ্যা থেকে একটি বাঘ প্রবেশ করে ঝাড়গ্রামে।

ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া হয়ে বাঁকুড়ায় প্রবেশ করে। অবশেষে ঘুমপাড়ানি গুলি করে তাকে খাঁচা বন্দি করতে সক্ষম হয় বনদপ্তর। বনকর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন পশু প্রেমিরাও। বাঁকুড়ায় বাঘ বন্দী হলেও পশ্চিম মেদিনীপুরে বাঘ খুনে অভিযুক্তরা আজও অধরা। থানায় এফআইআর হলেও কেন গ্রেফতার করা গেল না সাড়ে ছয় বছরে? তা নিয়েও উঠছে নানা প্রশ্ন। তবে বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সেই সময় পঞ্চায়েত নির্বাচন থাকায় দোষীদের গ্রেপ্তার না করার চাপ ছিল শাসকদলের পক্ষ থেকে।

আরও পড়ুন : ইসরোর দরবারে পিংলার সৌম্যদীপ! ভবিষ্যতে স্বপ্ন গবেষণার

আরও পড়ুন : পুরোনো মামলায় বিজেপির একাধিক নেতা কর্মীর বাড়িতে অভিযান পুলিশের

লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi

Paschim Medinipur

– Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper

You may also like

Leave a Comment

Adblock Detected

Please support us by disabling your AdBlocker extension from your browsers for our website.