পত্রিকা প্রতিনিধি: শেষ ৭২ ঘন্টায় শহরে করোনার দুর্দান্ত ব্যাটিং চলায় এক ধাক্কায় শহরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩। এবার মারণ ভাইরাসের থাবা পড়ল জেলা দায়রা ও জজ আদালতে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আদালতের এক কর্মীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ালো আদালত প্রাঙ্গণে।
মেদিনীপুর জর্জ কোর্টের এক গ্রুপ ডি কর্মীর করোনা আক্রান্তের ঘটনায় আতঙ্ক দেখা যায় জর্জ কোর্টের কর্মিদের।আক্রান্তের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়নগড় থানার নারমা এলাকায়।নারায়নগড় থানার অধিন দ্বিতীয় করোনা আক্রান্তের খবর মেলায় আতঙ্ক দেখা যায় নারায়নগড় বাসীর মধ্যে।প্রতিদিন বাড়ি থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার বাইকে করেই অফিস যাতায়াত করেন একান্ন বছর বয়সী ওই ব্যক্তি।জানা গেছে ওই ব্যক্তি অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে বৃষ্টিতে ভেজা থেকে জ্বর আসে।দুদিন জ্বর হওয়ার পর করোনা রিপোর্ট করা হলে পজিটিভ আসে।
প্রসঙ্গত মেদিনীপুর জর্জ কোর্টের চতুর্থ শ্রেনীর ওই কর্মী কাজ করতেন কম্পিউটার বিভাগে।যেখানে কর্মরত থাকতে প্রায় পাঁচজন কর্মী।প্রতিদিনের মতো ২১ তারিখ নিজের বাইকে করে বাড়ি আসেন নারায়নগড়ের নারমার বাসিন্দা,জর্জকোর্টের ওই কর্মী।বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরলে সামান্য করোনা উপসর্গ দেখা দেয়।পরের দিন পর্যন্ত থাকে জ্বর কাশি।২১ তারিখ বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরলে জ্বর অনুভব হওয়ায় এলাকার এক হাতুড়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ও খান ওই ব্যক্তি।দিন কয়েক পর ২৮ শে জুলাই ফের অফিসে গেলে কোর্টের এক আধিকারিকের নির্দেশ ক্রমে করোনা পরীক্ষা করান তিনি।
তার পরে জ্বর কেটে গেলে উপসর্গহীন ওই ব্যক্তির বেলদা গ্রামীন হাসপাতালে ২৯ শে জুলাই করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ হলে ৩১ তারিখ সন্ধ্যা নাগাদ রিপোর্ট পজিটিভ আসে।স্বাস্থ্য দপ্তর ও পুলিশের সহযোগিতায় চিকিৎসার কারণে ওই ব্যক্তিকে পাঠানো হয় ডেবরা করোনা হাসপাতালে।ওই আক্রান্ত কর্মীর বাড়ি সহ পাড়া সিল করে কনটেইনমেন্ট জোন করে দেওয়া হয়।সুত্রের খবর ওই ব্যক্তির স্ত্রী সহ পরিবারের পাঁচজন এখন হোম আইসোলেশনে।যদিও তাদের কোন উপসর্গ নেই।এখনও স্থিতিশীল ওই ব্যক্তি।সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় সকলে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর রাজকুমার দাস জানিয়েছেন, ‘গত মঙ্গলবার তাঁর অফিসের ওই কর্মী জ্বর গায়ে অফিসে আসেন। তাতে অফিসের অন্যান্য কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে ওই কর্মীর লালারসের নমুনা করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেই নমুনার রিপোর্ট পজেটিভ আসে।রাজকুমার বাবু জানিয়েছেন, তিনিসহ মোট ১৩ জন আপাতত হোম কোয়ারান্টাইনে আছেন। স্যানিটাইজ করা হয়েছে গোটা কোর্ট চত্ত্বর। সিল করে দেওয়া হয়েছে ওই এলাকা। স্বভাবতই আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা ঘটনায়।’
মেদিনীপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আইনজীবি মৃণাল কান্তি চৌধুরি জানান,’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও হাইকোর্টের জোনাল ইনচার্জের আদেশানুসারে মেদিনীপুর জেলা আদালতে এক কর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সব কাজকর্ম স্থগিত রাখা হয়েছে আগামী ৭ দিনের জন্য।”