বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন: জন্ম থেকেই দু হাত ছোট, হার্টে ফুটো , পায়ে লিখে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা, হাজার প্রতিকূলতার মধ্যেও তার প্রাপ্ত নম্বর ৩৪০ সবং-এর কল্যাণের। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার বলপাই গ্রামে ছিটে বেড়ার একটি ছোট ঘরে বড় হচ্ছে এক অনুপ্রেরণার নাম—কল্যাণ বেরা। বলপাই পশুপতি সুরেন্দ্র বিদ্যাপীঠের ছাত্র কল্যাণ এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পেয়েছে ৩৪০ নম্বর। কিন্তু নিজের এই ফলাফলে সে মোটেই খুশি নয়। তার আশা ছিল ৪০০-র বেশি নম্বর পাওয়ার, তাই রিভিউয়ের জন্য আবেদন করতে চায় সে।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :
For WhatsApp Group : Click Here

কিন্তু সংখ্যার চেয়েও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে তার সংগ্রামের কাহিনি। জন্ম থেকেই দুই হাত ছোট, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার প্রতিদিনের সঙ্গী। স্কুলের খাতায় কলমে প্রতিবন্ধী হলেও, মন থেকে সে সম্পূর্ণ সুস্থ একজন স্বপ্নবান তরুণ। দু’পা দিয়েই সে লিখেছে গোটা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা।
আরও পড়ুন : রাস্তা তৈরির দাবিতে পথ অবরোধ, জেলা সভাধিপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ

স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ারিং পাওয়ার। পা দিয়েই স্নান করা খাওয়া। পা দিয়ে ল্যাপটপ টাইপ। কখনো কল্যাণ মনে করে না সে একজন প্রতিবন্ধী। হাটে রয়েছে ফুটো, তার কারণে পরীক্ষার আগে একবার জ্ঞানও হারিয়েছে।
আরও পড়ুন : স্বাক্ষর করতে জানে না বাবা-মা, বিড়ি বেঁধে চলে সংসার, কলা বিভাগে চমকে দেওয়া রেজাল্ট করেও উচ্চশিক্ষার দরজা বন্ধের আশঙ্কা সৌমেনের

কলকাতার ডাক্তারবাবুরা জানিয়েছেন অপারেশন করতে হবে। কিন্তু সবকিছুকে উপেক্ষা করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে ছিল কল্যাণ। এখনও পর্যন্ত চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি অভাবের কারণে।
আরও পড়ুন : দিনমজুরের মেয়ে! উচ্চ মাধ্যমিকে সাঁওতালি ভাষায় রাজ্যে প্রথম ঝাড়গ্রামের মিনতি

কল্যাণ জানায়, শারীরিক যন্ত্রণা ছিল, কিন্তু মনের শক্তিকে ভাঙতে দেয়নি। পরীক্ষা চলাকালীন অনেক সময় সে অসুস্থতা বোধ করেছে, তবু হাল ছাড়েনি। নিজের সীমাবদ্ধতা মেনে না নিয়ে, প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে গেছে সে।
আরও পড়ুন : টিউশন ছাড়াই সাফল্য! উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে পঞ্চম মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশনের বীরেশ

তার মা সুচিত্রা বেরা গৃহবধূ এবং বাবা একজন দিনমজুর। দৈনিক আয়ে কোনওরকমে চলে সংসার। ছেলেকে স্কুলে পাঠানো, খাতা-কলম কিনে দেওয়া, চিকিৎসা—সবই একটা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ছেলের চোখের জেদ আর স্বপ্ন দেখে তাঁরা হাল ছাড়েননি।
আরও পড়ুন : প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মাধ্যমিকে সফল! চিকিৎসক হওয়াই লক্ষ্য পিংলার সঞ্জনার

কল্যাণের এখন একটাই লক্ষ্য—ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। সে চায় মেশিনের জগতে পা রেখে নতুন কিছু তৈরি করতে, নিজের মতো আরও অনেক প্রতিবন্ধী মানুষের পাশে দাঁড়াতে।
আরও পড়ুন : গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়িয়ে বিজেপির কর্মসূচিতে মেদিনীপুরে রাহুল সিনহা

আরও পড়ুন : বালি বোঝাই ট্রাক্টর আটকে বিক্ষোভ, বালি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ

তবে বড় প্রশ্ন—এই প্রতিভাবান ছাত্র কি তার স্বপ্নপূরণের পথে এগোতে পারবে? আর্থিক অসচ্ছলতা, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সে কি পৌঁছতে পারবে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের গেট পর্যন্ত? সমাজ, সরকার, বা কোনো সহৃদয় ব্যক্তি কি এগিয়ে আসবে তার পাশে?
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Disabled success
Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspaper