পত্রিকা প্রতিনিধি: কথা ছিল করোনা সতর্কতার জেরে চলতি বর্ষে কোথাও জমায়েত করে উদযাপন করা হবে না স্বাধীনতা দিবস। এমনকী জেলাশাসকের কার্যালয়ে গুলিতেও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে কুচকাওয়াজের মতো অনুষ্ঠান। সেখানে একেবারেই ভিন্ন চিত্র পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায়। রীতিমতো অরকেস্টার করে ভিড় জমিয়ে উদযাপন করা হল স্বাধীনতা দিবসের সমারোহ। মাঝরাত অবধি তারস্বরে মাইক বাজিয়ে চলল নাচাগানা। মুখে মাস্ক কিংবা সামাজিক দূরত্বের বালাই না করেই অনুষ্ঠান শুনতে ব্যস্ত এলাকাবাসী। ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা বাজার। ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন মঞ্চে ডেবরার বিধায়ক সেলিমা খাতুনের উপস্থিতিতে সন্ধ্যে থেকেই শুরু হয়ে যায় অনুষ্ঠান পর্ব। রাত যত বেড়েছে ততই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভিড়। কোনও সামাজিক দূরত্ব বিধি মানার বালাই চোখে পড়েনি এদিন।
যেখানে নিত্য দিন হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, সেই ডেবরায় কী ভাবে অনুষ্ঠানের অনুমতি দিল পুলিশ! প্রশ্ন তুলেছে শাসক শিবিরেরই একাংশ। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধী শিবিরও। জেলা বিজেপির সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের দাবি, যত নিয়ম সবই বিজেপির জন্য, শাসকের দলদাসে পরিণত হয়েছে পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ পেটে বিধায়ক সেলিমা খাতুন বিবি ও উদ্যোক্তারা।
করোনা সংক্রমণের জেরে ডেবরার বেশ কয়েকটি এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। সেই কন্টেনমেন্ট জোনের তালিকায় রয়েছে ডেবরা বাজার সংলগ্ন এলাকাও। হরি কন্টেনমেন্ট জোনের ঠিক একশো মিটারের মধ্যেই স্বাধীনতা দিবসের রাতে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে অরকেস্ট্রা আযোজন করা হয়। যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে চরম বিতর্কে জড়িয়েছে ডেবরার বিধায়ক সেলিমা খাতুন বিবিও। এ বার আরও অস্বস্তি বাড়িয়ে ডেবরার বিধায়কের বিরুদ্ধে মুখ খুলল দলের দাপুটে নেতা তথা ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধক্ষ্য অলোক আচার্য। ঘটনা প্রসঙ্গে রবিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন , দল ক্ষমতায় আছে বলে যা ইচ্ছে করব এমন মনোভাব আসলে মানুষের জনসমর্থন থেকে দলকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার একটা চক্রান্ত। যেই আয়োজন করে থাকব না কেন একশ শতাংশ ভুল করেছেন।
প্রসঙ্গত অলোক আচার্য ও সেলিমা খাতুন বিবির গোষ্ঠীকোন্দল ডেবরায় অতিপরিচিত। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানকে ঘিরে বিতর্কের মাঝে সেই কোন্দল আরও প্রকট হয়ে উঠল বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ।
অন্যদিকে ডেবরার স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কন্টেন্ট জন ভেঙেই শনিবার রাতে অনুষ্ঠান শুনতে এসেছিল কন্টেনমেন্ট জোনের মধ্যে থাকা বেশ কয়েকজন। রবিবার সকাল থেকেই নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।চাপে পড়ে বিধায়কের সাফাই, হাতে গোনা জন ২০ছিল ওই অনুষ্ঠানে। বিধায়কের রাজনৈতিক কেরিয়ার কালিমালিপ্ত করার লক্ষ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে দাবি করেন সেলিমা খাতুন বিবি।সব মিলিয়ে এখনও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ডেবরার অর্কেস্ট্রো।