বিপ্লবী সব্যসাচী পত্রিকা অনলাইন : জঙ্গলই জঙ্গলমহলের একাংশ মানুষের রুজিরুটি। সেই জঙ্গল ধ্বংস হয়ে গেলে তাদের উপার্জনে টান পড়তে শুরু করবে। উপার্জনে তাদের সব থেকে বেশি সাহায্য করে শাল গাছ। শাল গাছের পাতা, ফল, ধুনো, কাঠ বিক্রি করেও অনেকে দিনযাপন করেন। সেই শাল গাছের জঙ্গল গত তিন দশকে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় ৭৫ হাজার হেক্টরের বেশি উধাও— এমনই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে এক গবেষণায়। রাজা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের শিক্ষক প্রভাত কুমার সিটের তত্ত্বাবধানে গবেষণায় উঠে আসে, ১৯৯২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই দুই জেলায় ঘন শাল বনভূমির পরিমাণ কমেছে ৭৫০২৯ হেক্টর। এই বন উজাড়ের ফলে ০.০৩৮ গিগা টন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ বেড়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন… প্রতি মুহূর্তের লাইভ খবরের আপডেট পেতে ফলো করুন বিপ্লবী সব্যসাচী নিউজ
ঝটিতি খবর পেতে আমাদের WhatsApp গ্রুপে জয়েন করুন :
For WhatsApp Group : Click Here

আরও পড়ুন : ৫৫০ বাদুড় মেরে বনদপ্তরের জালে খড়্গপুরের চারজন
উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ ও মাঠ পর্যায়ের সমীক্ষার মাধ্যমে মেদিনীপুর, খড়্গপুর, রূপনারায়ণ ও ঝাড়গ্রাম বনবিভাগে বনভূমির ঘনত্ব, স্বাস্থ্য ও স্থানীয়দের নির্ভরশীলতা খতিয়ে দেখেন গবেষকরা। তাঁরা জানান, একটি পূর্ণবয়স্ক ২০–২৫ বছর বয়সী শালগাছ বছরে গড়ে ১ লক্ষ লিটার অক্সিজেন দেয়। যার দৈনিক হিসেব প্রায় ২৭৪ লিটার। অথচ বন দপ্তরের বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গির ফলে শালজঙ্গলের জায়গায় লাগানো হচ্ছে ইউক্যালিপটাস, আকাশমনি, সোনাঝুরির মতো বিভিন্ন গাছ। যেগুলি বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর। এই পরিস্থিতির সরাসরি প্রভাব পড়ছে আদিবাসী জনজাতিদের জীবিকায়। গবেষণায় বলা হয়েছে, শালপাতা, কেন্দুপাতা, মহুল, ছাতু ও জ্বালানির কাঠ সংগ্রহ করে বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে। বন উজাড় হওয়ায় তাঁদের জীবনধারায় টান পড়ছে। তবে অনেকেই মনে করছেন জঙ্গলমহলে মাওবাদী পর্বে সবচেয়ে বেশি ধ্বংস হয়েছে জঙ্গলের গাছ।

আরও পড়ুন : বাংলাদেশী সন্দেহে উড়িষ্যার থানায় এখনও বন্দী রয়েছেন চন্দ্রকোনার শেখ হানিফ আলী
শুধু বন উজাড়ই নয়, যৌথ বন পরিচালন কমিটিতে মহিলাদের অংশগ্রহণও কম। বন বাঁচাতে মহিলাদের অংশগ্রহণও প্রয়োজন বলে মনে করেন গবেষক। গবেষক দলের প্রধান প্রভাতকুমার সিট জানিয়েছেন, ‘বন সুরক্ষা আইনে রয়েছে বন সুরক্ষা কমিটিগুলিতে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ অংশগ্রহণ থাকা বাধ্যতামূলক। তা মানা হচ্ছে না। মহিলাদের অংশগ্রহণ বেশি থাকলে, জঙ্গল থেকে উপার্জন কত হচ্ছে, তাঁরা কত পাচ্ছেন, জঙ্গলকে বাঁচিয়ে রাখলে তাঁদের কী লাভ— সব জানতে পারবেন।

আরও পড়ুন : শিলাবতী নদীর জলস্তর বেড়ে ফের প্লাবিত হচ্ছে ঘাটাল পৌর ও গ্রামীণ এলাকা।
মহিলারাই জঙ্গলে বেশি সময় কাটান। তাই জঙ্গল রক্ষার ব্যাপারে তাঁদেরই বেশি সচেতন করা প্রয়োজন। এমন নানা কারণেই বন সুরক্ষা কমিটিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ বেশি প্রয়োজন।’ ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম বনবিভাগে মহিলাদের অংশগ্রহণ মাত্র ৬ শতাংশ, রূপনারায়ণ বিভাগে ৩.৮৭ শতাংশ, খড়গপুরে ৫.১৮ শতাংশ এবং মেদিনীপুরে ৫.৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে ২৫৮ জন কমিটি সদস্যের মধ্যে ৯৪.৭৮ শতাংশ পুরুষ এবং সভায় মহিলাদের নিয়মিত উপস্থিতি মাত্র ৩.১৩ শতাংশ। এক বন আধিকারিক বলেন, ‘পুরোনো কমিটিগুলিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ কম থাকলেও বর্তমানে নতুন কমিটি গঠনে নিয়ম মেনে মহিলা সদস্য রাখা হচ্ছে। তাঁদের আরও বেশি করে উৎসাহিত করা হচ্ছে বন সুরক্ষায় অংশ নিতে।’
লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/biplabisabyasachi
Forest loss
Biplabi Sabyasachi Largest Bengali Newspape