পত্রিকা প্রতিনিধি: জেলা স্বাস্থ্য ভবনের শুক্রবারের রিপোর্ট অনুযায়ী মেদিনীপুর শহরে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২২ জন। অত্যন্ত, তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ২১ জনের মধ্যে ১০ জনই করোনা যোদ্ধা অথবা তাঁদের পরিবারের। পুলিশ লাইনে কর্মরত ২ জন পুলিশকর্মী (৩০ ও ৩২) এবং ৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশ কর্মীরা করোনা আক্রান্ত অন্য পুলিশ কর্মীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তবে, প্রত্যেকেই স্বল্প উপসর্গ যুক্ত। অন্যদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ১ জন চিকিৎসক, ৩ জন জুনিয়র চিকিৎসক ও ইন্টার্ন এবং ২ জন নার্স করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগজনই উপসর্গহীন, তবে একজন নার্সের (২৫) সামান্য জ্বর হয়েছিল বলে জানা যায়। ইদানীং তিনি স্বাদ-গন্ধও হারিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও, জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন সঙ্গতবাজারের এক গৃহবধূ (৩৩) করোনা সংক্রমিত হয়েছেন এদিন, তিনি হাসপাতালের একজন গ্রুপ ডি কর্মী বলে জানা গেছে। তাঁর পরিবারের অন্য এক সদস্যাও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের নার্স তথা করোনা যোদ্ধা। তবে, তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু, আক্রান্ত ওই মহিলার সম্প্রতি জ্বর হয়েছিল বলে জানা গেছে এবং ইদানিং জ্বর কমে গেলেও মুখে কোনো স্বাদ পাচ্ছিলেন না বলে জানা গেছে পরিবার সূত্রে। অন্যদিকে, মহতাবপুরের এক মহিলাও (৩৩) করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁর স্বামী মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের একজন স্বাস্থ্যকর্মী বলে জানা গেছে। অন্যান্য উপসর্গ না থাকলেও তিনি বেশ কিছুদিন কোনো গন্ধ পাচ্ছিলেন না বলে জানা গেছে। মহতাবপুরের অন্য এক মহিলার (৩৬) করোনা রিপোর্টও এদিন পজেটিভ এসেছে। উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি মহতাবপুর এলাকা থেকে একাধিক ব্যক্তি করোনা সংক্রমিত হয়েছেন।
শুক্রবাররের রিপোর্টে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন একাধিক ব্যবসায়ীও। স্কুলবাজারের বাসিন্দা, এক প্রৌঢ় (৭৫) এদিন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, বটতলাচকে তাঁর ওষুধ দোকান আছে। গত তিন দিন আগেও তিনি ওষুধ দোকানে বসেছিলেন বলে জানা যায় বিশ্বস্ত সূত্রে। তবে, দু-তিন দিন ধরে তাঁর শুকনো কাশি হচ্ছিল, সাধারণ ওষুধেও কাশি থামছিল না, তাই, পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে তিনি আয়ুশ হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসেন গত ১২ আগস্ট। গতকাল রাতে (১৪ আগস্ট) তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাঁকে করোনা হাসপাতালে পাঠানোর বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে ইতিমধ্যে। অন্যদিকে, শহরের সাহাভড়ংবাজারের এক ব্যবসায়ী (বাসন দোকান) সম্প্রতি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বলে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছিল এবং তাঁর লালারসের নমুনা করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। শুক্রবার রাতে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং তাঁকে লেভেল ফোর শালবনী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও, মেদিনীপুর শহরের বক্সীবাজারের দু’জন (৬৮ ও ২২) করোনা সংক্রমিত হয়েছেন, সিপাই বাজারের এক মহিলা (৫৫)’র রিপোর্ট এদিন পজেটিভ এসেছে। সিপাই বাজারের এক তরুণী’র (২২) করোনা রিপোর্টও এদিন পজেটিভ এসেছে। মানিকপুরের এক যুবতী (২২) এবং বার্জটাউনের এক প্রৌঢ়ও (৭০) করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। মিঞাবাজারের বাসিন্দা (৫৩), পেশায় লোহার কারখানা বা লেদ এর কর্ণধার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।এছাড়াও, মেদিনীপুর শহর ও শহরতলীর আরো তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে, শহরে আক্রান্ত ২২ জন।