পত্রিকা প্রতিনিধি: রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরে ৪৪জনের করোনা ধরা পড়ল। একসঙ্গে এতজনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা জেলায় প্রথম। এরমধ্যে সুতাহাটা, হলদিয়া, মহিষাদল ব্লক ও হলদিয়া পুরসভা মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮জন। এছাড়া ৭জন তমলুকের শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লক ও ৬জন কোলাঘাটের। তমলুক জেলা সংশোধনাগারেও এবার থাবা বসিয়েছে করোনা। একই সঙ্গে হানা দিয়েছে খোদ সিএমওএইচ অফিসেও। ফলে আতঙ্ক ছড়াল তমলুকের কোর্ট পাড়াতেও। তমলুকের ডিমারিতে জেলার নামী কুইজ মাস্টার শিক্ষক মৌসম মজুমদার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর সুস্থতা কামনা করে প্রচুর পোস্ট দেন জেলা ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজন। এদিকে হলদিয়া শহরে গত ছ’দিনে বিভিন্ন ওয়ার্ড মিলিয়ে ১৫জন করোনা হয়েছে। শহরে করোনা বাড়তে থাকলেও হুঁশ ফেরেনি পুর প্রশাসন ও আমআদমির একাংশের। এতজন আক্রান্ত হওয়ার পরও শহরের প্রতিটি বাজারহাটে ভিড় উপচে পড়ল রবিবার। টাউনশিপের মাখনবাবুর বাজার থেকে দুর্গাচক, ব্রজলালচক সর্বত্র মাস্ক ছাড়াই দেখা যায় সিংহভাগ মানুষজনকে। করোনা সচেতনতা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ, পুলিস ও নাগরিকদের একাংশের গা ছাড়া মনোভাবের কারণে হলদিয়ায় দিন দিন করোনা বাড়ছে বলে মত চিকিৎসক ও বিজ্ঞানকর্মীদের। হলদিয়া ও সুতাহাটা ব্লক প্রশাসনের দাবি, পরিযায়ীদের পর এবার এলাকার বাজারগুলিতে করোনার কমিউনিটি টেস্টিং শুরু হতেই আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এখানকার দোকানদারদের পরীক্ষা হতেই প্রতিটি বাজারে করোনা ধরা পড়ছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে মোবাইল টেস্টিং ভ্যান এই কাজ করছে। ইতিমধ্যেই হলদিয়া ও সুতাহাটার দুই ব্লকের চারটি বাজারে প্রায় দুশো জনের করোনা টেস্টের পর ৭-৮জনের করোনা ধরা পড়েছে মাত্র এক সপ্তাহেই। কিন্তু হলদিয়া শহরে এধরনের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় করোনা পরীক্ষা কার্যত হচ্ছে না। পুর কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরও তাদের করোনা সচেতনতার নামানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এজন্য এক পুরসভার কাউন্সিলার ও আইনজীবী করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর কমিউনিটি টেস্টিং এর দাবি উঠেছে।
অপরদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ১ব্লকের গোকুলপুর গ্ৰামে ১জন ও খেজুরী ১ ব্লকের ৩জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা আক্রান্তের হদিস মিলল রবিবার।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে,এগরা ১ ব্লকের গোকুলপুর গ্ৰামে ১জন ও খেজুরী ১ব্লকের ঠাকুরনগর গ্ৰামে ২জন ও জাহানাবাদ গ্ৰামে ১জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে।এই আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা সকলেই ভিন রাজ্য থেকে নিজেদের বাড়ি ফিরেছেন।এদের চিকিৎসার জন্য গত ৮শে জুলাই এদের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়।এরপর ৫দিনের মাথায় আজ তাদের দুজনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে।এরপর সরকারি নির্দেশিকা মেনে তাদের পাঁশকুড়া বড়োমা করোনাহাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।