পত্রিকা প্রতিনিধি: আজ (২১জুন)রাতের রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী দুই মেদিনীপুরে মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১০। এর মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের সাতজন ও পশ্চিম মেদিনীপুরের তিনজন । করোনা আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়ছে এগরা মহকুমায়,একদিনে আক্রান্ত ৯ ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে রোগের প্রকোপ বাড়ায় উদ্বিগ্ন রাজ্য প্রশাসন।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে ঘরে ফিরেছেন বাংলার কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। আর তার পরেই উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এর আগে একই প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল বিহার, ওডিশা, উত্তর প্রদেশ ও ঝাড়খণ্ডে, যেখান থেকে বেশি সংখ্যক শ্রমিক কর্মসূত্রে কর্নাটক, গুজরাত, মহারাষ্ট্র ও পঞ্জাবের মতো বর্ধিষ্ণু রাজ্যগুলিতে রোজগারের কারণে পাড়ি দিয়েছেন।
এমতাবস্থায় মহারাষ্ট্র ও গুজরাট থেকে ফিরে আসা আরও ৯জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়লো পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা মহকুমায়।এদের মধ্যে ৫ জনের বাড়ি এগরা ১ও ২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়।বাকি ৪ জন আক্রান্তের বাড়ি পটাশপুর ২ ব্লকের রঘুনাথপুর এলাকায়।
জানা গিয়েছে,লকডাউনের কারনে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট থেকে নিজের বাড়ি ফিরে আসে এই পরিযায়ী শ্রমিকেরা।এরপর গত ১৮ই জুন পটাশপুর ২ ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পটাশপুরের ৪ জন পরিযায়ী শ্রমিকের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠায়।অপরদিকে ওই দিন এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে এগরা ১ ও ২ ব্লকের ৫ জন পরিযায়ী শ্রমিকের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল কলকাতায়।এরপর আজ,রবিবার পটাশপুর ও এগরার ওই ৯জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।এরপর ওই আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের পাঁশকুড়া বড়োমা কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।তাছাড়া একদিনে
এগরা ও পটাশপুরে ৯জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে মহকুমা জুড়ে।
ফের নতুন করে করোনা আতঙ্ক ছড়ালো শিল্পশহর হলদিয়ায়। বিদেশ ফেরত দুই পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা পজিটিভ। ওই দুই বাসিন্দা সৌদি আরব এবং দুবাই থেকে ফিরেছেন। দিল্লি থেকে থেকে তাঁরা ট্রেনে করে এসেছেন। তারপর গাড়িতে করে তারা হলদিয়া এসেছেন। হলদিয়া ফিরে দেউলপোতা এবং জামবেড়িয়াতে সুতাহাটা থানা অন্তর্গত দুজনের নিভৃতাবাসে ছিলেন তারা। ১৮ জুন তাদের লালা রস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। আজ তাদের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। হলদিয়া মহাকুমার হাসপাতাল স্বাস্থ্য কর্মীরা ওই দুজনকে পাঁশকুড়া বড়মা হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।তাদের সঙ্গে যারা গাড়িতে এসেছিলেন তাদেরও লালা রস পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে তাদের নেগেটিভ এসেছে। যে গাড়িতে করে তারা হলদিয়া ফিরেছিলেন সেই চালকের নমুনা নেওয়া হয়েছে। তবে নতুন করে দুই করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়ায় এলাকায় ফের আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
করোনা সংক্রমণের মধ্যে আশার আলো, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন
পূর্ব মেদিনীপুর,পশ্চিম মেদিনীপুর ও উত্তর চব্বিশ পরগনার মোট ২১ জন করোনা রুগী। বড়মা করোনা হাসপাতাল থেকে রবিবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন তাঁরা।কয়েক দিন আগে ৪৫ জন করোনা রোগীকে সুস্থ করে নজির গড়ে এই হাসপাতাল।আজ আরো ২১ জন সুস্থতার খবরে ফের হাসি ফুটেছে হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মুখে।জানা গিয়েছে,এই ২১ জনের মধ্যে ৫ জন এগরা, ২ জন পাঁশকুড়া, ২ জন কোলাঘাট,১জন রামনগর , ২জন ডায়মন্ড হারবার,১ জন শহীদ মাতঙ্গিনি,তমলুক ৪,মহিষাদল ১,হলদিয়া ১,কন্টাই ১,পটাশপুর ১ বাসিন্দা।আজ এই২১ জন করোনা রুগীর সুস্থতার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান হাসপাতালের অবজারভার আবজল আলী শা।তিনি পরিদর্শন করেন গোটা হাসপাতাল চত্তর।রুগীদের সাথে কথা বলেন।তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা জানতে চান।এবং ওই ২১ জন সুস্থ করোনা রুগীদের ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান।তাঁর এই মহতী কাজে রুগীরা ও হাসপাতালের স্টাফরা অত্যন্ত খুশী হন।